• দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    বল টেম্পারিংয়ের দায় স্বীকার করলেন ব্যানক্রফট-স্মিথ

    বল টেম্পারিংয়ের দায় স্বীকার করলেন ব্যানক্রফট-স্মিথ    

     

    কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ স্বীকার করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ব্যানক্রফট। এ ঘটনায় যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথও। 

    ‘ম্যাচ অফিশিয়ালদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, বলের কন্ডিশন বদলানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে আমাকে’, সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ব্যানক্রফট, ‘লাঞ্চ ব্রেকে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল, আমি কিছু টেপ ব্যবহারের সুযোগ দেখেছিলাম, উইকেটের অমসৃণ অংশ থেকে কিছু দানা নিয়ে বলের কন্ডিশন বদলানো ছিল উদ্দেশ্য। তবে এটা কাজ করেনি, আম্পায়াররা বল বদলাননি। মাঠের বড় পর্দায় (আমার এই কাজ) দেখানো হয়েছে, ফলে ট্রাউজারসের ভেতর এটি ঢুকিয়ে দিতে হয়েছে।’ 

    আর স্টিভ স্মিথ বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বস্থানীয় গ্রুপ এটি জানতেন, ‘তারা এটি জানতো। আমরা লাঞ্চে এটি নিয়ে কথা বলেছি। তবে যা হয়েছে, সেটা নিয়ে আমি গর্বিত নই। এটা খেলার চেতনা-বহির্ভূত। আমার সততা, দলের সততা, নেতৃত্বের সততা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। এটা পুনরায় হবে না।’ 


     

    মূলত রিভার্স সুইং পাওয়ার উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্মিথ, ‘এটা খুবই বাজে সিদ্ধান্ত ছিল, যেটা এসেছে নেতৃত্বের সঙ্গে যুক্ত গ্রুপ থেকে। কোচরা যুক্ত ছিলেন না। আমার নেতৃত্বে এটা প্রথমবার হলো। আমরা এটাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হিসেবে দেখেছি। সিরিজজুড়েই রিভার্স সুইং হতে দেখেছি, তবে এই বলে তেমন হবে বলে মনে হচ্ছিল না। এটা খুবই বাজে কাজ। খুবই অনুতাপের কাজ, আমি আপনাদের সামনে প্রতিজ্ঞা করতে পারি, এমন আর হবে না। আমি এটাও প্রতিজ্ঞা করে বলতে পারি, এমন ঘটনা এই প্রথমবার হলো।’ 

    ‘আমি লজ্জিত। আমি জানি অন্য ছেলেরাও লজ্জিত। নেতা হিসেবে আমি খুবই দুঃখিত। যদি নাও ধরা পড়তাম, তবুও এটা নিয়ে অনুতাপ হতো।’ 

    ‘আমি অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করার কথা ভাববো না। আমি মনে করি, এই কাজের জন্য আমিই সঠিক ব্যক্তি। আমার অংশ থেকে আজ বড় একটা ভুল হয়ে গেছে, আমার জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। এটা নিয়ে আমি গর্বিত নই। এটা এমন কিছু, যা থেকে আমি শিখতে পারি, এখান থেকে ফিরে আসতে পারি। আমি লজ্জিত। এটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় একটা ভুল।’ 

    ঘটনার সূত্রপাত দ্বিতীয় সেশনে, টিভি ক্যামেরায় ব্যানক্রফট ধরা পড়েছিলেন এক ‘বহিরাগত’ বস্তু সহ, যেটা তিনি বলের ওপর কাজে লাগিয়েছেন, এরপর পকেট থেকে বের করে সেটা জমা করেছেন নিজের ট্রাউজারসের ভেতর। আম্পায়াররা তাকে ডেকে কথাও বলছিলেন আলাদা করে, তবে কোনও অ্যাকশন নেননি সে সময়। 

    ব্যানক্রফট বলের ‘রাফ সাইড’ নিয়ে কাজ করছিলেন, যদিও স্বাভাবিক নিয়মে তার পুরো উল্টোদিক নিয়ে কাজ করার কথা! অতিরিক্ত ফিল্ডার পিটার হ্যান্ডসকম্বের সঙ্গে কথা বলার পরই সেই হলুদ রঙের বস্তুটা লুকিয়ে ফেলেছিলেন ব্যানক্রফট। হ্যান্ডসকম্ব আবার ওয়াকি-টকিতে কথা বলছিলেন কোচ লেম্যানের সঙ্গে- টিভি ফুটেজে মনে হচ্ছিল এমনই। 

    আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলার সময় নিজের পকেট থেকে কালো রঙের একটা রুমাল বের করে দেখাচ্ছিলেন ব্যানক্রফট। ধারাভাষ্যে সবাই বলছিলেন, ব্যানক্রফটের গতিবিধি সন্দেহজনক। অ্যালান বোর্ডার বলেছেন, ‘যদি ভুল কিছু করতে গিয়ে ধরা পড়েন, আপনাকে সাজা পেতে হবে।’ 

    সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ বলেছেন, ‘আমার মতে সে বল টেম্পারিং করেছে। এজন্য আলাদা একটা বস্তুও ব্যবহার করেছে। যদি ফুটেজ সঠিক হয়, তাহলে স্টিভ স্মিথ ও ড্যারেন লেম্যানের অনেক প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আছে।’
    তবে শেন ওয়ার্ন তখনোই জানিয়েছিলেন, ‘আপনাকে এগিয়ে এসে বলতে হবে, আপনি কি লুকাচ্ছিলেন। আপনি ম্যাচে এরকম কিছু ব্যবহার করতে পারেন না। অজিদের সৎ থাকতে হবে, এবং বলতে হবে, “এভাবে এটা হয়েছে”। আমার কারও সঙ্গে কোনও কিছু নেই, কিন্তু তারা যদি মিন্ট বা চিউয়িং গাম ব্যবহার করতো, তাহলেও হতো, সেগুলো প্রাকৃতিক নির্যাস।’ 

    ‘কিন্তু বাইরে থেকে কিছু এনে যদি বল টেম্পারিং করেন, তাহলে এটা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। এটার গভীরে যেতে হবে। আর ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে শূলে চড়িয়ে লাভ নেই। আমার মনে হয় না, সে নিজে থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের এর গভীরে যেতে হবে। আপনি জানেন, ধরা পড়লে আপনাকে সততার সঙ্গে জবাব দিতে হবে, কিভাবে কী হয়েছিল। অজিদের এখন এটাই করতে হবে।’