নেট সেশন: বাংলাদেশের সামনে ‘অচেনা’ ওয়ানডেতে ‘চেনা’ আফগানিস্তান
আফগানিস্তানের বাংলাদেশ সফর
ওয়ানডে সিরিজ, ২০২২
কবে, কখন
১ম ওয়ানডে, ২৩ ফেব্রুয়ারি
সকাল ১১.০০টা
টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির ঠাঁসা সূচিতে গত ৮ মাসেও কোনো ওয়ানডে খেলেনি বাংলাদেশ দল। সর্বশেষ ২০২১ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলেছিল জিম্বাবুয়ে সফরে। আইসিসি সুপার লিগের অন্তর্ভূক্ত সেই ওয়ানডে সিরিজটা ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিলেন তামিম ইকবালরা।
দীর্ঘ এই বিরতির পর আবারও ওয়ানডে খেলতে নামছেন তামিমরা। প্রতিপক্ষ এবার আফগানিস্তান। তামিমও জানিয়েছেন সুপার লিগের এই সিরিজ নিয়ে তারা রোমাঞ্চিত।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বশেষ দেখা ২০১৯ বিশ্বকাপে। সেই ম্যাচে মুশফিক-সাকিবদের নৈপূণ্যে ৬২ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এই সিরিজেও থাকছেন এই দুই সিনিয়র ক্রিকেটার। স্কোয়াডে আছেন বিপিএলে আলো ছড়ানো নাসুম আহমেদ, ইয়াসির আলি রাব্বি, মাহমুদুল হাসান জয় ও এবাদত হোসেন।
এদের মধ্যে প্রথমবার ওয়ানডে স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন জয় ও এবাদত। এই বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো হারানোর নেপথ্যের নায়ক এই দুজন। মূলত টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্স দিয়েই দলে জায়গা করে নিয়েছেন তারা।
ওপেনিংয়ে অধিনায়ক তামিমের সঙ্গী লিটন। তিনে সাকিব, চারে মুশফিক। পাঁচে ভাগ্য খুলতে পারে রাব্বি কিংবা জয়ের। চট্টগ্রামের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটের কথা মাথায় রাখলে অভিষেক হতে পারে তাদের কারো। সাকিবের সঙ্গে স্পিনে জুটি বাঁধবেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাকআপ হিসেবে নাসুম তো থাকছেনই। পেস বোলিং সামলাবেন তাসকিন-মোস্তাফিজ, তিন পেসার খেলালে একাদশে ঢুকতে পারেন শরীফুল কিংবা এবাদত।
বাংলাদেশের উইকেট কিংবা কন্ডিশন নিয়ে বেশ ভালো ধারণা আছে আফগানিস্তানের। বাংলাদেশের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত তিনটি ওয়ানডে জিতেছে আফগানরা। এর মধ্যে দুটিই এসেছে বাংলাদেশের মাঠে। এর ওপর আফগান ক্রিকেটারদের নিয়মিতই দেখা যায় বিপিএলে।
আফগানিস্তানের মূল শক্তির জায়গা তাদের বৈচিত্র্যময় স্পিন বিভাগ। ওয়ানডে স্কোয়াডে ফিরেছেন মোহাম্মদ নবি। তার সাথে আছেন লেগ স্পিনার রশিদ খান ও এবারের বিপিএলে চমক দেখানো মুজিব-উর রহমান। এই তিনজনকে নিয়ে আফগানদের স্পিন বিভাগ বেশ শক্তিশালী। আছেন আরেক লেগ স্পিনার কাইস আহমাদও। এদের মধ্যে সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকবেন বোধহয় মুজিব। সাকিবের সঙ্গে জুটি বেঁধে গোটা বিপিএলেই ভুগিয়েছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের।
দলের বোলারদের লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিতে ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের সাথে আছেন উসমান গণি। টপ আর মিডল অর্ডারে নবি, হাশমতউল্লাহ শহীদি, নাজিবউল্লাহ জাদরানরাও বড় ইনিংস খেলার সামর্থ্য রাখেন। পেস আক্রমণে দেখা যেতে পারে ফরিদ আহমাদ, ইয়ামিন আহমেদজাই ও ফজল হক ফারুকীকে।
এ বছরের শুরুতেই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে আফগানিস্তান। ৩-০ তে জেতা সেই সিরিজের ধারাবাহিকতা তারা ধরে রাখতে চাইবে বাংলাদেশের বিপক্ষেও।
রঙ্গমঞ্চ
চট্টগ্রামের উইকেট বরাবরই ব্যাটিং সহায়ক। এবারের বিপিএলেও প্রচুর রান হয়েছে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ডিউ ফ্যাক্টর আমলে নিয়ে সবগুলো ম্যাচই সকাল ১১টায় শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। তখন আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক। এই মাঠের শেষ পাঁচ ওয়ানডের প্রথম ইনিংসের স্কোর গড়ে ২৫৪।
সম্ভাব্য একাদশ
অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা আছে জয় কিংবা রাব্বির। যদিও রাব্বির চেয়ে জয় এগিয়ে আছেন টপ কিংবা মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে পারার সক্ষমতায়। অবশ্য স্পিনটা দুজনই ভালো খেলেন। ডানহাতিদের বিপক্ষে ফায়দা নেয়ার চিন্তা টিম ম্যানেজমেন্টের থাকলে একাদশে দেখা যেতে পারে শরীফুলকে।
বাংলাদেশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল হাসান জয়/ ইয়াসির রাব্বি, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, শরীফুল ইসলাম/এবাদত হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।
আফগানিস্তানের একাদশে কাইস আহমাদের জায়গায় বিবেচিত হতে পারেন ইয়ামিন আহমেদজাই। নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে তার সাম্প্রতিক ব্যাটিং বোলিংই এগিয়ে রাখছে তাকে।
আফগানিস্তান: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, রিয়াজ হাসান, রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ শহীদি (অধিনায়ক), নাজিবউল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, মুজিব-উর রহমান, ইয়ামিন আহমেদজাই, ফরিদ আহমাদ ও ফজল হক ফারুকী।
সংখ্যার খেলা
৬
সর্বশেষ ৬ ওয়ানডের সবকয়টিই জিতেছে আফগানিস্তান।
সর্বশেষ ৬ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় ৫টিতে।
গত ১০ বছরে চট্টগ্রামে ৭টি ওয়ানডে খেলে ৬টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।