• দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    শুরু-শেষের হিসাব ছাপিয়ে জোহানেসবার্গে মার্করামের দিন

    শুরু-শেষের হিসাব ছাপিয়ে জোহানেসবার্গে মার্করামের দিন    

    জোহানেসবার্গ টেস্ট, প্রথম দিনশেষে 
    দক্ষিণ আফ্রিকা ৩১৩/৬* (মার্করাম ১৫২, ডি ভিলিয়ার্স ৬৯, কামিন্স ৩/৫৩, সেয়ার্স ২/৬৪)


    মরনি মরকেলের শেষ টেস্ট, তার এই ঘোষণার সঙ্গে অবশ্য কেপটাউনে বল টেম্পারিং ডামাডোলের সম্পর্ক নেই। অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে শেষ টেস্ট ড্যারেন লেম্যানের, স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট টিম পেইনের- এই দুইটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কেপটাউনের ওই ঘটনা।

    আর প্রথম টেস্ট চ্যাড সেয়ার্সের, অস্ট্রেলীয় হয়েও তার সঙ্গে সম্পর্ক নেই কেপটাউনের, তিনি দলে এসেছেন চোটে ছিটকে যাওয়া মিচেল স্টার্কের জায়গায়। প্রায় ৩১ বছর বয়সে অভিষেক হলো এই সাউথ অস্ট্রেলিয়ান পেসারের, ক্যারিয়ারের মতো জোহানেসবার্গ টেস্টের প্রথমদিনের শেষবেলায় এসেও হাসলেন তিনিই। এক ওভারেই থিতু হওয়া এবি ডি ভিলিয়ার্স ও নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা কাগিসো রাবাদাকে ফিরিয়ে যেন নতুন এক অস্ট্রেলীয় দিনের ইঙ্গিত দিলেন। 

    তবে সবকিছুর পর পুরো সিরিজে মাঠ ও মাঠ-বহির্ভূত ঘটনার উল্টোদিকে থাকার মতো এদিনও ভাল অবস্থানেই আছে দক্ষিণ আফ্রিকা, তাদের ৬ উইকেটে ৩১৩ রানের স্কোরে অনেক বড় অবদান এইডেন মার্করামের দারুণ এক ইনিংসের, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম ‘ড্যাডি’ সেঞ্চুরি। 

    অস্ট্রেলিয়া দলে তিনটি পরিবর্তন নিশ্চিতই ছিল, আরেকটা পরিবর্তন ওই স্টার্ক-সেয়ার্সেরই। জোহানেসবার্গে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম উইকেট নিতে ১৮তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে 'বিধ্বস্ত' অস্ট্রেলিয়াকে, ন্যাথান লায়নকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন ডিন এলগার। লাঞ্চের আগে অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র সাফল্য সেটিই। 

    হাশিম আমলাকে নিয়ে ৯১ রানের জুটি গড়েছেন মার্করাম, যেটা শেষ হয়েছে স্লিপে পিটার হ্যান্ডসকম্বের দারুণ এক উড়ন্ত ক্যাচে। প্যাট কামিন্সের বলে আগবাড়িয়ে ড্রাইভের চেষ্টা করেছিলেন আমলা। আমলা মূলত সহকারি হিসেবেই ছিলেন সে জুটিতে, সব দায়িত্ব যেন একাই নিয়েছিলেন মার্করাম। 

    চা-বিরতির আগেই লায়নকে লেগসাইডে খেলে সিরিজে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন এই ডানহাতি ওপেনার। পুরো ইনিংসেই ছিলেন অস্ট্রেলীয় বোলারদের ভুলের অপেক্ষায়, তারা যেই লাইন-লেংথে গড়বড় করেছেন, মার্করাম সুযোগ নিতে ভুল করেননি সেসবের। ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে লং-অন, মার্করাম রীতিমতো শাসন করেছেন এসব অঞ্চল। স্ট্রেইট ড্রাইভে ছিলেন অসাধারণ। 

    চা-বিরতির পর হয়েছে তার ১৫০, ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে জুটিতেও আধিপত্য ছিল তারই। কামিন্সের ব্যাক অব আ লেংথের বলে আলতো করে গালিতে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন মার্শের হাতে, ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে জুটিতে এসেছে ১০৫ রান। প্রথম বলেই ডাক খেয়ে ফিরেছেন অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসি, কামিন্সের বলে ছাড়বেন না খেলবেন অবস্থাতেই ফাঁদে পড়েছেন এলবিডাব্লিউর। 

    টেমবা বাভুমার সঙ্গে জুটিতে এরপর একই রানে দুই উইকেট হারানোর চাপটা আলগা করছিলেন ডি ভিলিয়ার্স, তবে জোড়ায় জোড়ায় উইকেটের পুনরাবৃত্তি হলো আবার। ২৯৯ রানেই দক্ষিণ আফ্রিকা হারিয়ে ফেললো ডি ভিলিয়ার্স ও রাবাদাকে। সেয়ার্সের আলতো সিম মুভমেন্টে ড্রাইভ করতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড ৬৯ রান করা ডি ভিলিয়ার্স, আত্মবিশ্বাসী রিভিউটাও বিফলে গেছে তার। আর রাবাদা বোকা বনেছেন পিচে বল গ্রিপ করায়, দেরিতে ওঠা বলে আগেই ‘চেক’ শট খেলতে গিয়ে মিড-অফে ক্যাচ দিয়েছেন ম্যাট রেনশর হাতে। 

    সে ক্যাচটা বাঁদিয়ে শরীর এলিয়ে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আম্পায়ারের হাতে তুলে দিলেন রেনশ, খুবই পরিষ্কারভাবে। সুপারস্পোর্টের অনেক ক্যামেরার সামনেই। 

    এই বল, আর এইসব ক্যামেরার সামনে লুকোচুরি নিয়েই না কতকিছু হলো এই কয়েকদিন!