• নিদাহাস ট্রফি ২০১৮
  • " />

     

    শার্দুলদের দেখানো পথে পান্ডেদের লঙ্কাবধ

    শার্দুলদের দেখানো পথে পান্ডেদের লঙ্কাবধ    

    শ্রীলঙ্কা ১৫২/৯, ২০ ওভার (মেন্ডিস ৫৫, থারাঙ্গা ২২, ঠাকুর ৪/২৭)

    ভারত ১৭.৩ ওভারে ১৫৩/৪ (পান্ডে ৪২*, কার্তিক ৩৯*, দনঞ্জয়া ২/১৯)


    ৯ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে জয়, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের জয়টা হেসেখেলেই বলা উচিত। সেটা অবশ্য ঠিক বলা যাচ্ছে না। ৮৫ রানে ভারতের ৪ উইকেট ফেলে দিয়ে ম্যাচে ফেরার একটা সম্ভাবনা শ্রীলঙ্কা জাগিয়েছিলই। কিন্তু মনীশ পান্ডে ও দীনেশ কার্তিক ঠাণ্ডা মাথায় এনে দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচ হারের পর টানা দুই ম্যাচ জিতে ভারতই এখন ফাইনালের সবচেয়ে কাছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দুই দলের পয়েন্ট এখন সমান, বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে একটি কম। 

    আগের দিনের মতো এতোটা ব্যাটিং স্বর্গ ছিল না আজ। বল ভালোই ধরছিল, সেই সুবিধা নিয়েই আকিলা দনঞ্জয়া শুরুতে বেশ ভোগাচ্ছিলেন ভারতকে। শুরুটা করেছিলেন রোহিতকে দিয়ে, ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসেও দনঞ্জয়ার বলে শটের জায়গা বানাতে পারেননি রোহিত শর্মা, মিড-অনকে দিয়েছেন সোজা ক্যাচ। ২১, ০, ১১, ০, ১৭, ১১- রোহিত বাজে ফর্মের চক্র থেকে বেরুতেই পারছেন না। দনঞ্জয়ার পরের ওভারে রোহিতকে অনুসরণ করলেন ধাওয়ানও, পার্থক্য বলতে- তিনি খেলতে চেয়েছিলেন ফ্লিকের মতো শট। ২২ রানের মধ্যেই নেই ভারতের দুই উইকেট।

    দনঞ্জয়া হুমকি সামলিয়ে টিকে ছিলেন রায়না, তবে প্রদীপকে ছয় মারার পরের বলে জায়গা বানিয়ে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন পেরেরার হাতে, ১৫ বলে ২৭ রান করে। ৬২ রানে গেল আরেকটি উইকেট। লোকেশ রাহুল খুব স্বচ্ছন্দ ছিলেন না, একবার তো রান আউট হয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক কাঁটাছেঁড়ার পর আম্পায়ার দিয়েছেন বেনিফিট অব ডাউট। সুবিধাটা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি রাহুল, এক বল পরেই হয়ে গেছেন হিট আউট।

    তখনও ভারতের জয়ের জন্য দরকার ৬৮ রান, বাকি ৯.১ ওভার। সেখান থেকেই কাজটা সহজ বানিয়ে দিলেন কার্তিক-পান্ডে। ৩১ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত পান্ডে, ২৫ বলে ৩৯ রান করে ম্যাচ শেষ করেছেন কার্তিক।

    তার আগে ভারতকে জয়ের ভিত এনে দিয়েছেন বোলাররাই। শুরুতে শ্রীলঙ্কার ১০ ওভারে ৯৪ রান, ২ উইকেট। এরপরই ভারতীয় বোলারদের দারুণভাবে ফিরে আসা- শেষ ৯ ওভারে তারা দিলেন মাত্র ৫৮ রান, বিপরীতে শ্রীলঙ্কার নেই ৭ উইকেট। কুশাল মেন্ডিসের ৫ ইনিংসে ৪র্থ ফিফটির পরও তাই ১৫২ রানেই আটকে গেছে শ্রীলঙ্কা। শারদুল ঠাকুর নিয়েছেন ২৭ রানে ৪ উইকেট, ৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং ফিগার তার।

    শুরুতে গুণাথিলাকা রীতিমতো উড়ছিলেন, তবে তার চেয়েও বেশি উড়ে মিডউইকেটে রায়না নিলেন ‘স্ক্রিমার’। শারদুল ঠাকুরের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে তিনি করেছেন ৮ বলে ১৭। সুন্দরকে রিভার্স সুইপের চেষ্টায় পায়ে লেগে বোল্ড হয়েছেন কুশাল পেরেরা, আগের দুই ম্যাচেই ফিফটি করার পর এবার করেছেন মাত্র ৪ রান।

    মেন্ডিস ছিলেন, ২৪ বলে ২২ রান করা থারাঙ্গাও সঙ্গ দিচ্ছিলেন শংকরকে লাইন ছেড়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হওয়ার আগ পর্যন্ত। এরপর অতি আক্রমণাত্মক ছিলেন থিসারা পেরেরা, তার ৬ বলে ১৫ রানের ক্যামিও শেষ হয়েছে ঠাকুরের বলে আকাশে বল তুলে। বড় শট খেলতে গিয়ে সুন্দরের বলে বোল্ড জীভান মেন্ডিস, ১ রানেই। তিন ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে সেই যে চাপে পড়লো শ্রীলঙ্কা, আর বের হতেই পারলো না সেখান থেকে। চাহালের শর্ট অব আ লেংথের বলে টেনে মারতে গিয়ে কাভারে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন এরপর মেন্ডিস।

    ১৮তম ওভারে উনাডকটের স্লোয়ারে ধরা খেয়েছেন দনঞ্জয়া। এরপর আবার ঠাকুর-ঝলক। তার নাকলবলে উইকেটের পেছনে কার্তিককে ক্যাচ দিয়েছেন শনাকা, তার আগের বলেই তার বিরুদ্ধে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের ভারতের আবেদন নাকচ করেছিলেন আম্পায়াররা। শর্ট থার্ডম্যানে এরপর উনাডকটের দারুণ ক্যাচে চামিরার উইকেটে ঠাকুর দাঁড়িয়ে গেলেন উইকেটের সামনে। শেষ বলটাও নাকলবলই ছিল, তবে লাকমাল কোনো রকমে ব্যাটে লাগিয়ে বেঁচেছেন। ২৭ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার জন্য শার্দুলই ম্যাচসেরা।