• ইংলিশ লিগ কাপ
  • " />

     

    স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এনে সাবেক বসকে চেলসি উপহার দিল প্রথম হারের ক্ষত

    স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এনে সাবেক বসকে চেলসি উপহার দিল প্রথম হারের ক্ষত    

    খবরের আলো যতটা না মাঠে- তার চেয়ে বেশি মাঠের বাইরে। গ্রীষ্মে চেলসির সবচেয়ে বড় সাইনিং রোমেলু লুকাকুর বিস্ফোরক এক সাক্ষাৎকার হয়েছে খেলা ছাপিয়ে সংবাদের শিরোনাম। সপ্তাহঘুরে সে টানাপোড়েন মিটেছে করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনায়; মাঠেও নেমেছেন তিনি। আর বিপরীত ডাগআউটে ছিলেন সেই পুরোনো দলের ম্যানেজার- যার অধীনে লুকাকু ইন্টার মিলানে হয়ে উঠেছিলেন ‘ডেঞ্জারাস’! আন্তোনিও কন্তে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে পা রেখেছেন স্পার্সের ম্যানেজার হয়ে; কিন্তু এই ডাগআউটটা যে একসময় তার বড় আপন ছিল। শেষপর্যন্ত খেলার শিরোনাম আর হলেননা কেউ। লুকাকু পাননি গোল; জিতেনি কন্তের স্পার্সও। শুধু খেলায় দাপট রেখে ইএফএল কাপ সেমিফাইনাল প্রথম লেগে চেলসিই গেছে এগিয়ে। ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়ে স্পার্স বস কন্তেকে প্রথম হারের ক্ষতটাও লেপ্টে দিয়েছে তার সাবেক দলই।

    স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে মধুর সময় কেটেছে অনেক কন্তের। চেলসিকে জিতিয়েছিলেন প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ- তবুও তিক্ত এক অভিজ্ঞতা নিয়ে ছেড়ে যেতে হয়েছিল এ ক্লাব। জেতার ক্ষুধা নিয়েই এসেছিলেন সেমির লড়াইয়ে, তবে দলের পারফরম্যান্সে সেটা বিন্দুমাত্রও টের পাওয়া যায়নি। অন্তত প্রথম ৪৫ মিনিটে চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা নিজ পোস্টে দাঁড়িয়ে থেকেছেন নীরব দর্শক হয়ে। আর অন্যদিকে টুখেলের চেলসি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখে শাসন করে গেছে টটেনহামকে।

    টুখেল চেলসির দায়িত্ব নিয়েছেন- তার এক বছর হতে এখনো দিন বিশেক বাকি। আসার পর দলকে ব্যাক ফোর ফরমেশনে খেলিয়েছেন মাত্র দুইবার। বছরঘুরে কন্তের ব্যাক থ্রি’র মুখোমুখি হয়ে টুখেল ফিরিয়ে আনলেন ব্যাক ফোর ফরমেশন। মূলত দুই উইংব্যাকের ইনজুরি আরোও বাধ্য করেছে তাকে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলাতে। অবশ্য টোটকাটা কাজে দিয়েছে জায়গামত! ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই ট্রানজিশন থেকে বল পেয়ে গোল করে বসেন জার্মান ফরোয়ার্ড কাই হ্যাভার্টজ। মাঠে চেলসির উইডথ আর ফ্লুইড পজেশন বেইজড খেলায় মনে হয়েছে চেলসি মাঠে একজন বেশি নিয়েই খেলছে। আর স্পার্স সেখানে ছিল একেবারেই নিষ্প্রাণ। সন-কেইন-মোউরা কোনভাবেই সুবিধা করতে পারছিলেন না চেলসির মিডফিল্ড লাইন ভেঙ্গে বিপজ্জনক কোন আক্রমণে যেতে।

    উল্টো প্রথমার্ধ শেষের দশ মিনিট আগে আত্মঘাতী গোলে চেলসিকে আরও এগিয়ে দেন বেন ডেভিস, যদিও নিরুপায় ছিলেন তিনি। হাকিম জিয়েখের ফ্রি কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে স্পার্স সেন্টার ব্যাক জাফেট টাঙ্গাঙ্গা হেড করলেও তা বেন ডেভিসের কাঁধে লেগে জড়িয়ে যায় স্পার্সের জালে। প্রথমার্ধে রীতিমত নাকানিচুবানি খেয়ে ডাগআউটে ফিরতে হয় কন্তের দলকে।

    কন্তেও ছেড়ে কথা কইতে চাইলেন না। টুখেলকে ঠেকাতে তিনিও দ্বিতীয়ার্ধে নামলেন ব্যাক ফোর নিয়ে; ম্যাট ডহার্টিকে উঠিয়ে নামালেন বক্স টু বক্স মিডফিল্ডার টাঙ্গি এনডম্বেলেকে। ট্যাকটিকাল এই পরিবর্তন যে আসলেই কার্যকরি ছিল তা প্রমাণ মিলল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। এরপরের সাত মিনিট চেলসি বক্সে একের পর এক আক্রমণ করে গেছেন কেইন সনরা, যার মূল যোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন এই এনডম্বেলেই।

    কিন্তু সে পর্যন্তই যা! ট্রানজিশনে আবারও আক্রমণে যাওয়া শুরু করলে চেলসির দাপটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে আর পারেনি কন্তের টটেনহাম। শুধু ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে ব্রায়ান হিল ও জিয়ভান্নি লো চেলসোর চেষ্টায় ভালো এক জায়গা থেকে শট নিলেও সেটা শেষ পর্যন্ত ঠেকিয়ে দেন কেপা আরিজাবালাগা। এর আগেও কেইনের একটি দুর্দান্ত ফ্রি কিকও ঠেকিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেছিলেন তিনি।

    ম্যাচে স্কোরলাইন আর বদলায়নি। তবে এটাই শেষ নয়। হোয়াইট হার্ট লেনে সেমির দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে দুই দল। তবে হোমে ২ গোলে এগিয়ে থাকায় সুযোগটা চেলসির জন্যই বেশি থাকবে। অন্যদিকে কন্তেও চাইবেন নিজেদের মাঠে চেলসিকে ধসিয়ে স্পার্সের দীর্ঘদিনের শিরোপা স্বপ্ন পূরণ করার জন্য আরেকধাপ এগিয়ে যেতে