• নেশনস কাপ
  • " />

     

    স্পেনের কাছে আধ-ডজন গোল খেয়ে বাদ পড়ল জার্মানি

    স্পেনের কাছে আধ-ডজন গোল খেয়ে বাদ পড়ল জার্মানি    

    ফুলটাইম
    স্পেন ৬-০ জার্মানি


    ম্যাচ শেষে ইয়োকিম লো-এর কাছে কোনো জবাবই নেই। এমন ম্যাচের পর জবাব না থাকাই স্বাভাবিক। শুধু বললেন, গত কয়েক ম্যাচের পর উন্নতির যে ধারায় হচ্ছিল বলে ভেবেছিলেন তেমনটা আসলে হয়নি। লো-এর বক্তব্য আসলে তার ব্যর্থতাই নির্দেশ করছে। সেই ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ হলো আন্দালুসিয়ায়। স্পেনের কাছে জার্মানি পেল প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে নিজেদের সবচেয়ে বড় হার। আর এই জয়ে নেশনস লিগের সেমিফাইনালেও জার্মানদের টপকে জায়গায় করে নিয়েছে স্পেন। শেষ চারে ফ্রান্সের সঙ্গী হয়েছে তারা। 

    জার্মানদের দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়ায় বড় ভূমিকা রেখেছেন ফেরান তোরেস। ম্যান সিটি ফরোয়ার্ড করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। বাকি তিন গোল করেছেন আলভারো মোরাতা, অরাইযাবাল ও রদ্রি। দুই অর্ধে ৩ টি করে মোট আধ ডজন গোল হজম করেছেন ম্যানুয়েল নয়্যার। জার্মানির গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৯৬) খেলার রেকর্ড গড়ার রাতটা তার হলো ভুলে যাওয়ার মতো।


    গোটা জার্মানিই আসলে এই রাত ভুলে যেতে চাইবে। ২০১৮ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বাদ পড়ার পর 'নতুন জার্মানি' গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন লো। ২০১৯ সালের বেশিরভাগ সময় ধুঁকলেও এ বছরটা ভালো যাচ্ছিল জার্মানির। স্পেনের বিপক্ষে হার এড়াতে পারলে বরং তারাই চলে যেত নেশনস লিগের সেমিফাইনালে। কিন্তু লুইস এনরিকের দল জার্মানিকে তছনছ করে আবার শুরুর বিন্দুতে ফিরিয়ে এনেছে। ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ী লো- তাই এখন চাকরি হারানোর শঙ্কায় পড়ে গেছেন স্পেনের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে।

    ম্যাচের ১৭ মিনিটে হেডে ম্যাচের প্রথম গোল করেছিলেন মোরাতা। ৩৩ মিনিটে তোরেস নিজের প্রথম গোল করেছেন দারুণ এক ভলিতে। রদ্রি বিরতির আগেই আরেকবার হেডে গোল করে ম্যাচে স্পেনের আধিপত্য নিশ্চিত করে রেখেছিলেন। বিরতির পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে জার্মানি। তবে নয়্যারের কপাল অবশ্য ভালো। স্পেন আরেকটু নিখুঁত হলে দুই অঙ্কের ঘরেও পৌঁছাতে পারত গোলসংখ্যা। 

    লো-এর দল বাছাই ও ট্যাকটিকসও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। টিমো ভার্নারকে ওয়াইড লেফটে খেলিয়ে মূল স্ট্রাইকারের ভূমিকায় তিনি নামিয়েছিলেন সার্জ গ্যানাব্রিকে। জার্মানি পুরো ম্যাচে একবারও স্পেনের গোলে অন টার্গেটে শট রাখতে পারেনি। ম্যাচের শেষদিকে গ্যানাব্রি বক্সের বাইরে থেকে বারপোস্টে বল লাগিয়েছিলেন। পুরো ম্যাচে ছন্নছাড়া জার্মানির একমাত্র সুযোগও ছিল সেটি।

    অসহায় জার্মানদের এর আগেই অবশ্য বাক্সবন্দী করে ফেলেছিল স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৫ ও ৭১ মিনিটে আরও দুই গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তোরেস। নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট আগে বদলি মিকেল অরাইজাবাল জার্মানির জালে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন।

    দুর্দান্ত ম্যাচের পরও অবশ্য পুরোপুরি স্বস্তি পায়নি স্পেন। সার্জিও রামোস চোটে পড়েছেন। তবে সেটা কতোখানি গুরুতর তা এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত জানা যায়নি। 

    আপাতত অবশ্য স্পেনের চেয়ে নিশ্চিতভাবেই জার্মানদের দুশ্চিন্তা বেশি। দুর্দশা যেন কিছুতেই কাটছে না তাদের। আগামী বছর ইউরোর আগে এমন ফল জার্মানদের না ভাবিয়ে পারেই না। তাতে লো নতুন করে আবার চাপেও পড়ে গেলেন। ২০০৬ বিশ্বকাপের পর থেকেই দলের দায়িত্বে আছেন তিনি। ২০১৮ বিশ্বকাপের পর চাপ কাকে বলে সেটা প্রথমবারের মতো টের পেয়েছিলেন লো। তবে ক্যারিয়ারে এমন পাহাড়সমান চাপের নিচে লো পড়লেন এই প্রথম।