রঙ বদলানো এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের দুশ্চিন্তা স্মিথ
তৃতীয় দিন শেষে
অস্ট্রেলিয়া ২৮৪ এবং ১২৪/৩
ইংল্যান্ড ৩৭৪
অস্ট্রেলিয়া ৩৪ রানে এগিয়ে
এজবাস্টনের আকাশে আঁধারটা একটু আগেই ঘনিয়ে এলো। নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা আগেই সাঙ্গ হয়ে গেল খেলা। দুই দলের কার মুখে আঁধার বেশি, সেটা বলা অবশ্য শক্ত। আপাতত ইংল্যান্ডই এখন পর্যন্ত এগিয়ে, তবে রুটের মুখে চওড়া হাসি থাকার কথা নয়। স্টিভেন স্মিথ যে এখনো আছেন ইংল্যান্ড আর জয়ের মধ্যে দুর্ভেদ্য প্রাচীর হয়ে!
তার আগে ম্যাচের রঙ বদলেছে অনেকবার। বলতে গেলে সেশনে সেশনেই। ররি বার্নস ও বেন স্টোকস আজ শুরু করেছিলেন সকালে, ৪ উইকেটে ২৬৭ রান নিয়ে শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। স্টোকস ফিফটি পেলেন, দুজন মিলে যোগ করলেন আরও ১৫ রান। এরপরেই প্যাট কামিন্সের বলটা কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিলেন স্টোকস, ফিরলেন ঠিক ফিফটি করে।
অস্ট্রেলিয়ার দিনের সেরা সময়টার শুরু তখনই। জনি বেইরস্টো আর মঈন আলী সাদা পোশাকে একটা দুঃস্বপ্নের বছর পার করছিলেন, আজও কাটল না তা। অবশ্য তার আগে বার্নস ফিরে গেছেন লায়নের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে, ১৩৩ রান করে। এজবাস্টন তাকে দাঁড়িয়েই সম্মান জানিয়েছে। বার্নসকে আউট করার তিন বল পরেই মঈন আলী বোল্ড, লায়নের বলের লাইন না বুঝে ছেড়ে দিতে হাস্যকরভাবে হলেন বোল্ড। ফিরলেন শুন্য রানেই। জনি বেইরস্টো একটা চার মেরেছিলেন, কিন্তু ওই পর্যন্তই। হাফ কাট, হাফ ড্রাইভের মতো একটা শট খেলতে গিয়ে সিডলের বলে স্লিপে ক্যাচ দিলেন ওয়ার্নারকে; আউট ৮ রানেই। ৩০০ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে ইংল্যান্ড, লিড মাত্র ১৬ রানের তখন।
সেখান থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ালেন স্টুয়ার্ট ব্রড আর ক্রিস ওকস। দুজন মিলে এরপর অনেকটা সময় হতাশ করে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার চার বোলারকে। অনেক বার চেষ্টা করেও আউট করতে পারছিলেন না পেইন, যন্ত্রণাই দিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ব্রড কামিন্সকে মারিতে গিয়েই ক্যাচ দিলেন, ফিরলেন ২৯ রানে। তার আগে হয়েছে ৬৫ রানের জুটি। এরপর অ্যান্ডারসন ৩ রান করে আউট হয়েছেন লায়নের বলে, ৩৭৪ রানে অলআউট হয়েছে ইংল্যান্ড। তবে তার আগে ঠিক ৯০ রানের লিড হয়ে গেছে।
অস্ট্রেলিয়ার শুরুটাও হয়েছে দ্বিতীয় ইনিংসে দুঃস্বপ্নের মতোই। জেমস অ্যান্ডারসন বল করতে পারেননি আজও। একজন বোলার কম নিয়ে খেলেছে ইংল্যান্ড, তবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারদের ফেরাতে বেগ পেতে হয়নি তাতে। ডেভিড ওয়ার্নারকে অবশ্য শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার, রিভিউ নেওয়ার পরেই দেখা গেছে সূক্ষ্ম একটা খোঁচা দিয়েছেন। ৮ রানেই ফিরেছেন, বিরতির পর টেস্টে ফেরাটা মনে রাখার মতো হলো না একদমই। ব্যানক্রফট মঈন আলীর বলটা বুঝতে না পেরে ব্যাট প্যাড হয়ে ক্যাচ দিয়েছেন শর্ট লেগে। আউট ৮ রানেই।
এরপর প্রতি আক্রমণ শুরু করেছেন খাওয়াজা ও স্মিথ। দুজন মিলে ৪৮ রান যোগ করে ফেলেছেন ৯ ওভারেই। খাওয়াজা যখন ৪৮ বলে ৪০ রান করে বড় কিছুর অপেক্ষায়, স্টোকসের বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। স্মিথ অবশ্য এরপর বাউন্সারে ব্যথা পেয়েছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাভিস হেডকে নিয়ে পার করে দিয়েছেন দিনটা। কাল চতুর্থ দিনে তার ওপরেই হয়তো নির্ভর করছে ম্যাচের ভাগ্য।