সুযোগ এলে 'প্রস্তুত' ইমরুল
সেদিন ড্যান প্যাটারসন হেসেছিলেন। তিন উইকেটের প্রথমটি ছিল ইমরুল কায়েসের। গত বছর বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের শেষ ওয়ানডেতে। এরপর প্যাটারসন বা ইমরুল- ওয়ানডে খেলেননি কেউই।
বাংলাদেশের সঙ্গে সে সিরিজেই প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে ডাক পেয়েছিলেন প্যাটারসন, আর যাওয়া-আসার নিয়ম মেনেই যেন ছিলেন ইমরুল। এরপর দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে সুযোগ হয়নি ইমরুলের, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও না। এমনকি যে টেস্টে বেশ ‘থিতু’ ছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সে ফরম্যাটেও খেলা দেখেছেন মাঠের বাইরে থেকেই।
সামনে এশিয়া কাপ, এরপর জিম্বাবুয়ে সিরিজ। ইমরুল আশা ছাড়ছেন না। যে কোনও মুহুর্তে সুযোগ আসতে পারে, এই ভেবে নিজেকে রাখছেন প্রস্তুত।
“নিজেকে সবসময় প্রস্তুত করে রাখি”, বলছেন ইমরুল, “যখনই জাতীয় দলে সুযোগ পাব তখন সেই সুযোগটাকে কাজে লাগানোর জন্য (নিজেকে) প্রস্তুত রাখা জরুরী। সবসময় নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গেলেও কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই নি। তবে আমি ঈদের ছুটি শুরুর আগ পর্যন্ত অনুশীলন করেছি। মাঝে ঢাকার বাইরে গিয়েছিলাম, চিকিৎসার জন্য। যতদিন আমি এখানে ছিলাম, ততদিন অনুশীলন করেছি।”
সেই অনুশীলনে কোনোই ঘাটতি রাখতে চান না তিনি। মাঝে চোটে ভুগেছেন, নিজের ব্যাটিং টেকনিকও ভুগিয়েছে তাকে। ইমরুল স্বীকার করছেন, ত্রুটি আছে তার। সেটা মেনে নিয়েই চেষ্টা করে যাচ্ছেন, “একটা ক্রিকেটারের দূর্বলতা থাকেই, আমার মনে হয় কমবেশি সবারই ব্যাটিংয়ে ত্রুটি থাকে। এটা সবারই থাকবে।”
ইমরুল প্রেরণা পাচ্ছেন নতুন কোচ স্টিভ রোডসের কাছ থেকেও, “সে আমার ব্যাটিং দেখেছে, ব্যাটিং দেখে ওর ভালো লেগেছে। সে আমাকে বলেছে, ‘তুমি কোয়ালিটি ব্যাটসম্যান, তোমার খেলা আমি এর আগে দেখেছি।’ ইংল্যান্ডে আগে আমার ব্যাটিং দেখেছিল সে। তিনি বলেছেন, ‘তোমার সুযোগ অবশ্যই আসবে। তুমি চেষ্টা কর।’
ইমরুলের ওপেনিং পজিশনে বিশ্বকাপের পর এখনও কেউ থিতু হতে পারেননি তামিমের সঙ্গে। তবে পরিসংখ্যান বলে, রেকর্ডটা তারই সবচেয়ে ভাল। তামিমের সঙ্গী হিসেবে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধই করেন তিনি, সেখানে আরেকটু সময় বেশি চাওয়া তার, “দেখুন, একটানা যদি একটা পজিশনে খেলা যায়, তাহলে সেই পজিশনের জন্য নিজেকে মানিয়ে নেয়া যায়। একটু নড়াচড়া হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। একটু সমস্যা তো হয়ই। সবাই খারাপ খেলবে ভালো খেলবে, এইসব নিয়েই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার। সবাই একই ধারায় থাকে না। হয়তো আমার ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন হয়।”
“আমি চেষ্টা করছি সব সময় নিজেকে প্রস্তুত রাখতে। যতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ইচ্ছা আছে ততদিন নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করব। আর তামিমের সাথে সবসময় খেলতে ভালো লাগে কারণ আমাদের জুটিটা খুব ভালো হয়। আমরা ভাগ্যবান যে আমাদের জুটিতে অনেক বড় বড় রান করেছি আমরা এক সাথে। যদি আবার সুযোগ হয় তাহলে আবার সেই পারফরম্যান্স ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করব।”
সেই পারফরম্যান্স দেখানোর সুযোগটা পাবেন ইমরুল? যদি পান, তবে তার কথামতো তিনি সবসময়ই ‘প্রস্তুত’।