• ত্রিদেশীয় সিরিজ
  • " />

     

    পেরেরা হুমকি কাটিয়ে জিতল জিম্বাবুয়ে

    পেরেরা হুমকি কাটিয়ে জিতল জিম্বাবুয়ে    

    জিম্বাবুয়ে ২৯০/৬

    শ্রীলঙ্কা ২৭৮

    জিম্বাবুয়ে ১২ রানে জয়ী 


    হাম্বানটোটা থেকে মিরপুর। শ্রীলঙ্কাকে টানা দুই ম্যাচ হারিয়ে সিরিজ জেতার পর ত্রিদেশীয় সিরিজে এসে আবার জিতেছে জিম্বাবুয়ে। সিকান্দার রাজা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজার ফিফটিতে ২৯০ রান তোলা জিম্বাবুয়ে চাতারা-জারভিসের বোলিংয়ে  কাটিয়ে উঠেছে থিসারা পেরেরার হুমকি। ৩৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৬৪ রানের ইনিংসের পরও দলকে জেতাতে পারেননি ৭ নম্বরের নামা পেরেরা।  

    আগের ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে রীতিমতো নাকানিচুবানি খাওয়া জিম্বাবুয়ে আজ যেন বদলে গেল পুরোদস্তুর। কে বলে, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না! ইতিহাসই বলছে, জিম্বাবুয়ে টানা তিন ম্যাচ হারালো জিম্বাবুয়ে, দুই ও তিন নম্বর ম্যাচে মাঝে যেখানে প্রায় মাস ছয়েকের ব্যবধান! 

    জিম্বাবুয়ে প্রথমে বদলালো ব্যাটিংয়ে। বাংলাদেশের সঙ্গে ১৭০ রানেই গুটিয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলেছে ৬ উইকেটে ২৯০ রান। থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে না দিলে স্কোরটা বড় হতে পারতো আরও। আগেরদিনের মতোই টসে হেরে ব্যাটিং জিম্বাবুয়ে। তবে নিরবিচ্ছিন্ন উইকেট পড়লো না আজ। ওপেনিং জুটিতে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সলোমন মিরের ৭৫ রান। ৩৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংসের ধরনটা যেন পছন্দ হচ্ছিল না মিরের, থিসারা পেরেরাকে তেঁড়েফুঁড়ে পুল করতে গিয়ে বল তুললেন শর্ট মিডউইকেটেই। জিম্বাবুয়ের জন্য দিনটা বদলালেও ক্রেইগ এরভিন অবশ্য রয়ে গেলেন আগের দিনের মেজাজেই- এলেন, ৯ বল খেলে লাকমালের বলে বাধ্য হলেন স্লিপে ক্যাচ দিতে, গেলেন।

    শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আগের ইনিংসে মাসাকাদজা করেছিলেন ৭৩, আজও তাই। স্পিনে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে পায়ের ব্যবহার করেছেন দারুণ। ১০টি চার মেরেছেন, আউট হয়েছেন আলগা শট খেলতে গিয়ে, আসেলা গুণারত্নের বলে। টেইলরের অবশ্য কিছু করার ছিল না, পেরেরার নিচু হওয়া বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ৩৮ রান। আকিলা দনঞ্জয়ার বলে এর আগে তাকে এলবিডাব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার শরাফউদ্দৌলা, বটম-এজটা প্রমাণ হয়েছে রিভিউ নেওয়াতে। 

    ফর্মটা এ ম্যাচেও ধরে রেখেছেন সিকান্দার রাজা, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৮১ রানের। ম্যালকম ওয়ালারের সঙ্গে জুটিতে ৫৭ রানের পর পিটার মুরের সঙ্গে যোগ করেছেন ৬১ রান। 
    সুরাঙ্গা লাকমালের সঙ্গে স্পিনার আকিলা দনঞ্জয়াকে দিয়ে বোলিং ওপেন করিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তবে পুরোদস্তুর পেসার বা স্পিনার নন- শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার একজন ‘প্রায়’ স্লো মিডিয়াম পেসার। আসেলা গুনারত্নে ৭ ওভারে ৩৭ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। 

    লক্ষ্য ২৯১ রান, কুশাল পেরেরার সঙ্গে শট খেলতে অতি উৎসাহি উপুল থারাঙ্গা মিড-অনে ক্যাচ দিলেন কাইল জারভিসের বলে। কুশাল মেন্ডিস অনুসরণ করলেন তাকে, পার্থক্য শুধু এবার বোলার চাতারা। অফ-ফর্ম চলছেই তার। ১ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা। 

    পেরেরা-ম্যাথিউসের ৮৫ রানের জুটি ভাঙলো মুজারাবনির দারুণ ক্যাচে, রাজাকে সুইপ করতে গিয়েছিলেন এর আগে দুইবার জীবন পাওয়া পেরেরা। ম্যাথিউস-চান্ডিমালের জুটি খুব বড় হলো না, এবার দারুণ ক্যাচ রাজার। বোলার আবার মুজারাবানি, তার অতিরিক্ত বাউন্সে পুলটা ঠিক যুতসই হয়নি ম্যাথিউসের। গুণারত্নের সঙ্গে ২৪ রানের জুটির পুরোটাই চান্ডিমালের। জারভিসের নীচু হওয়া বলে হলেন বোল্ড, বেইলস কখন পড়েছে সেটা দেখতে যেতে হলো টিভি আম্পায়ার পর্যন্ত। 

    আসেলা গুণারত্নে ক্রেমারের লেগস্পিনে স্টাম্পড, জিম্বাবুয়ের তখনও দরকার ৯৭ রান। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ক্যাচ দিলেন ক্রেমারের বলে, তবে সে ওভারে জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক দিলেন ১৭ রান। এর আগের ওভারেই তিনি দিয়েছিলেন ১৬ রান। 

    এরপর শ্রীলঙ্কার দুইটি উইকেট, দুইবারই নো-বল দেখতে টিভি আম্পায়ার হাজির। আকিলা দনঞ্জয়ার ক্যাচ দুইবারের চেষ্টায় নিলেন ক্রেমার, বোলার চাতারার পা অল্পের জন্য ছিল পপিং ক্রিজের ভেতরে। এরপর সবচেয়ে বড় উইকেট, থিসারার পেরেরা ওই চাতারারই ফুলটসে মিড-উইকেটে দিলেন ক্যাচ! 

    সে ক্যাচ শুধু আরেকটা ক্যাচকে পথ দেখিয়ে জয়ের উল্লাসে ভেসে যাওয়ার উপলক্ষ্যটাই এনে দিয়েছে জিম্বাবুয়েকে!