• ক্রিকেটারদের আলাপ
  • " />

     

    'তারকাখ্যাতি'র কারণে তাসকিনের মনেই হয়নি, ক্যারিয়ারের অন্য দিক দেখবেন তিনি

    'তারকাখ্যাতি'র কারণে তাসকিনের মনেই হয়নি, ক্যারিয়ারের অন্য দিক দেখবেন তিনি    

    ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তারকাখ্যাতির কারণে পা হড়কে গিয়েছিল বলে মনে করেন জাতীয় দলের পেসার তাসকিন আহমেদ। দুই-তিন বছর ‘ফাটিয়ে দেওয়ার’ পর যাতে সিরিয়াসনেস আরও বাড়ে ক্যারিয়ারকে ঘিরে, উঠতি ক্রিকেটারকে এমন পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। 

    ২০১৪ সালে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল তাসকিনের। ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন, ২০১৬ আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতেও খেলেছিলেন। যদিও অবৈধ অ্যাকশনের জেরে পরের টুর্নামেন্ট থেকে দেশে ফিরতে হয়েছিল তাকে। বোলিং অ্যাকশন শুধরে ফিরলেও চোটের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে বেশ কয়েকবার। 

    তামিম ইকবালের সঙ্গে ফেসবুক শো-তে এসে তাসকিন বলেছেন, ক্যারিয়ারের শুরুতে এসব মাথায় নেননি তিনি, “প্রথম বছর, যেখানেই খেলছিলাম, ভাল খেলছিলাম। যেখানেই যাই, সবাই ছেঁকে ধরছে, ছবি ধরছে। ভালই লাগতো। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে-পরে অনেকগুলো এনডোর্সমেন্ট (পৃষ্ঠপোষক) পেলাম। ভাল লাগছিল। মানে খেললেই ভাল খেলব- এমন একটা ভাব। ভাল খেলছিলামও। মাথায় তখন আসেই নাই, যে কখনও খারাপ খেলব বা চোটে পড়ব।

    “প্রথম দুই বছরও সিরিয়াস ছিলাম। তৃতীয় বছর থেকে যখন এই জিনিসটা মাথায় আসলো, যে ভালই খেলছি, দলেও মোটামুটি জায়গা পাকা। তো ধীরে ধীরে ওই জিনিসটা আসতে শুরু করলো। আমি নিজের প্রতি যত্ন নেওয়া কমিয়ে দিয়েছি। সব মিলিয়ে জীবন একটু উশৃঙ্খল হয়েছে। আস্তে আস্তে পারফরম্যান্স ডাউন হয়েছে, এরপর দল থেকে বাদ পড়েছি।”

    বাস্তবতাটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন এরপরই, “প্রথম দিকে সুযোগ পেতাম সব ফরম্যাটে। এরপর মোস্তাফিজ (রহমান) আসলো। মাশরাফি (বিন মুর্তজা) ভাই, রুবেল (হোসেন) ভাই, মোস্তাফিজ, আমি খেলতাম। এরপর এসব জিনিস কমানোর পর চোট আসলো। দেখা গেল যে একটা সিরিজে খেলি, পরেরটায় বাদ পড়ি। আবার আসি।

    “শেষ ২ বছরে বেশ কয়েকবার সুযোগ পেয়েছি, তবে ম্যাচ খেলতে পারিনি। আরও উন্নতি করতে হবে অবশ্যই আমি জানি।”

    ২০১৭ সালে শেষ বাংলাদেশের জার্সি গায়ে নেমেছিলেন তাসকিন। উঠতি পেসারদের তাই শিক্ষা নিতে বলছেন তিনি, “যারা তারকা হবে কম বয়সেই, তাদের প্রতি আমি বলব... আমি ক্রিকেট ক্যারিয়ারে আর কখনও কঠোর পরিশ্রমের সাথে ‘কম্প্রোমাইজ’ করব না। জানি না, পারফরম্যান্স কেমন হবে। যারা আসতেছে, তারা যাতে এই ভুলটা না করে। দুই-তিনটা বছর ‘ফাটায়া’ পারফর্ম করার পর যাতে সিরিয়াসনেসটা আরও বাড়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভিডিও অ্যানালাইসিস করে পড়ে ফেলা হয় ক্রিকেটারকে। ফলে নতুন অস্ত্র যোগ করতে হবে। ফিটনেসের লেভেল বাড়াতে হবে। আল্লাহ যা করেন ভালর জন্যই করেন, আমি ক্যারিয়ারের আগেভাগেই (এই) শিক্ষা পেয়েছি।”

    আর তামিম বলেছেন, নিজের ওপর বাড়তি চাপ না নিতে, “আমার মতো সমালোচনা খুব কম ক্রিকেটারের হয়েছে। আবার ভালবেসেছেও। আমার উপদেশ হচ্ছে, যখনই কথা বলবি, কোনোদিন এমন কিছু বলবি না, যাতে নিজে চাপে পড়ে যেতে হলো। ধর, আমাকে বাদ দিতে চাইল, বা বাজে বাজে কথা বলছে- আমি যদি নিজে নিজে চিন্তা করি, যে এটা করব ওটা করব ৫০-১০০ করে, তখন নিজের ওপর চাপ বেড়ে যায়। ফলে যত কম কথা বলবি, নিজের কাজটা যদি করিস- মিডিয়া থেকে সবাই বাধ্য ভাল কথা বলতে। এটা কিন্তু করে, সবার ক্ষেত্রেই হয়।”