• লা লিগা
  • " />

     

    কিক অফের আগে : গাত্তুসোকে আবার প্র্যাঙ্ক করতে চান পিরলো, সেভিয়ার বিপক্ষে বার্সার সঙ্গী প্রেরণা

    কিক অফের আগে : গাত্তুসোকে আবার প্র্যাঙ্ক করতে চান পিরলো, সেভিয়ার বিপক্ষে বার্সার সঙ্গী প্রেরণা    

    গাত্তুসোকে আবার প্র্যাঙ্ক করতে চান পিরলো

    কবে,কখন
    জুভেন্টাস-নাপোলি
    ৫ অক্টোবর, রাত ১.০০
    সিরি আ


    দুইজন একসঙ্গে খেলেছেন ইতালির হয়ে, জিতেছেন বিশ্বকাপ, দশ বছর মিলানের হয়ে খেলেছেন। দুইবার করে সিরি আ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন একসঙ্গে। তারা দুইজন সতীর্থ নন শুধু, ভালো বন্ধুও। তারা এবার ডাগ আউটে একে অপরের প্রতিপক্ষ। নাপোলি কোচ জেনেরো গাত্তুসো কোচিংয়ে এসেছেন অনেকদিন হলো। মিলানের কোচ ছিলেন, নাপোলিতে নিজের দ্বিতীয় মৌসুম শুরু করেছেন গাত্তুসো। আন্দ্রেয়া পিরলো সেদিক থেকে একেবারেই নতুন। নিজের কোচিং লাইসেন্সটাই তিনি হাতে পেয়েছেন কিছুদিন আগে। এরপর জুভেন্টাসের কোচ হিসেবে অভিষেক হয়েছে তার। কোচিং অভিজ্ঞতায় পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু পিরলো তো পিরলোই। গাত্তুসো একবার বলেছিলেন, পিরলোর খেলা দেখে তার ফুটবলার সত্বা নিয়েই নিজের মনে প্রশ্ন জেগেছিল। পিরলো একজন ফুটবল দার্শনিক, গাত্তুসোও কম নয়, তবে তিনি চরিত্রে পিরলোর বিপরীত। চরিত্র, দর্শন নাকি অভিজ্ঞতা- কোনটি এই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেবে তা বলা মুশকিল তাই।


    তবে পিরলো এবারও প্র্যাঙ্ক করতে চান প্রিয় বন্ধুকে। গাত্তুসোর সঙ্গে পিরলোর এক প্র্যাঙ্ক তো বিখ্যাতই হয়ে আছে। মিলানে খেলার সময় গাত্তুসোর অগোচরে তার ফোন থেকে মিলান প্রেসিডেন্টকে টেক্সট পাঠিয়েছিলেন পিরলো। গাত্তুসোর বোন নাকি সিঙ্গেল, মিলান প্রেসিডেন্ট আর টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে তার বোনের সঙ্গে প্রেমের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন পিরলো। সে ঘটনা গাত্তুসো জেনেছেন পরে। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন আরও পরে। বলেছিলেন, পিরলোকে দেখলে শান্ত শিষ্ট মনে হতে পারে, কিন্তু তার বন্ধু নাকি আসলে বদের হাড্ডি।

     ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তাই পিরলোর কাছে প্রশ্ন। এবার তো গাত্তুসো ডাগআউটে তার প্রতিপক্ষ, কোন প্রাঙ্ক করতে চান তিনি? পিরলো বলছেন, নাপোলিকে হারিয়ে দিলে সেটাই নাকি হবে শ্রেষ্ট প্র্যাঙ্ক!

    পিরলো সে আশা করতেই পারেন। অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকলেও তার জুভেন্টাস মৌসুমের শুরুটা ভালোই করেছেন। প্রথম ম্যাচে পিরলোর কৌশন নজর কেড়েছে। পরের ম্যাচে দশ জনের দল নিয়েও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জোড়া গোলে রোমার বিপক্ষে হার এড়িয়েছে জুভেন্টাস। তৃতীয় ম্যাচেই প্রতিপক্ষ শিরোপা প্রত্যাশী নাপোলি। পিরলোর শুরুটাও হয়েছে বেশ কঠিন সব প্রতিপক্ষ দিয়ে। রোমার বিপক্ষে রোনালদোর সঙ্গে আক্রমণভাগে পাউলো দিবালার অনুপস্থিতি ভালো টের পেয়েছে জুভেন্টাস। এই ম্যাচে তাকে দলে চাইবেন পিরলো। তবে ফিটনেস নিয়ে সংশয় থাকায় দিবালা শেষ পর্যন্ত খেলতে পারেন কি না তা নিয়ে সংশয় কাটেনি।  আগের দুই ম্যাচে ৮ গোল দেওয়া নাপোলির বিপক্ষে ম্যাচটা জুভেন্টাসের জন্য তাই কঠিনই হতে যাচ্ছে।

