• " />

     

    পোর্ট এলিজাবেথে 'মুখ ও মুখোশ'

    পোর্ট এলিজাবেথে 'মুখ ও মুখোশ'    

    টেস্ট শুরুর আগেই ছবিটা দেখা গিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু সমর্থক মুখোশ বানাচ্ছেন পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের জন্য। সেই মুখোশই এখন আলোচনায়, সেই মুখোশের কারণেই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা।

    মুখোশের মুখচ্ছবিটা সনি বিল উইলিয়ামসের। নিউজিল্যান্ডের এই রাগবি খেলোয়াড় ও হেভিওয়েট বক্সার হঠাৎ কেন আফ্রিকান সমর্থকদের নজরে? এখানে যোগসূত্র আছে ডেভিড ওয়ার্নারের। কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন প্রথম টেস্টে, আফ্রিকান সমর্থকরা তাকে খেপিয়ে দিতেই এনেছেন এমন মুখোশ। এখানে অবশ্য ওয়ার্নারের চেয়ে যোগসূত্রটা বরং সরাসরি তার স্ত্রী ক্যানডিস ফ্যালজনের। ২০০৭ সালে উইলিয়ামসের সঙ্গে সিডনির এক পানশালায় এক কান্ডে এসেছিল ক্যানডিসের নাম, ওয়ার্নারের সঙ্গে তার পরিচয় হওয়ার আগে। 

    এই ক্যানডিসকে নিয়েই ডি কক ‘নিচ ও জঘন্য’ মন্তব্য করেছিলেন বলে ক্ষেপে গিয়েছিলেন ওয়ার্নার। কিংসমিডে ড্রেসিংরুমের সিঁড়িতে উত্তেজিত ওয়ার্নারকে থামাচ্ছেন তার সতীর্থরা- এমন ফুটেজও বের হয়েছে আগেই। এমন আচরণে তিনটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছেন ওয়ার্নার আইসিসির কাছে, সঙ্গে গুণেছেন জরিমানাও। শাস্তি পেয়েছেন ডি ককও। 

    ওয়ার্নারকে খেপিয়ে দেওয়ার চেষ্টারত উইলিয়ামসের মুখোশধারী তিনজন সমর্থকদের সঙ্গে ছবি তুলেই ‘ফেঁসে’ গেছেন ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার দুই কর্মকর্তা। ক্লাইভ একস্টিন ও আলতাফ কাজী নামের ওই দুই কর্মকর্তা দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন সেই সমর্থকদের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন, সামাজিক মাধ্যমে সেটা ভেসে বেড়ানোর পর তা নিয়ে সংবাদ করেছে সিডনি মর্নিং হেরাল্ড। এমন ছবিতে অস্ট্রেলিয়া দল ‘ক্ষুব্ধ’ বলেও জানিয়েছে তারা। 

    ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা ক্ষমা চেয়ে বলছে, তারা তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালিয়ে যাবেন। ‘ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে আমি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড, এর কর্মকর্তা, টিম ম্যানেজমেন্ট, ক্রিকেটার ও তাদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি’, বলেছেন ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ক্রিস নেনজানি। 

    প্রথমে এই মুখোশওয়ালা সমর্থকগোষ্ঠিকে আটকে দেওয়া হয়েছিলেন স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখে। কাজি সেটা বলেছেন ‘ভুল বুঝাবুঝি’, এরপরই তিনি ও একসটিন সমর্থকদের সঙ্গে সেখানে দেখা করতে যান। সেখানেই তাদেরকে ঢুকতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবং তাদের অনুরোধেই সেখানে তারা ছবিটি তুলেছেন বলে জানিয়েছেন কাজি। পরে ইএসপিএনক্রিকইনফোকে তিনি বলেছেন, এটা ছিল তার নেওয়া সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্তগুলোর একটি।

    সমর্থকদের এমন কান্ডে অবশ্য বেশ চটেছেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা। টেলফোর্ড ভাইস বলেছেন, ‘তারা পুরুষদের অবমাননা করেছে। তারা ক্রিকেট অনুসারিদের অবমাননা করেছে। তারা দক্ষিণ আফ্রিকানদের অবমাননা করেছে। তারা মানব সম্প্রদায়কেই অবমাননা করেছে।’  

    জিমি মাহের বলছেন, ‘এটা খুবই অদ্ভুত যে এমন কাজকারবারকে চালিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে। এটা এখন খুবই ব্যক্তিগত ব্যাপার হয়ে গেছে, এটা থামানো প্রয়োজন।’ 

    তবে সিএসএ-র দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সিএসএ সমর্থকদের মত প্রকাশের অধিকারকে সম্মান করে, কিন্তু তাদের কর্মকান্ডের সঙ্গে সিএসএ জড়িত নয়। সকল প্রোটিয়া সমর্থককে এই খেলা ও এর সমর্থকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে এমন কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে তাড়না দিচ্ছে।’