• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    স্বপ্নের দরজায় কড়া নাড়ছে লিভারপুল

    স্বপ্নের দরজায় কড়া নাড়ছে লিভারপুল    

    ফুলটাইম

    লিভারপুল ৪ - ০ ক্রিস্টাল প্যালেস


    শিরোপা প্রায় হাতের মুঠোয় নিয়েই আসল লিভারপুল। শুক্রবার রাতে চেলসির বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটি পয়েন্ট হারালেই প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নের রোল অফ অনারে প্রথমবারের মতো নাম উঠে যাবে তাদের। আর সেটি যদি নাও হয়, তাহলে আগামী ৩ জুলাই ইতিহাদে অন্তত হার এড়াতে পারলেই হবে জয়োৎসব।

    মার্সিসাইড ডার্বিতে হোঁচট খাওয়ার পর ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে একটু বেশিই সতর্ক হতে হয়েছিল অলরেডদের। কারণ অ্যানফিল্ড নামের দুর্গে শেষ সফরকারী দল হিসেবে ২০১৭ সালে প্যালেসের কাছেই হেরেছিল তারা। আর ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল অধ্যায়ের প্রথম হারও এসেছিল এই প্যালেসের বিপক্ষেই। তবে শেষ পর্যন্ত লিভারপুল নিজেদের স্বাভাবিক খেলা দিয়েই নাকানিচুবানি খাইয়েছে প্যালেসকে। আর পৌঁছে গেছে আরাধ্য শিরোপার আরেকটু কাছে।


    অ্যানফিল্ডে ম্যাচের একেবারে শুরু থেকেই সফরকারীদের চেপে ধরেছিল লিভারপুল। যদিও প্রথম বিশ মিনিটে প্যালেস বক্সের আশপাশে আতঙ্ক ছড়ালেও তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। তবে ২৩ মিনিটে সরাসরি ফ্রি-কিকে প্যালেস গোলরক্ষক ওয়েইন হেনেসিকে পরাস্ত করে দলকে এগিয়ে দেন ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার-আর্নল্ড। বক্সের একদম সামনে পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে তার ডান পায়ের বাঁকানো শট মানব দেয়াল এবং গোলরক্ষককে কোনও সুযোগ না দিয়ে সোজা জালের টপ কর্নারে আঘাত হানে। একেবারে ছবির মতো ফিনিশ!

    এরপর ম্যাচের ২৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার খুব ভালো সুযোগ পেয়েছিল লিভারপুল। তবে বক্সের বাইরে থেকে জর্ডান হেন্ডারসনের শট পোস্টে লেগে বক্সের সামনে থাকা ভার্জিল ফন ডাইকের কাছে আসে বল। তবে তিনি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাতে না পারায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় প্যালেস।
     

    আগের ম্যাচে মাঠে ছিলেন না মোহামেদ সালাহ। প্যালেসের বিপক্ষে সালাহ-মানে-ফিরমিনোদের সবাই ছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর সবার আগে গোল পেলেন সালাহই। মধ্যমাঠ থেকে ফাবিনহোর লং বল কাধের ওপর নিঃশ্বাস ফেলতে থাকা প্যালেস ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে দারুণ দক্ষতায় দখলে নিয়েছিলেন। এরপর গোলের উদ্দেশ্যে তার বাঁ পায়ের জোরালো শট, প্যালেস গোলরক্ষক শটটি ঠেকাতে পারলে মৌসুমের অন্যতম সেরা সেভ হয়ে থাকত। তা হয়নি, হয়েছে লিভারপুলের মৌসুমের শততম গোল। এই নিয়ে ক্লপের দল টানা তিন মৌসুমেই গোলের সেঞ্চুরি পূরণ করল। 

    প্রথমার্ধের পুরোটা সময়ই প্যালেসকে তাদের অর্ধে আটকে রেখেছে লিভারপুল। দ্বিতীয়ার্ধেও একই উদ্যমে খেলতে থাকে তারা, ফলও পেয়ে যায় দ্রুতই। এই অর্ধের ৫৫ মিনিটে বক্সের বাইরে রবার্টসনের কাছ থেকে একেবারে সেন্ট্রাল পজিশনে বল পান ফাবিনহো। গোলের প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে নেওয়া তার ডান পায়ের রকেট গতির শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি প্যালেস গোলরক্ষক। নিশ্চিতভাবেই মৌসুমের সেরা গোলের অন্যতম দাবিদার ফাবিনহোর এই জাদুকরী গোল।


    ৬৯ মিনিটে আক্রমণভাগের সালাহ-ফিরমিনো-মানে ত্রয়ীর বরাতে চতুর্থ গোল পায় লিভারপুল। নিজেদের অর্ধে প্যালেসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে সামনে থাকা ফিরমনোকে পাস দেন মানে। সেখান থেকে ফিরমিনো বল পাঠান সালাহ-র কাছে। তার দারুণ উড়ন্ত ফরোয়ার্ড পাস এরপর বাঁ প্রান্ত দিয়ে দৌড়ে প্যালেসের বক্সের দিকে আসতে থাকা মানেকে খুঁজে নেয়। ঠাণ্ডা মাথায় ডান পায়ের প্লেসিং ফিনিশে ম্যাচে লিভারপুলের গোলের হালি পূর্ণ করেন তিনি।

    লিভারপুলের জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর থেকেই চোখ সরে গেছে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে। চেলসি-সিটি ম্যাচে লিভারপুলের খেলোয়াড়া সব এক হয়েই টিভির সামনে বসে যাবেন হয়। উদযাপনের আয়োজনও হয়ত নিতে শুরু করে দিয়েছে গোটা লিভারপুল। এখন তো সবকিছু সময়ের ব্যাপারই।