• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    চোখের জলে ক্লপ বললেন, 'এই অর্জন অবিশ্বাস্য'

    চোখের জলে ক্লপ বললেন, 'এই অর্জন অবিশ্বাস্য'    

    মুহূর্তটা হয়তো মাঠে থেকেই উদযাপন করতে চেয়েছিলেন, পেতে চেয়েছিলেন সমর্থকদের ভালোবাসা। সেটা আর হয়নি, চেলসিও আগেভাগে সুযোগ এনে দিয়েছে উদযাপনের। ইয়ুর্গেন ক্লপ খেলোয়াড়দের সাথেই উদযাপন করেছেন ৩০ বছর পর লিভারপুলের প্রিমিয়ার লিগ ট্রফি। পরে স্কাই স্পোর্টসের লাইভে যখন এসেছেন, আবেগটা আর ধরে রাখতে পারেনননি।    

    লাইভে যখন কথা বলছিলেন, ক্লপ এই অর্জনকে ‘কল্পনার চেয়েও বেশি কিছু’ বলেছেন, “আমি কী বলব বুঝতে পারছি না। এটা স্বপ্নের চেয়েও বড় প্রাপ্তি, এর চেয়ে সেরা আর কিছু হয় না। এটা অবিশ্বাস্য। আমি যা অর্জন করা সম্ভব বলে কল্পনা করেছিলাম, এটা তার চেয়েও অনেক বেশি। এই ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারাটা অবিশ্বাস্য। আমার খেলোয়াড়দের অবিশ্বাস্য অর্জন এটি, তাদের কোচিং করাতে পারাটা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।”


    ক্লপ প্রিমিয়ার লিগ জয়কে খেলোয়াড়দের অর্জন বলছেন, আর খেলোয়াড়রা এটিকে বলছেন ক্লপের বিশ্বাসের ফল। লিভারপুলের শিরোপা জয়ের সৌন্দর্যই এটি। মৌসুমের শুরু থেকেই খেলোয়াড়, কোচ, ক্লাব কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এই একটি লক্ষ্য সামনে রেখেই এগিয়েছেন। যাত্রাপথে এক মুহূর্তের জন্যও মনোযোগে ছেদ পড়েনি তাদের। ২০১৫ সালের অক্টোবরে যখন অ্যানফিল্ডে আসেন তখন থেকেই দলকে একটি ‘নিবিড় ইউনিটে’ পরিণত করার চেষ্টায় লেগে পড়েন তিনি। আর তাই তো গত মৌসুমে মাত্র ১ পয়েন্টের জন্য ম্যানচেস্টার সিটির কাছে শিরোপা হারানোর পরও আত্মবিশ্বাসে এতটুকু আঁচড় পড়েনি অলরেডদের। আবারও একই দল নিয়ে ক্লপ ফিরেছেন এই মৌসুমে। সিটিকে ২৩ পয়েন্ট দূরে রেখে জিতে নিয়েছেন পরম আরাধ্য লিগ শিরোপা।


    ম্যাচ শেষে লিভারপুল অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনের মুখেও তাই শুধু ক্লপের প্রশংসাই ঝরল, “প্রথম যেদিন ক্লাবের দরজা দিয়ে ঢুকেছিলেন তিনি, সেদিন থেকেই সবকিছু বদলে গেছে। আমরা তাকে অনুসরণ করেছি, তাকে বিশ্বাস করেছি। এটি দারুণ একটি জার্নি। আশা করি আরও সাফল্য আসবে, আমরা তাকে অনুসরণ করে যাব এবং আমাদের মাঝে সাফল্যের ক্ষুধা ধরে রাখতে হবে। ক্লপকে ছাড়া এই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হত না।”

    বিবিসির ম্যাচ অফ দ্য ডে-র সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত মৌসুমের হতাশা এই মৌসুমে রসদ হিসেবে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন জেমস মিলনার, “গত মৌসুমে এত কাছে গিয়েও ফিরে আসার পর এই মৌসুমে আবারও একই উদ্যমে শিরোপা জয়ের চেষ্টা করার বিষয়টি আসলে স্কোয়াডের অদম্য চরিত্রকেই তুলে ধরে। হতাশা থেকে শিক্ষা নিয়ে যে সফল হওয়া যায় সেটি আমরা প্রমাণ করেছি।”

    এমনিতেই লিগ শিরোপার জন্য লিভারপুল সমর্থকদের ৩০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। করোনার কারণে সেই অপেক্ষা বেড়েছে আরও ১৩ সপ্তাহ। ক্লাবের ইতিহাসের অন্যতম সেরা মৌসুম অসমাপ্তই না থেকে যায় সেই দুশ্চিন্তাও তাড়িয়ে বেড়িয়েছে তাদের। আর তাই সব শঙ্কা উড়িয়ে লিভারপুল লিগ জেতার পর সমর্থকদের কথাই সবার আগে মনে করলেন ডিফেন্ডার অ্যান্ড্রু রবার্টসন। তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পেরেই বেশি খুশি তিনি, “আমাদের ১৩ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়েছে। অনিশ্চয়তায় ঘেরা ১৩ সপ্তাহ। অথচ আমাদের সমর্থকরা ৩০ বছর অপেক্ষা করেছেন এই মুহূর্তটির জন্য। তাদের তুলনায় আমাদের অপেক্ষা কিছুই না। আশা করি তারা রাতটি উপভোগ করছেন, আমরাও করছি।”

    ১৯৯০ সালে লিভারপুলের শেষ লিগ শিরোপা এসেছিল কিংবদন্তি কেনি ডালগ্লিশের হাত ধরে। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে মাঠে বসে লিভারপুলের জয় দেখেছিলেন। শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর তিনিও ক্লপ এবং দলের তালমিলকে কৃতিত্ব দিয়েছেন ডালগ্লিশ, “আমি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত সবার জন্য অনেক আনন্দিত। ইয়ুর্গেন অসাধারণ কাজ করেছে। এই শিরোপা জয়ের পিছনে মূল হাইলাইট হচ্ছে, দলের খেলোয়াড়দের মাঝে দারুণ বোঝাপড়া এবং সবাই যেভাবে দলকে সাহায্য করেছে সেটি।”