• ক্রিকেটারদের আলাপ
  • " />

     

    শেওয়াগকে কীভাবে বোল্ড করবেন, ১০ দিন আগেই বলেছিলেন মাশরাফি

    শেওয়াগকে কীভাবে বোল্ড করবেন, ১০ দিন আগেই বলেছিলেন মাশরাফি    

    সে ম্যাচটা হয়তো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আগমনী বার্তা দিয়েছিল তামিম ইকবালের। ফিফটি করেছিলেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম। তবে ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর সেই ম্যাচের টোনটা ‘সেট’ করে দিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে বীরেন্দর শেওয়াগকে বোল্ড করে। অফকাটারটা ইনসাইড-এজ নিয়ে ভেঙেছিল শেওয়াগের স্টাম্প। ভারত ওপেনারকে এভাবে বোল্ড করবেন, সেটা মাশরাফি বলেছিলেন সে ম্যাচের দিন দশেক আগেই! 

    তামিমের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসেছেন বাংলাদেশের সদ্য সাবেক ও ওয়ানডের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি। সেখানেই তামিম মনে করিয়ে দিয়েছেন, মাশরাফি শেওয়াগকে বোল্ড করার কথা কখন বলেছিলেন, “২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের ম্যাচের প্রায় ১০ দিন আগে আপনি বলেছিলেন, বীরেন্দর শেওয়াগকে আপনি ইন-কাট করে বোল্ড করবেন। আপনি কেন আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, কী মনে করে বলেছিলেন, আর সেটাই হয়েছিল।” 

    মাশরাফি বলেছেন, মন থেকে চাইলে হয়ে যায় অনেক কিছুই, “এর উত্তর তো তুই জানিস, তোকে কতো ম্যাচে বলেছি, যে তামিম আজকে কিছু হবে। তো ভেতর থেকে কিছু চাইলে সেটা হয়ে যায় মাঝে মাঝে।”

    “আর তোরও তো মনে হয়, এমন গেছে। আর যা, পরের সেঞ্চুরি কবে করবি, সেটা দশদিন আগে বলে দিব।” 

    ড্রেসিংরুমে মাশরাফিকে এসব কারণে ‘বাবা’ বলেও ডাকেন তাই তামিমরা। একবার কোনও কারণে বাথরুমের দরজায় মার্কার পেন দিয়ে মাশরাফি লিখে দিয়েছিলেন, পরের সেঞ্চুরি তামিম করবেন ছয় মাস পর। তামিম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ঠিক ছয় মাস তিন দিন পর!
     


     ভারত ওপেনারকে এভাবে বোল্ড করবেন, সেটা মাশরাফি বলেছিলেন সে ম্যাচের দিন দশেক আগেই!


    তবে ভারতের বিপক্ষে জয়ের সে ম্যাচ অবশ্য বাংলাদেশ দলের কাছে ছিল বাড়তি আবেগেরও। ক্যারিবিয়ানে বসে তারা খবর পেয়েছিলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় মানজারুল ইসলাম রানার মারা যাওয়ার খবর। মাশরাফি দলের আবহটা তুলে ধরেছেন, “আর তোর তো মনে আছে, মানজারুল ইসলাম রানা মারা গেল। আর সবকিছু (কেমন) অটোমেটিক হয়ে গেল (এরপর)। আর আমরা সবাই আলোচনা করছিলাম, বাংলাদেশের জন্য জিততে হবে। তখন তো ভারতকে হারানো চাট্টিখানি কথা না।

    “আর রানা যখন মারা গেল-- এমনকি ডেভ হোয়াটমোর, সে তো বিদেশী, সেও আবেগী হয়ে পড়েছিল। মনে করে দেখ, আমরা সবাই আবেগী হয়ে পড়েছিলাম। আমরা সবাই দূরে, জানাজাও পড়তে পারছি না। সবার ভেতর কাজ করছিল ওই জিনিসটা। ওদিন সকাল থেকে সবাই যা করতে চেয়েছে, তাই হয়েছে। অমন উইকেটেও টসে হেরে ফিল্ডিং করতে হয়েছিল আমাদের। সবকিছু কিন্তু আল্লাহ তায়ালা মিলিয়ে দিয়েছে এরপর।

    তামিম জানিয়েছেন, প্রথম খবরটা দলকে দিয়েছিলেন তিনিই, “আমার মনে আছে, খবরটা সবার আগে আমি দিয়েছিলাম, ভাইয়া (নাফীস ইকবাল, সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার) ফোন করেছিল ভোরবেলা। এরপর মনে আছে, করিডোরে গিয়ে সবাই কান্নাকাটি করতেছিল, রাজিন ভাইরা। আমি হয়তো রানা ভাইকে চিনতাম না সেভাবে বলে আবেগটা কম ছিল।”

    রানা অবশ্য বন্ধু ছিলেন মাশরাফির, “আমি তো রুমমেট ছিলাম। রানা, আমি, নাফীস- একসঙ্গে খেতে যেতাম। রানার রুমে ঘুমাতাম। আর ওর একটা অভ্যাস ছিল, একফোঁটা আলো থাকলেও ঘুমাতে পারতো না। তো আমি ঘুমানোর পর রুম অন্ধকার করে ঘুমাতে যেতো ও। রানা ছেলেটাও ছিল অসাধারণ। 

    “আমাদের জন্যও বিরাট ক্ষতি (ওর চলে যাওয়াটা)। যখন সাকিব আসলো, দুজন বাঁহাতি স্পিনার থাকলে আমরা হয়তো আরও অনেক ম্যাচ জিততে পারতাম।” 

    মাশরাফি-তামিম যেদিন এই আলোচনা করছিলেন, অফিশিয়ালি সেদিন আবার ছিল রানার জন্মদিনও।