পরিবর্তন ৩, ফলাফল ০; বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের অনুমিত জয় এল অনায়াসেই
৩য় টি-টোয়েন্টি, ক্রাইস্টচার্চ(টস-নিউজিল্যান্ড/বোলিং)
বাংলাদেশ-১৩৭/৮, ২০ ওভার (শান্ত ৩৩, সোহান ২৫, আফিফ ২৪, ব্রেসওয়েল ২/১৪, বোল্ট ২/২৫, সোধি ২/৩১)
নিউজিল্যান্ড-১৪২/২, ২০ ওভার (কনওয়ে ৭০*, উইলিয়ামসন ৩০, ফিলিপস ২৩*, হাসান ১/২৬, শরিফুল ১/৩৯)
ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে টি-টোয়েন্টিতে এবারও জয়ের খাতা খোলা হল না বাংলাদেশের। নাজমুল হোসেন শান্তর ৩৩ রানের সাথে নুরুল হাসান সোহানের ২৫* রানে বাংলাদেশ যেই লক্ষ্য দাঁড় করিয়েছিল হ্যাগলি ওভালের অসম বাউন্সেও সেটা প্রতিকূল হওয়ার কথা ছিল না। অনুমিতভাবেই ডেভন কনওয়ে-কেন উইলিয়ামসনের ৮৫ রানের ৩য় উইকেট জুটির পর গ্লেন ফিলিপসের ৯ বলে ২৩* রানে সেই লক্ষ্য পেরিয়ে গিয়ে সিরিজে জয়ের খাতা খুলেছে স্বাগতিকরা।
শুরুতে রয়েসয়ে খেলা নিউজিল্যান্ড প্রথম উইকেট হারায় পাওয়ারপ্লের মধ্যেই। ১৮ বলে ১৬ রান করে ডিপ স্কয়্যার লেগে সরাসরি ক্যাচ তুলে দিয়ে শরিফুলের শিকার হয়ে ফিন অ্যালেন ফিরলে পাওয়ারপ্লেতে তারা তোলে ৪০ রান। উইকেটে এসে এরপর ওয়ানডে ধারায় উইলিয়ামসন খেলতে থাকলে প্রান্ত বদলের দিকেই মনোযোগ দেন কনওয়েও।
শরিফুলকে চার মেরে ৩৬ বলে কনওয়ে ফিফটি পূর্ণ করার পরপরই হাসানের শিকার হয়ে ২৯ বলে ৩০ রান করে ফেরেন উইলিয়ামসন। উইকেটে এসে এরপর ক্ষণিকের মাঝেই ২টি করে চার ও ছয় মেরে ম্যাচের ইতি টানেন ফিলিপস। অন্যদিকে ৫১ বলে ৭০* রান করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েই মাঠ ছাড়েন কনওয়ে।
এর আগে ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদির সুইংয়ে জেরবার দুই ওপেনারের মধ্যে একবার সুযোগ পান মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে তার কয়েক বল পরেই উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ফেরেন ৫ রানে। লিটনকে নিয়ে এরপর পাওয়ারপ্লে সামলে শান্ত দলকে নিয়ে যান ৪১ রানে। উইকেটের অন্য প্রান্তে লিটন অবশ্য সুবিধা করতে পারছিলেন না; নিশামের হাতে মামুলি ক্যাচ তুলে দিয়ে এমনকি বেঁচেও গিয়েছিলেন। মাইকেল ব্রেসওয়েল আক্রমণে এলে হাত খোলার চেষ্টা করতে গিয়ে প্রথম দুই বলে ব্যর্থ হয়ে অস্থির হয়ে ওঠা লিটন তৃতীয় বলেই ব্রেসওয়েলকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৬ বলে ১৫ রান করে।
কঠিন উইকেটে এরপর সুবিধা করতে পারেননি শান্ত বা উইকেটে নবাগত আফিফের কেউই। কিউই স্পিন জুটি সোধি-ব্রেসওয়েলে কোণঠাসা হয়ে গিয়ার পালটাতে গিয়ে সোধিকে বেরিয়ে এসে মাঠছাড়া করার চেষ্টা করতেই মিড অফে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় শান্তর ২৯ বলে ৩৩ রানের ইনিংস। সেই সাথে মাত্র ২য় নিউজিল্যান্ড পুরুষ হিসেবে ১০০ আন্তর্জাতিক উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন সোধি। এরই মধ্যে অন্য প্রান্তে মিলনের সহজ ক্যাচ মিসের বদৌলতে বেঁচে যাওয়া আফিফ বারবার রিভার্স সুইপ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থতার মুখ দেখেন। অন্য প্রান্তে স্পিন জুজু কাটিয়ে উঠতে না পেরে মুহূর্তের মাঝেই ফিরে যান মোসাদ্দেক হোসেন ও ইয়াসির আলী।
বিস্ময়কর সিদ্ধান্তে এদিন সাতে নামা সাকিব আফিফের সাথে জুটি বেঁধেও রানের চাকা সচল করতে পারেননি। বাংলাদেশ শতরান ছোঁয় ১৬.৩ ওভারে গিয়ে! ধুঁকতে থাকা আফিফ এরপর বোল্টের সোজা বলে সপাটে ব্যাট চালাতে গিয়ে স্টাম্প খুইয়ে ফেরেন ২৬ বলে ২৪ রান করে। পরের ওভারে সাউদির স্লোয়ার পড়তে না পেরে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে বল প্রতি ১৬ রান করে ফেরেন সাকিবও। সেখান থেকে বাংলাদেশের মান বাঁচান সোহান। সোধির করা ১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে ছয় মারার পর শেষ ওভারে একটি চার মেরে ১২ বলে ২৫* রান করে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিলেন সম্মানজনক সংগ্রহ। সেই পুঁজি যে মামুলি সেটা প্রমাণ করতে কনওয়ে-ফিলিপসরা ভুল করেননি অবশ্য।