    বার্সার সামনে সেভিয়া পরীক্ষা, তবে আছে প্রেরণাও

    কবে, কখন
    বার্সেলোনা-সেভিয়া
    ৫ অক্টোবর, রাত ১.০০


    লা লিগার প্রথম দুই ম্যাচ শেষে রোনাল্ড কোমানকে পাস নম্বর দিতেই হবে। প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ ভিয়ারিয়ালকে তো দুমড়ে-মুচড়েই দিয়েই জিতেছিল বার্সেলোনা। পরের ম্যাচে সেল্টা ভিগো থেকে ৫ বছর পর জয় নিয়ে ফিরেছে কোমানের দল। ১০ জনের বার্সা সেল্টার বিপক্ষে যে ধারায় লড়াই করেছে তাতে একটা ব্যাপারে কিছুটা আশ্বস্ত হতে পারেন বার্সা সমর্থকেরা। যদিও মৌসুম কেবল শুরু। তবে মাঠের খেলা বলছে কোমান বার্সাকে নিয়ে ঠিক পথেই এগুচ্ছেন।

    সেই পথ কতোখানি মসৃণ হবে সেটা বোঝা যাবে সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে। ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়নরা বার্সার আক্রমণের সামনে আত্মসমর্পণ করার মতো দল নয়। যদিও বার্সার বিপক্ষে অতীত তাদের মন্দই। এক লিওনেল মেসির কাছে বারবার ধরাশায়ী হয়ে যায় সেভিয়া। মেসির ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি গোলও এই সেভিয়ার বিপক্ষে।


    তবে এই মেসি তো অন্য মেসি। যিনি বার্সা ছাড়তে চেয়েছিলেন। তার নিবেদনে তো ঘাটতি পড়ার কথা। কিন্তু আসলেই কী তেমন কিছু হচ্ছে? সেল্টার বিপক্ষে বার্সার জয়ে মেসির বড় অবদান। প্রথম ম্যাচেও ঢিলেঢালা শুরুর পর মেসি সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর সেল্টার বিপক্ষে একরকম দলকেই নেতৃত্বই দিয়েছেন তিনি। কোমানের মনে অন্তত মেসির নিবেদন নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই।

    তবে বার্সার সবচেয়ে বড় স্বস্তি বোধ হয়, এই দল মেসি নির্ভরতা কমাতে শিখছে। ফিলিপ কৌতিনহো বদলে গেছেন। নতুন রূপে ফিরেছেন তিনি। বায়ার্ন মিউনিখে এক বছর ধারে থাকাটা বোধ কাজেই দিয়েছে তার। বার্সার শেষ দুই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় সম্ভবত ছিলেন কৌতিনহোই। মিডফিল্ড নিয়ন্ত্রণের কাজটা দারুণভাবে সম্পন্ন করেছেন ব্রাজিলিয়ান গত দুই ম্যাচেই।  

    কোমানের দলের অপ্রাপ্তি বলে যদি কিছু থাকে- তাহলে সেটা আন্টোয়ান গ্রিযমানের ফর্ম। ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড কিছুতেই যেন নিজের সেরা সময়ে ফিরতে পারছেন না। তার আত্মবিশ্বাস যে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে সেই প্রমাণও মিলেছেন সেল্টার বিপক্ষে ম্যাচে। গ্রিযমান সমস্যার সমাধান কি বের করতে পারবেন কোমান?

    আপাতত আনসু ফাতি অবশ্য কাজ চালিয়ে দিচ্ছেন। দুই ম্যাচে তিন গোল করে তরুণ ফরোয়ার্ড এখন বার্সার একাদশে নিয়মিত সদস্য। গ্রিযমান গোল না পেলেও তাই ভুগতে হয়নি বার্সাকে। কিন্তু গ্রিযমানের সময়ও তো ফুরিয়ে আসছে। এসবের বাইরে অবশ্য রক্ষণ কোমানের আসল দুশ্চিন্তার কারণ। ক্লেমেন্ত ল্যাংলেট আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় সেভিয়ার বিপক্ষে খেলবেন না। সেভিয়ার সঙ্গে ম্যাচের আগে কোমান সরাসরিই বলেছেন তার দলে ডিফেন্ডারের ঘাটতি আছে। দলবদলে বাকি আর একদিন, তার আগে ম্যান সিটি থেকে এরিক গার্সিয়াকে ভেড়ানর ইঙ্গিতও দিয়েছেন কোমান।

    সেভিয়ার বিপক্ষে যা আছে তাই নিয়েই  নামতে হবে কোমানকে। এই ম্যাচ বার্সা জিতে গেলে, কোমান পাস নম্বর ছাড়িয়ে এক লাফে লেটার মার্ক্স পাওয়ার কাছাকাছি চলে যাবেন। উলটো কিছু ঘটলে আগের দুই ম্যাচে সাফল্য মলিন হতে সময় লাগবে না মোটেও। সেভিয়ার সঙ্গে ম্যাচের মাহাত্ম্যটা তাই এবার আরেকটু বেশিই।