ক্রাইস্টচার্চের কনকনে হাওয়ায় পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের নতি স্বীকার
১ম টি-টোয়েন্টি, ক্রাইস্টচার্চ(টস-বাংলাদেশ/বোলিং)
পাকিস্তান-১৬৭/৫, ২০ ওভার (রিজওয়ান ৭৮*, শান ৩১, বাবর ২২, তাসকিন ২/২৫, নাসুম ১/২২, মিরাজ ১/১২)
বাংলাদেশ-১৪৬/৮, ২০ ওভার (ইয়াসির ৪২*, লিটন ৩৫, আফিফ ২৫, ওয়াসিম ৩/২৪, নাওয়াজ ২/২৫, দাহানি ১/২৪)
ফলাফল: পাকিস্তান ২১ রানে জয়ী
ক্রাইস্টচার্চের হাড় কাপাকাপি আবহাওয়াতে বাংলাদেশের শিরদাঁড়ায় কাপন ধরিয়ে জয় দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু করল পাকিস্তান। বল হাতে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে লম্বা সময় ধরে চেপে রাখলেও মোহাম্মদ রিজওয়ান ৭৮* রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে এনে দিয়েছিলেন লড়াকু সংগ্রহ। পাকিস্তানের পেসারদের তোপে জবুথবু হয়ে থাকা বাংলাদেশ সামলাতে পারেনি স্পিনার মোহাম্মদ নাওয়াজকেও। ইয়াসির আলী ৪২* রান করে শেষের দিকে লড়ে গেলেও জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করেছে পাকিস্তানই।
জয়ের ভিতটা পাকিস্তান তৈরি করেছিল শুরু থেকেই। পেসারদের তোপে কোণঠাসা হয়ে থাকা দুই ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমান ফেরেন পাওয়ারপ্লের মধ্যেই। ১১ বলে ১০ রান করে মিরাজ ও ১৮ বলে ১৪ করে সাব্বির ধীর শুরুর পর ফিরলে পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তুলতে পারে ৩৮ রান।
পাওয়ারপ্লের পর লিটন দাস-আফিফ হোসেনের নতুন জুটিও তেমন একটা সুবিধা করতে পারছিল না। শাদাব খান আক্রমণে আসার পর তার ওপর চড়াও হয়ে এরপর লিটন গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দেন। সেটা করতে গিয়েই ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়্যার লেগে সরাসরি ক্যাচ তুলে দিয়ে ২৬ বলে ৩৫ রানে ফেরেন লিটন। ঠিক পরের বলেই অলস এক শট খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর শিকার হন মোসাদ্দেক হোসেন।
উইকেটের অন্য প্রান্তে সুবিধা করতে না পারা আফিফ হাত খোলার চেষ্টা করলে পরের ওভারে শাহনাওয়াজ দাহানির শিকার হয়ে ফেরেন ২৩ বলে ২৫ রান করে। পরের ওভারে শাদাবের প্রথম শিকার হয়ে নুরুল হাসান সোহান ফিরলে বাংলাদেশের জয়ের আশা একেবারেই ক্ষীণ হয়ে যায়। ১৯তম ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে টানা দুই বলে মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র ফেরান তাসকিন ও নাসুমকে; বাংলাদেশের কফিনে কার্যত পেরেক ঠুকে দেন সেখানেই। হারিস রউফের করা শেষ ওভারে ৩ চার ও ১ ছয়ে ইয়াসির ২০ রানে নিয়ে ২১ বলে ৪২* রানে অপরাজিত থেকে এরপর শুধু হারের ব্যবধানটুকুই কমিয়েছেন।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য এর আগে উইকেট ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েই খেলছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার; পাওয়ারপ্লেতে বাবর-রিজওয়ান জুটি তুলেছিলেন ৪৩ রান। ৮ম ওভারে মিরাজকে সুইপ করতে গিয়ে ২৫ বলে ২২ রান করে বাবর ফিরলে শান মাসুদকে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন রিজওয়ান। রানের চাকা সচল রাখতে শান মারমুখী হয়ে উঠতে গেলে নাসুমের শিকার হয়ে ফেরেন ২২ বলে ৩১ রান করে। ১৫তম ওভারে ইয়াসিরের দুর্দান্ত ক্যাচে তাসকিন হায়দার আলীকে ফেরানোর পরের ওভারে ৩৮ বলে নিজের ২১তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফিফটি তুলে নেন রিজওয়ান।
সেখান থেকে মোস্তাফিজুরের ওপর চড়াও হয়ে গিয়ার পাল্টান তিনি। ১৮তম ওভারে হাসান মাহমুদের শিকার হয়ে ইফতিখার আহমেদ ফেরার পরের ওভারে দারুণ বল করতে থাকা তাসকিন আসিফ আলীকে ফেরালেও তাই খুব একটা আশাব্যাঞ্জক ফল পায়নি বাংলাদেশ। ১৭তম ওভারে ১৬ রান গোনার পর শেষ ওভারে ১৩ রান গোনেন মোস্তাফিজ। ৫০ বলে ৭৮* রান করে রিজওয়ান তাই অপরাজিত থেকে দলকে যেই পুঁজি এনে দিয়েছিলেন বোলারদের দক্ষতায় দিন শেষে সেটাই যথেষ্ট প্রমাণ করেছে পাকিস্তান।