• অ্যাশেজ ২০১৯
  • " />

     

    ওভালজয়ে ভস্মাধার হারানোর ক্ষতে প্রলেপ ইংল্যান্ডের

    ওভালজয়ে ভস্মাধার হারানোর ক্ষতে প্রলেপ ইংল্যান্ডের    

    ইংল্যান্ড ২৯৪ ও ৩২৯

    অস্ট্রেলিয়া ২২৫ ও ২৬৩

    ফলঃ ইংল্যান্ড ১৩৫ রানে জয়ী

    পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র

    ম্যাচসেরাঃ জফরা আর্চার, সিরিজসেরাঃ স্টিভ স্মিথ


    এজবাস্টন, লর্ডস, হেডিংলি, ওল্ড ট্রাফোর্ড, ওভাল। অবশেষে শেষ হলো প্রায় দুই মাসের কাছাকাছি দীর্ঘ মহারণ। ছাইদানিতা যে অস্ট্রেলিয়ার থাকছে, সেটা নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। তারপরও ইংল্যান্ডের পাওয়ার কিছু বেশ কিছু। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ জিততে না দেওয়া, ট্রেভর বেইলিসকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কিছু মূল্যবান পয়েন্ট যোগ করা। চতুর্থ দিনে সবকটি পয়েন্টে টিক চিহ্ন দিতে পেরেছে ইংল্যান্ড। ম্যাথু ওয়েডের দারুণ সেঞ্চুরির পরও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য থেকে অনেকটা দূরেই থেমে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৭২ সালের পর এই প্রথম ড্র হয়েছে কোনো অ্যাশেজ, টিম পেইন আর জো রুট দুজনেই কিছু না কিছু নিয়ে শেষ করতে পারছেন এবারের অ্যাশেজ।

    শেষ দিনে সকালে খুব বেশিক্ষণ ব্যাট করতে পারেনি ইংল্যান্ড, আগের দিনের সঙ্গে ১৬ রান যোগ করে অলআউট হয়ে গেছে ৩২৯ রানে। এর মধ্যেই অবশ্য হয়ে গেছে একটা অবিশ্বাস্য ঘটনা, আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ নিয়ে তাতে সফল হয়েছেন টিম পেইন। কামিন্সের বলে আর্চারের গ্লাভস ছুঁয়ে গেলেও আউট দেননি আম্পায়ার। পেইন রিভিউ নিয়েছেন, পাঁচ টেস্ট পর এসে একটা রিভিউ অন্তত সফল হয়েছে তার।

    তবে এমন কিছু আজ অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল, যেটা আগে হয়নি। লক্ষ্যটা ছিল ৩৯৯, স্টিভ স্মিথ ছিলেন বলেই অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বাজিও ধরে ফেলতে পারেন কেউ কেউ। কিন্তু শুরুটা হয়েছে সিরিজের আগের সব সিরিজের রীতি মেনে। আবারও ডেভিড ওয়ার্নারকে তুলে নিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। সেই রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে বল করতে এসে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন স্লিপে। একটাই শুধু পার্থক্য, এবার কোনোমতে দুই অঙ্ক ছুঁয়ে ১১ রান করেছেন। তবে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ওপেনার হিসেবে সবচেয়ে বাজে গড় নিয়ে সিরিজ শেশ করার বিশ্বরেকর্ডটা আটকে থাকেনি। তার আগে অবশ্য ব্রড তুলে নিয়েছেন আরেক বাঁহাতি মার্কাস হ্যারিসে, এবং যথারীতি পরিচিত ফর্মুলায় বোল্ড করে।

    তাতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। মারনাস ল্যাবুশেন ও স্মিথ ছিলেন বলেই অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্ন দেখতে বারণ ছিল না। দুজনের জুটিটা ছোটোখাটো একটা শুরুও পেয়ে গেল। এরপরেই জ্যাক লিচের বলে ধোনিকে মনে করিয়ে দেওয়া অবিশ্বাস্য দ্রুততায় বেইরস্টো স্টাম্পড করলেন ল্যাবুশেনকে, ১৪ রানে ফিরলেন।

     

     

    তবে অস্ট্রেলিয়াকে জ্যাকপট এনে দিয়েছেন ব্রড, আরও একটু পর। কোনোভাবেই যখন স্মিথকে আউট করা যাচ্ছিল না, তখন একটা কৌশলে কাজ হলো। লেগ গালি রেখে দিয়েছিলেন রুত, ব্রডের শর্ট বল শাফল করে সেখানে খেলতে গেলেন স্মিথ। স্টোকস ছিলেন তক্কে তক্কে, ক্যাচ নিলেন। ২৩ রানে ফিরলেন স্মিথ, এই সিরিজে প্রথমবার পাওয়া হলো না ফিফটি। ৮৫ রানে ৪ উইকেট নেই অস্ট্রেল্যার।

    ম্যাচের গল্প ওখানেই শেষ হতে পারত। সেটা হতে দেননি ম্যাথু ওয়েড। পাল্টা আক্রমণে আশার সলতে জ্বালিয়ে রেখেছিলেন অনেকক্ষণ,।মিচেল মারশ ও টিম পেইনের সঙ্গে মিলে যোগ করলেন ১১৫ রান। আর্চারের সঙ্গে দ্বৈরথটাও জমেছিল বেশ, একটা ছয়ও মেরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত এবারের অ্যাশেজে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিও পেলেন। সেটাও মাত্র ১৪৭ বলে। শেষ প্ররযন্ত রুট এসে তাকে আউট করলেন। ২৬০ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের জয় তখন সময়ের ব্যাপার। সেটি আর খুব বেশি লম্বা হয়নি। লায়ন ও হ্যাজলউডকে তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে উৎসবের উপলক্ষ এনে দিয়েছেন লিচ। নিশ্চিত হয়ে গেছে, অনেক বছর পর অ্যাশেজে ট্রফি ভাগাভাগি হচ্ছে।