• " />

     

    এক ইনিংসেই এক হাজার রান!

    এক ইনিংসেই এক হাজার রান!    

    স্কুল পর্যায়ের ক্রিকেটে চমকে দেয়া সব পারফরম্যান্সের খবর একেবারে নতুন নয়। তবে ভারতীয় স্কুল ছাত্র প্রনব ধানাওয়াড়ে এবার যে কাণ্ড করে বসেছেন সেটা একেবারেই অভূতপূর্ব। গতকাল যে কোন পর্যায়ের ক্রিকেট ইতিহাসে একশ’ বছরের বেশী সময়ের পুরনো ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি পেরিয়ে যাবার পর আজ প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক ইনিংসে চার অংকের রান করে ফেলেছেন মুম্বাইয়ের এই কিশোর।

     

     

    মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তঃস্কুল টুর্নামেন্ট এইচটি ভান্ডারি কাপের এক ম্যাচে কেসি গান্ধী স্কুলের ছাত্র প্রণব এই অভাবনীয় রেকর্ড গড়েন। আজ ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে তাঁর দল যখন ২ উইকেটে ১৪৬৫ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করলো, ধানওয়াড়ের ব্যক্তিগত সংগ্রহ ততক্ষণে এক হাজার পেরিয়ে। ১০০৯ রানে অপরাজিত থাকা প্রনবকে আউট করতে পারেন নি প্রতিপক্ষ আর্য গুরুকুল স্কুলের কোন বোলার! মাত্র ৩২৩ বল মোকাবেলায় ইনিংসটি সাজাতে এই কিশোর ব্যাটসম্যান হাঁকান ৫৯টি ছক্কা ও ১২৭টি চারের মার।

     

     

    এর আগে গতকাল প্রথম দিনই প্রণব ভেঙে ফেলেন যে কোন পর্যায়ের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশী ৬২৮ (অপরাজিত) রানের রেকর্ডটি, ১৮৯৯ সালে যেটি গড়েছিলেন ইংলিশ ক্রিকেটার এইজে কলিন্স। আর প্রণব ধানাওয়াড়ে প্রথম দিনের খেলা শেষে অপরাজিত থাকেন ৬৫২ রানে, মাত্র ১৯৯ বল মোকাবেলায়।

     

     

    গতকালের খেলা শেষেই ক্লাস টেন পড়ুয়া প্রণব নজিরবিহীন চার অংকের রান করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন, “কেন নয়? আমার বিশ্বাস আমি পারবো। আর তো মাত্র ৩৫০ রানের ব্যাপার। দুই সেশনে যদি ছ’শ করতে পারি তবে এক সেশনে সাড়ে তিনশ’ও করতে পারবো আশা রাখি।”

     

    প্রণবের রিকশাচালক বাবা প্রশান্ত ধানাওয়াড়ে পুত্রের এমন কীর্তির পর প্রতিক্রিয়ায় বলছিলেন এলাকায় সুযোগসুবিধার অভাব থাকায় তিনি ছেলেকে একটি ক্রিকেট কোচিংয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন, “আমাদের এলাকায় প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু খেলার জায়গা, সরঞ্জামাদি আর প্রশিক্ষণ সুবিধার অভাবে এদের অনেকেই সামর্থ্যের জানান দিতে পারে না। এই কারণে প্রণবের বয়স যখন ৯ বছর, তখনই আমি তাঁকে বান্দ্রার একটি কোচিংয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলাম। সকালে রিকশা চলাতাম আর বিকেলে ছেলেকে নিয়ে কোচিংয়ে চলে যেতাম, ফিরতাম রাতে।”

     

    আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে ছেলের জন্য প্রয়োজনীয় ক্রিকেট সরঞ্জামাদির জোগান দিতেও হিমশিম খাঁচ্ছেন বাবা প্রশান্ত, “ক্রিকেট খেলার সরঞ্জাম তো অনেক দামী। ছেলের জন্য পৃষ্ঠপোষক খুঁজে দেখেছিলাম। কিন্তু তখন কেউ একজন বলেছিল যে আগে সে নাম করুক, তারপর ভেবে দেখবে।”

     

    স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকার যখন টুইটার বার্তায় অভিনন্দন আর শুভকামনা জানাচ্ছেন, প্রণবের নাম করে ফেলার ব্যাপারে অন্তত আর কোন সন্দেহের অবকাশ থাকছে না!