• এসএ গেমস
  • " />

     

    শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পরও আফসোস সঙ্গী হলো বাংলাদেশের

    শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পরও আফসোস সঙ্গী হলো বাংলাদেশের    

    ফুলটাইম 
    শ্রীলঙ্কা ০-১ বাংলাদেশ


    জিততেই হবে- এই সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমে বাংলাদেশ দারুণ শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। দারুণ শুরুটাই গোল পাইয়ে দিলেও অবশ্য জয়ের ব্যবধান আর বাড়ানো হয়নি বাংলাদেশের। ১১ মিনিটে মাহবুবুর রহমান সুফিলের গোলে এসএ গেমস ফুটবলে নিজেদের প্রথম জয় পেয়েছে জেমি ডের দল। তবে জয় পেলেও বাংলাদেশের ভাগ্য ঝুলে আছে এখনও। 

    ৮ তারিখ নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। জামাল ভুঁইয়ারা অবশ্য ওই ম্যাচটাকেই শেষ হিসেবে ধরে নিতে চাইবেন না।  নেপালকে হারাতে পারলে অন্তত একটি পদক প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। তবে ফাইনালে ওঠার পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে গোলব্যবধান। তিন ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৪। ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আছে ভুটান। আর নেপাল দুই ম্যাচ থেকে পেয়েছে চার পয়েন্ট। 

    আগের দুই ম্যাচের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর এদিন কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে নতুন বাংলাদেশের দেখা মিলেছে শুরু থেকেই। শ্রীলঙ্কাকে একেবারে শুরু থেকেই চাপে রেখেছিল বাংলাদেশ। সুফল পেতে অপেক্ষা করতে হয়নি বেশিক্ষণ। জামাল ভুঁইয়ার ক্রস বক্সের ভেতর ডানপাশে রিসিভ করেছিলেন সাদ উদ্দিন। এর পর গোলের কয়েক গজ সামনে থাকা সুফিলকে স্কয়ার পাস বাড়ান তিনি। সুফিলের কাজটা সহজই ছিল। প্রায় ফাঁকা বারে গোল করে দারুণ শুরু এনে দেন তিনি বাংলাদেশকে।


     এমন শুরুর পরও ম্যাচে আর গোল না পাওয়াটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আফসোস। বাংলাদেশ এদিন মাঠে নেমেছিল ৫ ডিফেন্ডার নিয়ে। রক্ষণে নির্ভুল ফুটবলই খেলেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে বক্সের ভেতর ঢোকার সুযোগই দিচ্ছিলেন না ইয়াসিন খানরা। এই সুযোগ প্রথমার্ধে অবশ্য দুইবার বক্সের বাইরে থেকে গোলে শট নিয়ে বাংলাদেশকে চমকে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এর ভেতর একবার সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে। তবে আনিসুর রহমান জিকো বল ধরতে যতখনি হিমশিম খেয়েছেন, ততোখানি ভয়ঙ্কর ছিল না শ্রীলঙ্কার নেওয়া ফ্রি-কিক। আরেকবার স্ট্রাইকার মোহাম্মদ আকিব ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন জিকোকে। বাংলাদেশ গোলরক্ষক বলের ধারে কাছেও ছিলেন না, আকিবের শট অল্পের জন্য গোলের পাশ দিয়ে যাওয়ায় তখন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন জিকো।  

    মিডফিল্ড আর আক্রমণভাগেও পরিবর্তন ছিল- স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন ছিলেন না একাদশে। বিশ্বনাথ খেলেছেন মিডফিল্ডে। ৩৬ মিনিটে জামালের নিখুঁত ক্রসের শেষ প্রান্তে একজন ভালো ফিনিশার থাকলে দেখার মতো এক গোল পেতে পারত বাংলাদেশ। বিশ্বনাথ তখন গোলেই শট নিতে পারেননি। এর খানিকক্ষণ আগে রবিউল হাসানও দূর থেকে শট করে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা গোলরক্ষককে।

    দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচের গল্প বদলায়নি। শ্রীলঙ্কা বলার মতো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি একবারও। অন্যপ্রান্তে বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধের বেশিরভাগ সময় নীরব থেকেও ৭৫ মিনিটের পর জেগে উঠেছিল আক্রমণে। এর বড় একটা কারণ ছিল অবশ্য জেমির তিন বদলি। রহমত, জীবন, ইব্রাহিম-তিন জনই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। এদের ভেতর নির্দোষ শুধু রহমত মিয়া।  বাম প্রান্ত থেকে ক্রসের বদলে সরাসরি গোলে শট করেছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কা গোলরক্ষক সুজন পেরেরা দারুণ এক সেভে তখন ফিরিয়েছেন রহমতকে। 

    গোল মিসের মহড়ায় এর পর যোগ দেন ৭২ মিনিটে মাঠে নামা জীবনও। বক্সের ভেতর সুজনের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ান পরিস্থিতি থেকেও নিজে তখন কেন গোলে শট নেননি সেই ব্যাখ্যা জীবনই ভালো জানেন, হয়ত জানেন না। ইব্রাহিম ৮৩ মিনিটে যে মিসটা করেছেন সেটা আরও হতাশ করার কথা জেমি ডেকে। বক্সের ঠিক ভেতর থেকে ফাঁকা বারে ইব্রাহিম বল মেরেছেন বাইরে দিয়ে। ম্যাচের ৯০ মিনিটেও ব্যবধান দ্বিগুণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। সাদের নেওয়া হাফ ভলি তখন ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন সুজন। 

    শেষদিকে অবশ্য শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়রা দুর্জনে পরিণত হয়েছিলেন। সাদই মারাত্মক এক ফাউলের শিকার হয়েছেন যোগ করা সময়ে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বাংলাদেশের ফুটবলাররা আর মেজাজ হারাননি। তৃতীয় ম্যাচে এসে তাই অন্তত একটি জয় জুটেছে বাংলাদেশের। 
     
     

    বাংলাদেশ একাদশ 
    আনিসুর রহমান, বিশ্বনাথ ঘোষ, টুটুল হোসেন বাদশা, ইয়াসিন খান, সুশান্ত ত্রিপুরা, রিয়াদুল হাসান রাফি, জামাল ভুঁইয়া, আল আমিন (রহমত মিয়া), মাহবুবুর রহমান সুফিল (নাবিব নেওয়াজ জীবন), রবিউল হাসান (মোহাম্মর ইব্রাহিম), সাদ উদ্দিন