• দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    ছিন্ন-ভিন্ন অস্ট্রেলিয়াকে চোখ রাঙাচ্ছে ফলো-অন

    ছিন্ন-ভিন্ন অস্ট্রেলিয়াকে চোখ রাঙাচ্ছে ফলো-অন    

    জোহানেসবার্গ টেস্ট, ২য় দিনশেষে 
    দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস ৪৮৮ (মার্করাম ১৫২, বাভুমা ৯৫*, ডি ভিলিয়ার্স ৬৯, কামিন্স ৫/৮৩, লায়ন ২/১৮৩)
    অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ১১০/৬* (খাওয়াজা ৫৩, শন মার্শ ১৬, ফিল্যান্ডার ৩/১৭) 
    অস্ট্রেলিয়া ইনিংসে ৩৭৮ রানে পিছিয়ে 


    টেমবা বাভুমা হয়তো ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়বেন, তবে দিনশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থানই সে আক্ষেপ ভুলিয়ে দিতে পারে তার। শেষ ৪ উইকেটে ১৭৫ রান যোগ করা দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিংয়েও চেপে ধরেছে অস্ট্রেলিয়াকে, ফলো-অন এড়াতে এখন তাদেরকেও করতে হবে বাভুমাসুলভ কিছু। উইকেট আছে ৪টি, ফলো-অন এড়াতেই প্রয়োজন আরও ১৭৮ রান। ক্রিজে প্যাট কামিন্সের সঙ্গে আছেন অধিনায়ক টিম পেইন, আরেকটি নির্ঘুম রাত হয়তো অপেক্ষা করছে তার জন্য! 

    জোহানেসবার্গে প্রথম দিনশেষে যে আশার আলো দেখেছিল অস্ট্রেলিয়া, আজ বাভুমার অসাধারণ এক ইনিংসে মিলিয়ে গেছে সেটা। সঙ্গে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার লোয়ার অর্ডার। ডি ককের সঙ্গে আগের দিনের অবিচ্ছিন্ন জুটি গেছে ৮৫ রান পর্যন্ত। ন্যাথান লায়নের বলে টপ-এজড হয়ে ৩৯ রানে শেষ হয়েছে ডি ককের ইনিংস। ফিল্যান্ডারের সঙ্গে বাভুমা যোগ করেছেন ২৮ রান, বড় শট খেলতে যাওয়া ফিল্যান্ডার ক্যাচ দিয়েছেন লায়নের বলেই। 

    এরপর অস্ট্রেলিয়ার আরও বড় হতাশার এক আফ্রিকান জুটি, যেখানে ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেছেন কেশভ মহারাজ। দুইজনের জুটিতে এসেছে ৭৬ রান, মহারাজ চারটি চারের সঙ্গে মেরেছেন দুইটি ছয়ও। মহারাজ থাকতেই নড়বড়ে নব্বইয়ে পৌঁছেছেন বাভুমা, যিনি ইনিংসজুড়েই খেলেছেন সব রকমের প্রায় শট- সুইপ, রিভার্স সুইপ, স্কয়ার কাট, ড্রাইভ। কামিন্সের অফস্টাম্পের বাইরের বলে স্ল্যাশ করতে গিয়ে প্রোটিয়া সমর্থকদের আরও নার্ভাস বানিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন মহারাজ। 

    নন-স্ট্রাইকে ৯৫ রানে দাঁড়িয়ে বাভুমা, স্ট্রাইকে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা মরকেল। হয়তো শেষবারই ব্যাটিংয়ে নামলেন, অস্ট্রেলিয়ানরা হাত-তালিতে অভিনন্দনও জানাল তাকে। তবে পরের বলেই বদলে গেল সব, স্টাম্পের দিকে ধেয়ে যাওয়া শর্ট লেংথের বলে ব্যাট লাগানো থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারলেন না মরকেল, স্লিপে দিলেন ক্যাচ। আক্ষেপ ভুলে খানিক বাদেই করতালিতে মুখর হলেন গ্যালারিতে থাকা বাভুমা ‘সিনিয়র’, পুরো ওয়ানডারার্সও করলো সেটাই।  

    মরকেলের উইকেটটা দিয়েই ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করলেন কামিন্স, প্রথমবারও পেয়েছিলেন এই ভেন্যুতেই, ২০১১ সালে নিজের অভিষেক টেস্টে।  

    অস্ট্রেলিয়ার নতুন টপ-অর্ডারের প্রথম পরীক্ষা এরপর, সেটাতে তারা ব্যর্থ পরিষ্কারভাবেই। স্মিথ-ওয়ার্নার-ব্যানক্রফটের জায়গায় আসা ব্যাটসম্যানরা মিলে করেছেন ১২ রান। শুরুটা করেছিলেন অফস্টাম্পের বাইরে নার্ভাস হয়ে পড়া জো বার্নস, রাবাদার আউটসুইং তাড়া করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপ থেকে প্রথম স্লিপে ঝাঁপিয়ে পড়া ডু প্লেসিকে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ৪। ফিল্যান্ডারের বেরিয়ে যাওয়া বলে পেছনে ধরা পড়েছেন ৮ রান করা ম্যাট রেনশ। পিটার হ্যান্ডসকম্বের হতাশাটা তুলনামূলক আরও বেশি, ফিল্যান্ডারের বলে হাত ওপরে তুলে ছেড়ে দেওয়ার পথেই স্টাম্পে বল ডেকে এনেছে তার ব্যাট, শূন্যতেই। 

    মার্শ ভাতৃদ্বয় ফিরেছেন পরপর দুই ওভারে। মহারাজের স্পিনে ধোঁকা খেয়েছেন শন মার্শ, ১৬ রানে, আর তার ভাই মিচেল ৪ রানে মরকেলকে উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে স্টাম্পে ডেকেছেন বল। এই ডামাডোল আর অস্ট্রেলিয়ান ধসের মাঝেই ফিফটি পেয়েছেন উসমান খাওয়াজা, ৯টি চারে বেশ আত্মবিশ্বাসীই ছিলেন। তবে মরকেল-ফিল্যান্ডার মিলে চেপে ধরেছিলেন, খাওয়াজার পরিশ্রম বৃথা গেছে তাতেই। ফিল্যান্ডারের লেগসাইডের বলে ঠেলে খেলতে গিয়ে স্টাম্পের ওপরে আসা ডি ককের দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে করেছেন ৫৩।