গল মিলিয়ে দিল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কাকে
ইতিহাস, পরিসংখ্যান সবকিছুই শ্রীলঙ্কার পক্ষে। গল মানেই শ্রীলঙ্কার জন্য পয়া ভেন্যু, এখন পর্যন্ত ২৮টি ম্যাচের মাত্র ছয়টি ম্যাচে হেরেছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এই গলেই প্রথমবার প্রায় খর্বশক্তির দল নিয়ে ড্র করে এসেছিল। এবার তার চেয়ে ভালো কিছু না হোক, সেই ফলের পুনরাবৃত্তি কি করতে পারবে?
আর কদিন পরেই এই প্রশ্নের জবাব মিলবে। তবে সিরিজ শুরুর আগেই মুশফিক যেমন বলে গিয়েছিলেন, এর চেয়ে শক্তিশালী দল নিয়ে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ আর কখনোই যায়নি। ২০১৩ সালে সর্বশেষ সফরেই তো গলে চোটজর্জর এক দল নিয়ে নামতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এই দলের মাত্র তিনজন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ আর মুমিনুল হক ছিলেন ওই টেস্টে। বলতে গেলে গলের মাঠ তাই সবার কাছেই অচেনা।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, সাব্বির, সৌম্যদের অভিষেক না হয় খুব বেশিদিন হয়নি। মুস্তাফিজ, মিরাজরাও টেস্টে নতুন। কিন্তু তামিম আর সাকিব কেন ওই টেস্টে ছিলেন না? সাকিব শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ওই সিরিজের পুরোটাই পেশির চোটের জন্য খেলতে পারেননি। তামিমও কবজিতে চোট পেয়ে গল টেস্টের ঠিক আগে ছিটকে পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত জহুরুল হক ও এনামুল হক বিজয়ই বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসের শুরু করেছিলেন। মোহাম্মদ আশরাফুল তো ওই টেস্টের পর শুধু জিম্বাবুয়ের সঙ্গে দুইটি টেস্টে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। নাসির হোসেনও অনেক দিন ধরেই টেস্ট দলের বাইরে। শাহাদাত হোসেনও অনেক দিন ধরেই টেস্ট দল থেকে নির্বাসিত। আবুল হাসানও ওই সিরিজেই সর্বশেষ সাদা পোশাকে দেশের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। আর ইলিয়াস সানি তো ওই গল টেস্টের পর আর টেস্ট খেলারই সুযোগ পাননি।
কী অদ্ভুত, বাংলাদেশের সঙ্গে এখানে একই সমতলে মিলে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কাও। বাংলাদেশের মতো ওই গল টেস্টের শ্রীলঙ্কার দলের মাত্র তিন জনই আছেন এবার। রঙ্গনা হেরাথ তো অধিনায়ক হিসেবে আছেনই, দিমুথ করুনারত্নে ও দীনেশ চান্ডিমালই শুধু আছেন এই দলে। সাঙ্গাকারা, দিলশানরা অনেক আগেই অবসর নিয়ে নিয়েছেন, ভিতানাগে, এরাঙ্গা, মেন্ডিসরাও ডাক পাননি এবারের দলে।
এক হেরাথকে বাদ দিলেও অভিজ্ঞতার পাল্লাটা তাই বাংলাদেশের দিকেই ভারি। হেরাথের (৭৮) পর এই দলে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে দিমুথ করুনারত্নে। বাংলাদেশের মুশফিক (৫২), সাকিব (৪৭), তামিম (৪৭) এর চেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন। এমনকি মুমিনুল, মাহমুদুল্লাহও আরেকটি নিয়মিত খেলতে পারলে ছাড়িয়ে যেতে পারতেন চান্ডিমালদের। সর্বশেষ এই গলেই গত আগস্টে খেলেছিলেন শ্রীলঙ্কা, সেই দলেরই চারজন এই সিরিজের স্কোয়াডে নেই। অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস অবশ্য চোটের জন্য বাইরে, এর পরেও পালাবদলের ভেতর দিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে এসেছে আরও বেশ কিছু নতুন মুখ।
“নতুন” শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে আগের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির আশা বাংলাদেশ দল তাই করতেই পারে!