• এশিয়া কাপ
  • " />

     

    মুজিব-রশিদের স্পিন বিষে নীল বাংলাদেশকে বশ করল জাদরান ভাইদের জাঁদরেল ব্যাটিং

    মুজিব-রশিদের স্পিন বিষে নীল বাংলাদেশকে বশ করল জাদরান ভাইদের জাঁদরেল ব্যাটিং    

    এশিয়া কাপ, গ্রুপ পর্ব, শারজাহ(টস-বাংলাদেশ/ ব্যাটিং)
    বাংলাদেশ- ১২৭/৭, ২০ ওভার (মোসাদ্দেক ৪৮*, মাহমুদউল্লাহ ২৫, , মাহেদী ১৪, মুজিব ৩/১৬, রশিদ ৩/২২)
    আফগানিস্তান- ১৩১/৩, ১৮.৩ ওভার (নাজিবউল্লাহ ৪৩*, ইব্রাহিম ৪২*, জাযাই ২৩, মোসাদ্দেক ১/১২, সাকিব ১/১৩, সাইফউদ্দিন ১/২৭)
    ফলাফল: আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী

     

    টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই আফগানিস্তান বলেছিল এবার তারা এসেছ শিরোপা নিয়ে ঘরে ফিরতে। শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়ার পর বাংলাদেশকেও নাজেহাল করে সেই বার্তা শক্তভাবেই দিয়ে রাখল মোহাম্মদ নবীর দল। মুজিব-উর-রহমান, রশিদ খানদের দৌরাত্ম্যে কোণঠাসা বাংলাদেশের মুখ রক্ষা করেছিল মোসাদ্দেক হোসেনের ৪৮* রানের ইনিংস। সাকিব-মোসাদ্দেকের স্পিনে বাংলাদেশ ম্যাচে থাকলেও শেষ দিকে দুর্দান্ত পাওয়ারহিটিংয়ের পসরা সাজিয়ে আফগানিস্তানকে টানা দুই জয়ে সুপার ফোরে নিয়ে গিয়েছেন জাদরান ভাইয়েরা।

    জাদরান ভাইদের খুনে ব্যাটিংয়ের আগে নিজের ১০০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা বাংলাদেশ অধিনায়ক চেপে ধরেছিলেন আফগান ওপেনারদের। রহমানউল্লাহ গুরবাজকে সাকিব ফেরালে পাওয়ারপ্লেতে আফগানিস্তান তুলতে পারে ২৯ রান। নিজের ছায়া হয়ে থাকা অন্য ওপেনার হযরতউল্লাহ জাযাইকে এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরিয়ে বল হাতেও দারুণ সূচনা করেন মোসাদ্দেক হোসেন। ১০ ওভারে ২ উইকেট তুলে নিয়ে আফগানিস্তানকে মাত্র ৪৮ রানে বেঁধে ফেলে ভালভাবেই ম্যাচে ছিল বাংলাদেশ।

    ১৩তম ওভারে আক্রমণে এসে সাইফউদ্দিন যখন মোহাম্মদ নবীকে ফেরালেন তখন বাংলাদেশ জয়ের স্বপ্নে বিভোর। শেষ ৬ ওভারে আফগানদের তখন প্রয়োজন ৬৩ রান, হাতে ৭ উইকেট। উইকেটে ভাই ইব্রাহিমের সাথে তখন যোগ দিয়েছেন নাজিবউল্লাহ। দুজন মিলে বাংলাদেশের পেসারদের লক্ষ্য বানিয়ে আক্রমণ শুরু করলেন তাসকিনের করা ১৫তম ওভারে দুই চারে ১১ রান নিয়ে। মোস্তাফিজের করা ১৭তম ওভারে দুই ছয়ে ১৭ রান নেওয়ার পরের ওভারে তো রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন দুই ভাই, বিশেষ করে নাজিবউল্লাহ। সাইফউদ্দিনের করা পরের ওভারে দুইটি করে চার-ছয়ে ২২ রান নিয়ে ওই ওভারেই বাংলাদেশের কফিনে পেরেক ঠুকে দিলেন দুই ভাই। পরের ওভারে মোসাদ্দেককে ছয় মেরে তুলির শেষ আঁচড়টা যোগ্যভাবেই দিলেন নাজিবউল্লাহ। ইব্রাহিম ৪১ বলে ৪২* রান করে এক প্রান্ত আগলে রাখলে নাজিবউল্লাহ আরও একবার তার পেশির শক্তি দেখিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন ১৭ বলে ৪৩* রান করে, যেখানে ছিল ৬টি ছয়!

    অথচ বাংলাদেশ যখন টসে জিতে ব্যাটিং নিল তখন মনে হল পিচে কোনও ভুত রয়েছে। দুই ওপেনার নাঈম শেখ, আনামুল হককে ফেরানোর পর পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে সাকিবকে ফেরালেন মুজিব একাই। বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে তুলতে পারল মোটে ২৮ রান। মুজিবের ফাঁড়া কাটাতে না কাটাতেই এলেন আরেক যম রশিদ খান। পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে আক্রমণে এসেই দারুণ এক গুগলিতে মুশফিকের স্টাম্প উপড়ে ফেলার পর পাঁচে নামা আফিফকেও ফেললেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। ১১ ওভারে ৫ উইকেট খুইয়ে বাংলাদেশ তখন তুলতে পেরেছে ৫৫ রান।

    অথচ উইকেটে এসে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ যেন হাঁটলেন উলটো পথে। ইনিংস মেরামত শুরু করলেন ধীর লয়ে। আর আরও একবার দলকে বিপদে রেখে বিদঘুটে এক ইনিংস শেষে রশিদের বলে এলোপাথাড়ি স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে বল আকাশে তুলে রশিদের শিকার হয়ে ফিরলেন, ২৭ বলে ২৫ রান করে। মাহমুদউল্লাহর রেখে যাওয়া ধ্বংসস্তুপ থেকে মান বাঁচিয়েছেন এরপর মোসাদ্দেক। মাহেদী হাসানকে নিয়ে শেষ ৩ ওভারে ৩২ রান তুলে নিজে অপরাজিত ছিলেন ৩১ বলে ৪৮* করে। যদিও সেই পুঁজিকে শেষ দিকে জাদরান ভাইরা মামুলি বানিয়েই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে।