চোট সামলানো শিখেছেন পরিণত তাসকিন
মাশরাফি বিন মুর্তজার পর তাসকিন আহমেদকে বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্ভাগা ক্রিকেটারদের একজন বলতে পারেন আপনি। সাড়ে তিন বছর আগে ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় বোলিং অ্যাকশন নিষিদ্ধ হয়েছিল তাঁর। আবার ছন্দে থাকার সময় চোটের জন্য ছিটকে পড়েছেন বার দুয়েক, গত বিপিএলেই তো এই চোট ছটকে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে। আবার ফর্মে থেকে সেই বিপিএল শুরু করছেন তাসকিন। জানালেন, নিজের চোট কীভাবে সামলাতে হয়, সেটা আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো জেনেছেন।
এমনিতে গত কিছুদিন ধরেই বেশ ছন্দে আছেন তাসকিন। জাতীয় লিগে ঢাকা মেট্রোর হয়ে সর্বশেষ ম্যাচ নিয়েছেন ৭ উইকেট, এরপর বিপিএলে রংপুর রেঞ্জারস দলে নিয়েছে তাঁকে। গত কয়েক দিন ধরেই নিয়মিত অনুশীলন করছেন মিরপুর একাডেমিতে, মনে হয়েছে আগের সেই গতি ফিরে পাচ্ছেন কিছুটা। ভালো খেলার সঙ্গে আপাতত সুস্থ থাকাটাও তাঁর কাছে অগ্রাধিকার, ‘আসলে আমার এখন লক্ষ্যই হল যেখানেই সুযোগ হোক ভালো খেলা। চেষ্টা করবো সুস্থ থাকার, চেষ্টা করছিও যেভাবে ফিট থাকা যায়। লক্ষ্যই এখন একটা সামনের বিপিএল ভালো খেলা। নিজের সর্বোচ্চটা দিইয়ে চেষ্টা করবো ভালো খেলার। ভালো পারফরম্যান্স করে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাই এটাই আমার লক্ষ্য।’
গতির দিক দিয়েও তাসকিন সেই ২০১৬ সালের মতো না হলেও কাছাকাছি গিয়েছেন বলেই দেখা যাচ্ছে অনুশীলনে। তবে নিজে গতির সঙ্গে কাজ করতে চান বৈচিত্র্য নিয়েও, ‘আসলে গতিতো আছেই সেই সাথে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সব বলই জোরে করা যাবেনা ভ্যারিয়েশনটা গুরুত্বপূর্ণ। চেষ্টা করবো পরিস্থিতি বুঝে দলের চাহিদা পূরণ করার। এটাই লক্ষ্য থাকবে।’
চোট ক্যারিয়ারে অনেকবারই ভুগিয়েছে, কিন্তু এই বছরের প্রথম ছয় মাস সেটির জন্য ভুগতে হয়েছে অনেক বেশি। প্রথমে গোড়ালি, পরে পিঠের চোটে বছরের অনেকটা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন। তাসকিনের দাবি, কীভাবে চোট সামলাতে হয় সেটি আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো বুঝেছেন, ‘ইনজুরি ম্যানেজমেন্ট আগের থেকে বেটার। আমি এখন ভালো বুঝতে পারি শরীরের ধরন বা কীভাবে কি করা যায়। তাও ইনজুরি আসলে জীবনেরই অংশ, পেসারদেরই বেশি হয়। তো চাইবো যে নিজের ডিসিপ্লিন বা প্রস্তুতিটা আরও বেটার করার জন্য যাতে সুস্থ থাকি।’
বিপিএলে গতবার দুর্দান্ত ছিলেন তাসকিন। এই প্রতিযোগিতা যে একটু বেশিই উপভোগ করেন, সেটিও স্বীকার করলেন, ‘আশা তো থাকবেই আগের থেকে ভালো করার। কিন্তু দিনশেষে এটা একটা খেলা। ভালো খারাপ হবেই। আমি চেষ্টা করবো সর্বোচ্চটা দিতে প্রত্যেকটা ম্যাচে। যাতে আমার কারণে রংপুর রেঞ্জার্স ম্যাচ জিততে পারে। আসলে বিপিএল আমি খুব উপভোগ করি। আমার খুব ভালো লাগে বাংলাদেশের সেরা টুর্নামেন্ট। আর অনেক তারকা খেলোয়াড় থাকে, ড্রেসিং রুম শেয়ার করা হয় তো একটা আমেজ থাকে। আমার মধ্যে একটা আনন্দ কাজ করে।’
তবে তাসকিনের লক্ষ্য টেস্ট দলে জায়গা ফিরে পাওয়া। সেটাড় জন্যি নিজেকে প্রস্তত করছেন বলে জানালেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট একটা কঠিন জায়গা, মেন্টাল ফিটনেস, স্কিল একটু বেশি লাগে। এটার জন্য বিসিবি আমাদের সেরাটা দিচ্ছে, ভালো ভালো কোচের অধীনে ট্রেনিং করাচ্ছে। নিজেদেরও ইচ্ছেশক্তিটা আরও বেশি লাগবে বলে মনে করছি । নিজের তাগিদে উন্নতি, নিজের ইচ্ছেয় ট্রেনিং করা বা আলাদা ব্যক্তিগত ট্রেনার নিয়ে ট্রেনিং করা। এ জিনিসগুলো আগে থেকে অনেক বেটার বলা যায় আমাদের মধ্যে। আমাদের মধ্যে এই উন্নতি করাটা শুরু হয়েছে।’
টেস্ট তো আছেই, সামনের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও আছে বাংলাদেশের। এবারের বিপিএলটা তাসকিনের জন্য একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ।