দারুণ জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
মাত্রই মাশরাফির বলে বোল্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেছেন বেন স্টোকস। ২৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছে ইংল্যান্ড। ঠিক সে সময় টুইট করলেন সাবেক ইংলিশ অলরাউন্ডার ডেরেক প্রিঙ্গল। লিখলেন, জনি বেইরস্টো ও জস বাটলার যদি ২০ ওভার একসাথে খেলতে পারেন তাহলেই জিতবে ইংল্যান্ড। পুরো ২০ ওভার না হলেও ১৩ ওভার ৫ বল একসাথে খেলে ৭৯ রানের জুটি গড়েছিলেন বেইরস্টো ও বাটলার। আর তাতেই দানা বাঁধছিল শঙ্কা। কিন্তু জয় যে মুখ টিপে হাসছিল বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে। ব্যাট ও বল হাতে মাশরাফি বিন মুর্তজার অনবদ্য নৈপুণ্যে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৩৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
ব্যাট হাতে ঝেড়ো ৪৪ রানের পর বোলিং ও মাঠের অধিনায়কত্বেও দুর্দান্ত মাশরাফি। ২৩৯ রানের লক্ষ্যে ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নামার পর প্রথম ওভারেই আনলেন সাকিব আল হাসানকে। এই নিয়ে ক্যারিয়ারের ১৬২ ওয়ানডেতে মাত্রই দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের বোলিং ওপেন করলেন সাকিব। শেষ যে দুই ম্যাচে এক বা দুইয়ে বোলিং করেছিলেন তাতে পেয়েছেন ৪টি করে উইকেট। প্রথম বলেই প্রায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন জেসন রয়কে। কিন্তু আজ যে দিন মাশরাফির। নিজের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে ফিরিয়ে দিলেন ইংলিশ ওপেনার জেমস ভিন্সকে। পরের ওভারে আঘাত সাকিবের। শূন্য রানে বিদায় বেন ডাকেটের। এরপর জেসন রয় ও বেন স্টোকসকে মাশরাফি ড্রেসিংরুমে পাঠালে ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ইংল্যান্ড। খুঁড়িয়ে চলা ব্যাটিংয়ের পর দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়ের স্বপ্নটা চওড়া হয়ে ওঠে অগুণিত সমর্থকের।
সাকিব ও মাশরাফি টানা তেরো ওভার বল করার পর তাঁদের জায়গায় আসেন শফিউল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। তাঁদের বোলিংয়ের শুরুটা ঠিক পূর্বসূরীদের মতো হয়নি। এই সুযোগে আস্তে আস্তে ম্যাচে ফিরতে থাকে ইংল্যান্ড। জস বাটলার ও জনি বেইরস্টোর ৮৩ বলে ৭৯ রানের জুটি শঙ্কাই জাগিয়ে দিচ্ছিল বাংলাদেশের মনে। সে সময় টিভি পর্দায় দেখা গেল সাকিব, তামিম ও মাশরাফিকে একসঙ্গে মগ্ন হয়ে কিছু কথা বলতে। তারপরই বল হাতে দেখা গেল তাসকিনকে। এর আগে দুই ওভারে ১৯ রান দেওয়া তাসকিন যেন বদলে গেলেন জাদুমন্ত্রবলে! সে ওভারের তৃতীয় বলে আসলো কাঙ্ক্ষিত উইকেট। লাফিয়ে ওঠা একটা বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন জনি বেইরস্টো। এরপর নাসির মঈন আলীকে এবং তাসকিন জস বাটলার ও ক্রিস ওকসকে ফিরিয়ে দিলে ৭ উইকেটে ১২৩ রানে আটকে পড়ে ইংল্যান্ড।
এরপর শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পেরেছেন আদিল রশিদরা। ডেভিড উইলির সঙ্গে ২৭ ও জেক বলের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়লেও তা ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। ২৮ রান করা জেক বলকে ফিরিয়ে দিলে ইংল্যান্ডের ইনিংসটা গুটিয়ে দেন সেই মাশরাফিই।
সিরিজে এখন ১-১ সমতা। টানা সাত ওয়ানডে সিরিজ জিততে হলে বুধবারের শেষ ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশের কোটি কোটি সমর্থকদের।