• " />

     

    মেসি-সুয়ারেজে বার্নাব্যুতে বার্সার তিনে তিন

    মেসি-সুয়ারেজে বার্নাব্যুতে বার্সার তিনে তিন    

    গোল করার পর এবার আর জার্সি উঁচিয়ে ধরলেন না। তবে দুই হাত উঁচু করে যে ভঙ্গি করলেন, তার একটাই অর্থ, বার্নাব্যু এখন যেন বার্সেলোনারই রাজত্ব। লিগে টানা তিন ক্লাসিকোতে রিয়ালের মাঠে এসে তাদেরকেই হারিয়ে গেল বার্সেলোনা, লিওনেল মেসি তো অমন দাবি করতেই পারেন! ৩-০ গোলে এল ক্লাসিকো জিতে এখন বার্সেলোনা শিরোপাস্বপ্নে বিভোর হতেই পারে। এর মধ্যেই দুই দলের পয়েন্ট ব্যবধান এখন ১৪, রিয়াল মাদ্রিদের এখান থেকে লা লিগা ধরে রাখতে করতে হবে অবিশ্বাস্য কিছু।

    জিদান এখন নিশ্চয় কানের পাশে আগুনের হলকাটা টের পাচ্ছেন। এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না রিয়ালের, শুরুটাও তো করেছিল সেভাবেই। শুরু থেকেই মদ্রিচ-কোভাচিচ-ক্রুসদের মধ্যমাঠ রাজত্ব করছিল, মেসিকে তো কোভাচিচ প্রথমার্ধে একরকম বোতলবন্দি করেই রেখেছিলেন। ১১ মিনিটে বক্সের ভেতর সহজ একটা সুযোগ পেয়ে যান রোনালদো। কিন্তু কীভাবে যেন বলের আগেই পা চলে যায় তাঁর। অন্য দিন হলে এমন শটের ১০টির নয়টিই হয়তো গোল হতো। কিন্তু আজ যে দিনটা তাঁর ছিল না!

     

     

    বার্সেলোনার প্রথম সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩০ মিনিট পর্যন্ত। এবার মেসির পাস থেকে পাওলিনহোর জোরালো শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছেন কেইলর নাভাস। তিন মিনিট পর এবার টের স্টেগেনের খেল দেখানোর পালা, তাঁর দারুণ শট রুখে দিয়েছেন বার্সা গোলরক্ষক। এরপরেই দুই দলই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে সুযোগ পেতে থাকে একের পর এক। পাওলিনহোর হেড ঠেকিয়ে দিয়েছেন নাভাস। উল্টোদিকে মদ্রিচের শট চলে গেছে পোস্টের পাশ ঘেঁষে, বেনজেমার হেড তো পোস্টে আলতো চুমু খেয়ে চলে গেছে বাইরে। প্রথমার্ধ শেষ হয়েছে নিস্ফলাই, কিন্তু উত্তেজনার কোনো কমতি ছিল না।

    বিরতির পরেই যেন হঠাৎ করে করেই খেই হারিয়ে ফেলে রিয়ালের মাঝমাঠ। যে কোভাচিচ প্রথমার্ধে একটাও ভুল পাস দেননি, তিনিই দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে মেসিকে চোখে চোখে রাখতে গিয়ে ভুলটা করে বসেন। একরকম বাধা ছাড়াই রিয়ালের বক্সের কাছাকাছি চলে যান রাকিটিচ, বাঁ দিকে পাস দেন রবার্তোকে, সেখান থেকে বল পান সুয়ারেজ। সেখান থেকে নিচু শটে গোল করতে ভুল করেননি বার্সা স্ট্রাইকার।

    ৬৩ মিনিটেই বার্সা পেয়ে যায় দ্বিতীয় গোল। এবারও মেসির পাস থেকে সুয়ারেজ গোল করেই ফেলেছিলেন, কিন্তু ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ফিরতি বল চলে যাচ্ছিল জালে, হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন কারভাহাল। পেনাল্টি ও কারভাহালকে লাল কার্ড দেখানো ছাড়া উপায় ছিল না রেফারির। মেসিও পেয়ে যান বার্নাব্যুতে নিজের ১৫তম গোল। ন্যু ক্যাম্পের পর বার্নাব্যু আর ভিসেন্তে ক্যালদেরনেই সবচেয়ে বেশি গোল পেয়েছেন মেসি। ক্লাসিকোতে ২৫তম গোলও হয়ে গেল তাঁর।

    দশজনের দল নিয়েও রিয়াল চেষ্টা করেছিল। গ্যারেথ বেল নেমে সুযোগও পেয়েছিলেন, তাঁর শট ঠেকিয়ে দেন টের স্টেগেন। শেষদিকে মেসির পাস থেকেই নাভাসের ভুলে তৃতীয় গোল পেয়ে যান অ্যালেক্স ভিদাল। বার্নাব্যুতে তখন অনেকটাই শ্মশানের নীরবতা, বার্সার সমর্থকদের জয়ধ্বনিই যা একটু শোনা যাচ্ছিল। বার্সার জন্য সেটি তো আজ শিরোপা-সংগীতই হয়ে গেছে!