• অ্যাশেজ ২০১৯
  • " />

     

    বৃষ্টি-স্মিথ-লাবুশেনে ইংল্যান্ডের হতাশার দিন

    বৃষ্টি-স্মিথ-লাবুশেনে ইংল্যান্ডের হতাশার দিন    

    প্রথম দিনশেষে 
    অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ১৭০/৩* (লাবুশেন ৬৭, স্মিথ ৬০*, ব্রড ২/৩৫, ওভারটন ১/৪১) 


    বৃষ্টি। স্টুয়ার্ট ব্রড। মারনাশ লাবুশেন। স্টিভেন স্মিথ। বৃষ্টি। বেলস। ক্রেইগ ওভারটন। বৃষ্টি। ইংল্যান্ডের হতাশা।

    ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিনের হাইলাইটস ওপরের কয়েক শব্দ। বৃষ্টিবাধায় খেলা শুরু হয়েছে দেরিতে। শুরুতে আঘাত করেছেন ব্রড। ঘুরে দাঁড়িয়েছেন স্মিথের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়াকে টেনে নেওয়ার দায়িত্ব পালন করা লাবুশেন। তার সঙ্গী হয়েছেন স্মিথ, যিনি ফিরেছেন তার অস্বাভাবিক রকমের স্বাভাবিক কর্মকান্ডে। আবার নেমেছে বৃষ্টি। লাবুশেনকে অবশেষে ফিরিয়েছেন ওভারটন। মাঝে বাতাসের তোপে বেলস ছাড়াই কিছুক্ষণ খেলা চালিয়ে গেছেন আম্পায়াররা। আবার নেমেছে বৃষ্টি। রোদ হেসেছে, তবে বৃষ্টির তোপ মাঠ থেকে যায়নি বলে শেষ হয়ে গেছে দিনের খেলা। সব মিলিয়ে শুধু হতাশা বেড়েছে ইংল্যান্ডের।

     

     

    সকালে বৃষ্টি হলেও দুই অধিনায়কই জীবন্ত উইকেটে নিতে চেয়েছিলেন ব্যাটিং, টসে জিতে সেটির সুযোগ পেয়েছেন টিম পেইন। প্রথম ওভারেই ডেভিড ওয়ার্নারকে ‘বানি’ বানানোর পথে আরেকধাপ এগিয়ে গেছেন ব্রড। ইংলিশ পেসারের অফস্টাম্পের বাইরে থেকে হালকা নিপ করে বেরিয়ে যাওয়া বলটায় দোনোমনো করে খোঁচার মতো দিয়েছেন ওয়ার্নার। লেংথেই ভড়কে গিয়েছেন বলে মনে হচ্ছিল, ছাড়বেন না খেলবেন এর মাঝে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে শুধু ক্যাচটাই দিয়েছেন বেইরস্টোর হাতে। সিরিজে ৭ ইনিংসে এ নিয়ে ৫ বার ব্রডের শিকার হলেন ওয়ার্নার। 

     

    ব্রডকে দুই চারে আক্রমণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বটে মার্কাস হ্যারিস, তবে ব্রড প্রতিশোধ নিতে সময় নেননি খুব একটা। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা বলটা ঢুকছিল ভেতরের দিকে, ক্রিজে আটকে গিয়েছিলেন হ্যারিস। রিভিউ নিয়েছিলেন কুমার ধর্মসেনার আউটের সিদ্ধান্তে, তবে আম্পায়ারস কল তাকে বাঁচাতে পারেনি। ২৮ রান, ২ উইকেট- ইংল্যান্ড ছোটার অপেক্ষায়। 

    বাগড়া বাধালেন লাবুশেন, লর্ডস আর হেডিংলির মতো। সঙ্গে স্মিথ, এজবাস্টন আর লর্ডসের মতো। প্রথম ঘন্টার শেষদিকে ইংল্যান্ড যেন থিতিয়ে পড়লো একটু, আর্চারের বলে তেমন পেসের দেখা মিললো না, লাবুশেন চড়াও হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন। ড্রিংকসের পরের ওভারে স্টোকসকে দুই চারে পার্টিতে যোগ দিলেন স্মিথও। লাঞ্চের আগে অস্ট্রেলিয়া মোটামুটি দৃঢ় অবস্থানে চলে গেল, লাবুশেনের অপরাজিত ৪৯ রানের সঙ্গে স্মিথের অপরাজিত ২৮ রানে। 

    এরপর আবার বাগড়া বাধাল বৃষ্টি। এরপর লম্বা বিরতি। খেলা শুরু হলে অস্ট্রেলিয়ার ১০০ হলো, লাবুশেনের হলো টানা চতুর্থ ফিফটি। এরপর শুরু হলো বাতাস। মাঠের মধ্যে ওড়াউড়ি করতে লাগলো চিপসের প্যাকেট। স্মিথ উড়ে আসা প্লাস্টিকের বলকে পাঠালেন বাউন্ডারিতে। আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত নিলেন বেলস ছাড়াই খেলা চালিয়ে যাওয়ার। বেলস ফিরে এলো এরপর। স্মিথ অদ্ভুতুড়ে এক শটে পাওয়া বাউন্ডারিতে পৌঁছে গেলেন ফিফটিতে। স্টোকসের বলটা অফস্টাম্পের বাইরেই ছিল, তবে বে-এ-এ-শ বাইরে। স্মিথ সিদ্ধান্ত নিলেন সেটা ড্রাইভ করবেন, করলেনও। রীতিমতো শুয়ে পড়লেন বলের নাগাল পেতে। 

    পরের ওভারে ইংল্যান্ডকে একরাশ স্বস্তি দিলেন এ টেস্ট দিয়েই দলে আসা ওভারটন। অভিষেকে স্মিথকে একবার আউট করেছিলেন, তবে এবার ফেরালেনে লাবুশেনকে। লেংথ বলটা সিমে পড়ে হুট করেই ঢুকলো ভেতরে, যেন ভড়কে গেলেন লাবুশেন। ৬৭ রানেই থামলেন তিনি বোল্ড হওয়ার আগে। দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে স্টোকস-ওভারটন একটু আগুনের ফুলকি ছড়ালেন, তবে তাতে দমলেন না স্মিথ। চা-বিরতিতে অস্ট্রেলিয়া গেল ৩ উইকেটে ১৭০ রানে, স্মিথ অপরাজিত ৬৮ রানে, সঙ্গী ট্রাভিস হেড ১৮ রানে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে এরপর আর কোনও অ্যাকশন দেখা গেল না বৃষ্টির তোপে।