৪৪ বছর বয়সে দলকে ফাইনালে নিয়ে গেলেন হাদারি
বুরকিনা ফাসোর বিপক্ষে সেমিফাইনালের ম্যাচটা পেনাল্টিতে গড়িয়েছে। লিব্রেভিলের স্টেডিয়ামে টানটান উত্তেজনা। প্রতিপক্ষের এই শট ঠেকাতে পারলেই ফাইনালে পৌঁছে যাবে মিশর। ঝাঁপিয়ে পড়ে পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিলেন ইশাম এল হাদারি, সাথে সাথেই তাঁকে ঘিরে শুরু হলো সতীর্থদের উল্লাস। ৪৪ বছর বয়সী এই গোলকিপারের অসাধারণ নৈপুণ্যের কারণেই আবারো আফ্রিকান নেশনস কাপের ফাইনালে উঠেছে মিশর।
পুরো টুর্নামেন্টেই ‘বুড়ো’ হাদারির দক্ষতায় একটিও গোল হজম করেনি মিশর। কালকের ম্যাচেও শুরু থেকেই ঢাল হয়ে ছিলে পোস্টের সামনে। তাঁর দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে কয়েকবার নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছে বুরকিনা ফাসোর ফরোয়ার্ডরা। পেনাল্টির সময় তো বুঝিয়েই দিয়েছেন, তিনি এখনো সেরা! ম্যাচ শেষে হাদারি জানান, এবারের ফাইনালটা তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় ফাইনাল হবে, “আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছি না! ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে আবারো ট্রফিটা তুলে ধরতে পারলে দারুণ হবে। পুরো টুর্নামেন্ট আমরা দারুণ খেলেছি। এখন শুধু একটা ম্যাচ বাকি, এটায় নিজেদের স্বাভাবিক খেলা ধরে রাখতে পারলে আমরা অবশ্যই জিতব।”
অথচ এবারের টুর্নামেন্টে তাঁর মাঠে নামারই কথা ছিল না! গ্রুপ পর্বে মালির বিপক্ষে ম্যাচে একাদশের নিয়মিত গোলকিপার আহমেদ এল-শেনওয়া ইনজুরিতে পড়ায় গ্রুপ হাদারিকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন কোচ। সেই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি বয়সে বড় কোনো ইভেন্টে মাঠে নামার রেকর্ডটা নিজের করে নেন। তারপর থেকেই জাদুকরি পারফরম্যান্স দিয়েই যাচ্ছেন হাদারি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, হাদারির মেয়ের বয়স দলের তরুণ ফুটবলারদের বয়সের প্রায় সমান! হাদারি অবশ্য ব্যাপারটায় মজাই পাচ্ছেন, “তরুণদের সাথে খেলার অন্যরকম একটা আনন্দ আছে! আমি কখনোই নিজেকে বুড়ো ভাবি না। আমি দলের সবাইকে আমাদের অতীতের গল্প শুনাই, কীভাবে আমরা ট্রফি জিতেছি। তাঁরা সবাই দুর্দান্ত ফুটবলার। আমি তাঁদেরকে ছোট ভাইয়ের মতোই দেখি।”
১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো এই শিরোপা জিতেছিলেন। এবার কী শেষবারের মতো ট্রফিটা হাতে নিয়ে বিদায় জানাতে পারবেন ফুটবলকে?