নাটকীয় ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে ইরানের দাপটে ওয়েলসের স্বপ্নভঙ্গ
ওয়েলস ০:২ ইরান
প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে এবারের আসর শুরু করেছিল ইরান। তার উপর নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে ইউরোপের কোনও দলকে হারাতে না পারে ইরানের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের প্রতিবেশী ওয়েলস। সেই ওয়েলস, যারা প্রথম ম্যাচেই দেখিয়েছিল দারুণ প্রত্যাবর্তন। তবে এবার পাশার দান উলটে দিয়ে প্রত্যাবর্তনের গল্পটা লিখল ইরান। সেই সাথে এবারের বিশ্বকাপ দেখল প্রথম লাল কার্ড, প্রথম ডি-বক্সের বাইরে থেকে গোল। সর্বোপরি, বিশ্ব দেখল উত্তেজনায় ঠাসা এক ম্যাচ। যোগ করা সময়ে রুজবেহ চেশমি ও রামিন রেজাইয়ানের গোলে জয় দিয়ে গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় দুইয়ে চলে গেল ইরান।
কাঙ্ক্ষিত গোলের জন্য ইরানকে হয়ত এতক্ষণ অপেক্ষা করতে হত না, বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেই ভিএআর। সর্দার আজমুনের পাস থেকে ঘোলিজাদেহ গোলের খাতা খুললেও অফসাইডে কাটা পড়ে সেই গোল। নিজেদের খেলা এরপর গুছিয়ে নিয়ে ওয়েলস আক্রমণে উঠলেও ফাইনাল থার্ডে ছিল একেবারেই নিষ্প্রভ। ইরানের রক্ষণ-রেখার বুদ্ধিদীপ্ত খেলায় বারবারই তাদের হতাশ হতে হয়েছে। প্রথমার্ধ তাই গোলশুন্য অবস্থায় শেষ হলেও ম্যাচের তেজটা টের পাওয়া যাচ্ছিল বেশ।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে খেলা যতই গড়াচ্ছিল ম্যাচে ইরানের আক্রমণ যেন ততই প্রখর হয়ে উঠছিল। ৭৩ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া এজাতোল্লাহির দারুণ শুট প্রতিহত করেন ওয়েইন হেনেসি। তবে ৮৬ মিনিটের মাথায় গিয়ে হেনেসিকে যেন কোনও অশরীরী আত্মা পেয়ে বসল। তারেমির উদ্দেশ্যে বাড়ানো বলটা ডিবক্সের অনেক বাইরে বেরিয়ে এসে সরাতে চাইলেন তিনি। তারেমিও আগুয়ান গোলকিপারকে দেখে আলতো ছোঁয়ায় বল সরিয়ে নিলে হেনেসি তার দৌড় না সামলে তারেমির মুখে কনুই দিয়ে মেরেই বসেন বলা চলে। বিশ্বকাপে এবার প্রথম ও সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৩য় গোলকিপার হিসেবে লাল কার্ড দেখে হেনেসি বিদায় নিলেই ঘুরে যায় খেলার মোড়।
৯৮ মিনিটের মাথায় জো অ্যালেন দুর্বলভাবে বক্সের বাইরে বল ঠেলে দিলে সেখান থেকেই ক্ষিপ্রতার সাথে শট নেন চেশমি। জোরাল সেই শটে পোস্টের নিচের কোণায় বল জড়িয়ে গেলে ইরান যেন জয়ের সুবাস পেতে শুরু করে। তিন মিনিটের মাথায় সেই অ্যালেনের পা থেকেই বল ছিনিয়ে নিয়ে তারেমি প্রতি-আক্রমণে উঠে যান। নিঃস্বার্থভাবে উঠে আসা ডিফেন্ডার রেজাইয়ানের দিকে বল বাড়িয়ে দিলে সেখান থেকে বল জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি। দারুণ এক ম্যাচ জিতে ইরান তাই কাটাল ইউরোপ-ফাঁড়া। সেই সাথে ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া ওয়েলসেরও খোলা হল না জয়ের খাতা।