• ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ সিরিজ
  • " />

     

    ম্যাকগ্রাই এখন শুভাশিসের আদর্শ

    ম্যাকগ্রাই এখন শুভাশিসের আদর্শ    

    স্কুল ড্রেস বদলে যখন সাদা পোশাকে নেমে পড়তেন রংপুর ক্রিকেট গার্ডেন মাঠে, গ্যালারিতে জড়ো হওয়া শ খানেক স্কুল ছাত্রের মোহাবিষ্ট চোখ ঘিরে থাকতো শুভাশিস রায় চৌধুরীকে। স্কুল ক্রিকেটে গতিময় বোলিং করা শুভাশিস কৈশোরেই পেয়ে গিয়েছিলেন সম্ভাবনাময় বোলারের স্বীকৃতি। অ্যালান ডোনাল্ড-ওয়াকার ইউনিসদের বোলিং দেখে পেস বোলার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুভাশিস বড় হয়ে বদলে ফেলেন আদর্শ। গ্লেন ম্যাকগ্রার মতো নিখুঁত লাইন-লেংথে বল করাই এখন তাঁর ধ্যানজ্ঞান।

    জাতীয় পর্যায়ে প্রথম শুভাশিস পরিচিতি পান ২০০৫ সালের পেসার হান্ট দিয়ে। সেবার পাওয়া সেরা ১০ পেসারের একজন ছিলেন তিনি। ১৭ বছর বয়সী শুভাশিসের বলের গতি ছিল ঘন্টায় ৭৮ মাইল। সেখান থেকেই সুযোগ পান অনুর্ধ্ব-১৯ দলে। ২০০৮ সালের অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পান রংপুরের এই পেসার। সেবার বাংলাদেশ দলে তাঁর সতীর্থ ছিল নাসির হোসেন, রনি তালুকদার ও রুবেল হোসেনরা। এরপর জাতীয় লিগে অভিষেক ঘটে সিলেট বিভাগের হয়ে।

     

    সে সময়কার সতীর্থদের অনেকেই এখন জাতীয় দলের পুরনো মুখ। এঁদের সঙ্গে থাকতে পারতেন শুভাশিসও। কিন্তু চোটের সঙ্গে লড়াইয়ে বারবার পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। ২০১১ বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে থাকলেও চোটে পড়ায় জায়গা হয়নি মূল দলে। সেটা সেরে যেতে না যেতে আবারও লিগামেন্টের চোটে পড়েন তিনি। চিকিৎসা-পুনর্বাসন সব মিলিয়ে মেঘে মেঘে কেটে যায় অনেকটা বেলা। সতীর্থরা যখন জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ, তখন শুভাশিস একাডেমি মাঠে ঘাম ঝরিয়েছেন ‘এ’ দল কিংবা হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের হয়ে। দাঁতে দাঁত চেপে করে গেছেন নিয়ত অনুশীলন।

    চোটের সঙ্গে লড়ে কৈশোরের সেই গতি খানিকটা কমেছে। তবে শুভাশিসের শক্তি এখন একই জায়গায় অনবরত বল করে যাওয়ার দুর্দান্ত ক্ষমতা। এটাই প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের দুয়ার খুলে দিয়েছে তাঁর জন্য। এই প্রতিবেদককে বলেছেন নিজের লক্ষ্যের কথা, “দলে সুযোগ পেলে চেষ্টা থাকবে জায়গা ধরে রাখার। লাইন-লেংথের ওপরই জোর দেব।”

     

    বিসিবি একাদশের হয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে
     

     

    শোনা যাচ্ছে প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টেও স্পিন সহায়ক উইকেট চাচ্ছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। সেক্ষেত্রে একজন পেসারের ভূমিকা কী হতে পারে? শুভাশিস জানিয়েছেন, “ঘরোয়া ক্রিকেটেও এমন পিচে খেলেছি। চেষ্টা থাকবে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর।”

    সরকারি কর্মকর্তা মা-বাবার সন্তান শুভাশিস ছিলেন কৃতি ছাত্রও। পড়াশোনা করেছেন রংপুর জিলা স্কুল ও পুলিশ লাইন্স কলেজে। জাতীয় দলের সৌরভ অনেক দিন ধরে পেতে থাকা এই পেসারের এবার নিজেকে প্রমাণ করার পালা। সারাদেশের সামনে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না ২৭ বছর বয়সী শুভাশিস।