অনার্স বোর্ডে নাম লেখাতেই ক্রিজে ফিরেছিলেন স্মিথ
জফরা আর্চারের বল যখন স্টিভ স্মিথের মাথার পেছনের অনাবৃত অংশে সজোরে আঘাত আনলো, ক্রিকেট বিশ্ব এক মুহূর্তের জন্য থমকে গিয়েছিল। ৮০ রান করার পর আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন স্মিথ। পরে অবশ্য আবার ক্রিজে নামেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলছেন, সেঞ্চুরি করে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখানোর জন্যই মাঠে ফিরেছিলেন স্মিথ।
আর্চারের বাউন্সার সামলাতে না পেরে ঘাড়ে আঘাত পেয়েছিলেন স্মিথ। বেশ কিছুক্ষণ মাটিতে শুয়ে ছিলেন তিনি। মেডিকেল টিমের পরামর্শে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন স্মিথ। পরের উইকেট পড়লেই অবশ্য মাঠে ফেরেন। সেঞ্চুরিটা শেষ পর্যন্ত করতে পারেননি, আউট হয়েছেন ৯২ রানে। চতুর্থ দিনের শেষভাগে আর ফিল্ডিংয়ে নামেননি তিনি, আছেন পর্যবেক্ষণে।
কিন্তু অমন আঘাত পাওয়ার পড়েও কেনো ক্রিজে ফিরেছিলেন স্মিথ? ল্যাঙ্গার বলছেন, সেঞ্চুরির ব্যাপারটাই উজ্জীবিত করেছে স্মিথকে, ‘হেলমেটে না লেগে বল সরাসরি ঘাড়ের দিকে লাগায় ব্যথাটা বেশি ছিল। যদিও মেডিকেল রুমে ফেরার সাথে সাথেই স্মিথ বলেছে যে সে সুস্থ আছে। মাঠে ফেরার জন্য তাঁর তর সইছিল না। আমি তাঁকে বারবার জিজ্ঞাসা করছিলাম সে সুস্থ আছে তো! ক্রিকেটাররা আমার ছেলের মতো, তাদের কোনো ক্ষতি চাই না। কিন্তু সে অনার্স বোর্ডে নাম লেখানোর জন্যই সেঞ্চুরিটা করতে চাইছিল। সে খুবই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল এই ব্যাপারে। যদিও সে নিজের রক্ষণাত্মক ব্যাটিংটা নিয়ে একটু চিন্তায় ছিল, কারণ তাঁর হাতেও ব্যথা ছিল।’
শতভাগ নিশ্চিত হয়েই স্মিথকে মাঠে ফেরত পাঠিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, বলছেন ল্যাঙ্গার, ‘যদি সে শতভাগ সুস্থ না থাকত তাহলে আমরা তাঁকে ক্রিজে ফিরতে দিতাম না। এটা নিয়ে তাঁকে অনেকবার জিজ্ঞাসাও করা হয়েছে। নিজেই বলেছে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত সে। তাহলে আমরা আর কী করতে পারি?’
অনেকেই হেলমেটের পেছনে বাড়তি স্টিম গার্ড পরেন। স্মিথ সেটা পরতে খুব একটা স্বস্তিবোধ করেন না বলেই জানালেন ল্যাঙ্গার, ‘হেলমেটের পেছনের গার্ড বাধ্যতামূলক করা উচিত কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। স্মিথ এটায় খুব স্বস্তি পায় না। আমি নিশ্চিত স্মিথের এই ঘটনার পর বাড়তি গার্ড নিয়ে আবার আলোচনা হবে। হিউজের সেই মৃত্যুর পর এটা আলোচনায় এসেছিল। ভবিষ্যতে এই গার্ড বাধ্যতামূলকও করা হতে পারে। এমন আঘাত পেলে সেটা ব্যাটসম্যানের মাথায় অনেক সময় পর্যন্ত থেকে যায়। এটা কেউ অস্বীকার করলে সে মিথ্যা বলছে। স্মিথ ব্যাটিং করতে ভালোবাসে, এটা সে করেই যাবে, কেউ তাঁকে আটকাতে পারবে না। আশা করি সে এই ধাক্কা থেকে দ্রুতই ফিরে আসবে।’