স্টোয়নিসের ম্যাচে সেই উইলিয়ামসনই নায়ক
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড- ২৮৬/৯ ( ব্রুম ৭৩, গাপটিল ৬১, স্টোয়নিস ৩/ ৪৯ )
অস্ট্রেলিয়া- ২৮০ ( স্টোয়নিস ১৪৬*, স্যান্টনার ৩/৪৪ )
ফলাফল- নিউজিল্যান্ড ৬ রানে জয়ী
ম্যান অফ দা ম্যাচ- মার্কাস স্টোয়নিস
ক্রিকেটকে বলা হয় ‘গৌরবময় অনিশ্চয়তার’ খেলা। বিশেষণটা যেই দিয়ে থাকুক না কেন, তিনি হয়তো মার্কাস স্টোয়নিসের অতিমানবীয় ইনিংস দেখে আজকে আবারো মুচকি হেসেছেন। আধ ঘণ্টা! মাত্র আধ ঘণ্টা আগেও কেউ ভাবেননি ম্যাচের শেষটা এরকম হতে পারে! অজি অলরাউন্ডার স্টোয়নিসের হার না মানা এক ব্যাটিং প্রদর্শনী অকল্যান্ডের প্রথম ওয়ানডেকে নিয়ে গিয়েছে অন্তিম মুহূর্তে। তবে শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালের মতো এবারো অজিদের হতাশায় ডুবিয়ে দলকে জয় এনে গিয়েছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। জস হ্যাজলউডকে রান আউট করে অসাধারণ এক ম্যাচের সমাপ্তি ঘটান।
যদিও ম্যাচের এরকম সমাপ্তি হয়তো খোদ উইলিয়ামসনও কল্পনা করেননি! ২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫৪ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে ফিঞ্চের দল। ঠিক সেখান থেকেই শুরু স্টোয়নিস রূপকথার। প্রায় ২ বছর আগে ক্যারিয়ারের একমাত্র ওয়ানডে খেলা ২৭ বছর বয়সী স্টোয়নিস ক্রিজে নামার পর থেকেই চার ছয়ের বন্যা বইয়ে দেন। অপর প্রান্তে যখন ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিল চলছিল, এক প্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখেন। ৯ টি চার ও ১১ টি ছয়ে সাজানো ইনিংসে নাজেহাল করে রেখেছিলেন বোল্ট, সাউদিদের।
২২৬ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে মিচেল স্টার্কের বিদায়ের পর অজিদের পরাজয় সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। কিন্তু স্টোয়নিসের ছিল অন্য পরিকল্পনা। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে নামা হ্যাজলউডের সাথে গড়ে তোলেন ৫৪ রানের জুটি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই জুটি গড়ার সময় হ্যাজলউড একটি বলও খেলেননি! নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে কখনোই আউট না হওয়া হ্যাজলউড অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে শুধু স্টোয়নিসের ‘ছক্কা-ঝড়’ উপভোগ করছিলেন। স্টোয়নিসের এই ঝড়ের কারণেই মনে হচ্ছিল, হয়তো অজিরা আজ অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলবে! তবে উইলিয়ামসনের দুর্দান্ত এক রান আউটে কোন বল না খেলেই প্রথমবারের মতো সাজঘরে ফিরতে হয় হ্যাজলউডকে।
দিনের শুরুতে গাপটিল ও ব্রুম কিউইদের বড় স্কোর গড়ার ভিত গড়েন। শেষের দিনে নিশম ও বোল্টের কল্যাণে অজিদের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেয় উইলিয়ামসনের দল। বল হাতেও সফল ছিলেন স্টোয়নিস, নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। প্রথম অজি ক্রিকেটার হিসেবে একই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি ও তিন উইকেট নিয়ে অনুমিতভাবে ম্যাচসেরাও হয়েছেন।
আজকের ম্যাচটি ফিরিয়ে এনেছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ইডেন পার্কের মাঠেই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সেই মহাকাব্যিক ম্যাচের আবহকে। ম্যাচটির কথা আজও ভুলতে পারেননি ক্রিকেট ভক্তরা। এটা প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, স্টোয়নিসের ইনিংস এই ম্যাচকেও ইতিহাসের পাতায় অমর করে রাখবে।