ইংল্যান্ড, ইতালির ভরাডুবির রাত
জার্মানি ৫:২ ইতালি
ইংল্যান্ড ০:৪ হাঙ্গেরি
নেশনস লিগের তৃতীয় গ্রুপটা নিয়ে সবার আকর্ষণ আগে থেকেই বেশি ছিল। জার্মানি, ইংল্যান্ড, ইতালি; তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে আনপ্রেডিক্টেবল হাঙ্গেরি। এই গ্রুপ যে ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে যাবে, তা অনুমিতই ছিল। কিন্তু আজকে রাতে যা ঘটেছে, তা মনে হয় না কেউ অনুমান করতে পেরেছিল। নেশনস লিগের এই পর্বের শেষ রাতে বড়সড় পরাজয়ের মুখ দেখেছে দুই ইউরো ফাইনালিস্ট ইতালি ও ইংল্যান্ড। অবিশ্বাস্য এই রাত শেষে গ্রুপ টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে হাঙ্গেরি।
গ্ল্যাডবাখের স্টেডিয়াম বরুশিয়া পার্কে প্রথম মিনিট থেকেই ইতালির উপর চড়াও হয় জার্মানি। দুর্দান্ত প্রেসিং ও আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে প্রথম দশ মিনিটেই তিনটি গোল দেওয়ার মতো সুযোগ তৈরি করে স্বাগতিকরা। যার একটি থেকে গোলের খাতা খুলেন জশুয়া কিমিখ।
১০ম মিনিটে রক্ষণ থেকে নিকোলাস সুলের বাড়ানো লং বল থেকে শুরু হয় এই আক্রমণ। সেই বল টিমো ভের্নার হয়ে যায় লেফটব্যাক ডেভিড রাউমের পায়ে। তার ক্রস বক্সের ভেতর থামিয়ে দেখেশুনে গোল দেন কিমিখ। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে জার্মানি আরও অনেক আক্রমণ করলেও ডোনারুমাকে পরাস্ত করতে পারেনি। প্রথমার্ধের একদম শেষ মুহূর্তে ইতালি ডিফেন্ডার বাস্তনির ভুলে পেনাল্টি পায় জার্মানি। সেই পেনাল্টি জালে জড়িয়ে স্কোর ২-০ করেন ইকাই গুন্ডোগান।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইতালি ইতিবাচক ফুটবল খেলে ম্যাচে ফেরার আভাস দিলেও নিজেরাই আবার সেই ছন্দ নষ্ট করে। ৫১ মিনিটে রক্ষণের ভুল বুঝাবুঝিতে গোল খায় ইতালি। রাউমের ক্রস স্পিনাজ্জোলা ঠিকমতো ক্লিয়ার না করায় তা গিয়ে পড়ে মুলারের পায়ে। মুলারের শট নিয়ার পোস্টে গেলেও সেখানে মানচিনির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা ডোনারুমা আর ঠিকমত ডাইভ দিতে পারেননি।
৬৮ মিনিটে গুছানো একটি দলীয় আক্রমণ থেকে ম্যাচের চতুর্থ গোলটি করেন টিমো ভের্নার। এবং এর এক মিনিটের মধ্যেই ডোনারুমার ভুলে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন এই চেলসি স্ট্রাইকার।
৫-০ হয়ে যাওয়ার পর জার্মানি তাদের খেলার গতি কিছুটা কমিয়ে আনে। মাঠ থেকে উঠিয়ে নেয় মুলার, ভের্নারদের। ফলশ্রুতিতে প্রথমবারের মতো ম্যাচে কিছুটা প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পায় ইতালি। ৭৮ মিনিটে বদলি লেফটব্যাক ফেদেরিকো ডিমারকোর ক্রস থেকে গোল করেন ১৮ বছর বয়সী ইতালীয় উইঙ্গার উইলফ্রেড গিয়ন্তো। আর ম্যাচের শেষ কর্নার থেকে গোল করে ব্যবধান ৫-২ করেন বাস্তনি।
এদিকে, মলেনিউয়ের চিত্র ঠিক এমন ছিল না। ইতালির মতো পুরো ম্যাচে ইংল্যান্ড ডমিনেটেড হয়নি ইংল্যান্ড। বরং সিংহভাগ সময় বলের দখল ইংলিশদের পায়েই ছিল। হ্যারি কেইনরা আক্রমণও বেশি করেছে। কিন্তু প্রায় পুরো সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখলেও গোলের সামনে মোটেও ধারালো ছিল না ইংলিশ অ্যাটাকাররা, ডিফেন্ডাররাও হাঙ্গেরির সূক্ষ্ম আক্রমণগুলোর কোনো জবাব দিতে পারেনি। ম্যাচের প্রথম দুটি গোল আসে ইংল্যান্ডের রক্ষণাত্মক ভুল থেকেই। দুটি গোলই করেন রোল্যান্ড সালাই। এরপর স্বাগতিক ইংলিশ ভক্তদের বিরক্তির মুখে পাল্টা আক্রমণ থেকে দুটি গোল করে হাঙ্গেরিয়ানরা।
এই দুই ম্যাচের মাধ্যমেই শেষ হয়েছে এই পর্বের নেশনস লিগের খেলা। ফ্রেন্ডলি ম্যাচের জায়গা নেওয়া এই টুর্নামেন্টের পরবর্তী পর্ব শুরু হবে সেপ্টেম্বরে। আপাতত চার ম্যাচ শেষে সাত পয়েন্ট নিয়ে কথিত ‘গ্রুপ অব ডেথ’-এর শীর্ষে আছে হাঙ্গেরি। ছয় পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে জার্মানি। আর চার ম্যাচে দুই পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের নিচে থাকা ইংল্যান্ডের নেশনস লিগ বলতে গেলে শেষই।