ছয় মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ সাব্বির
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দ্বিতীয় ওয়ানডের পর ফেসবুকে এক ক্রিকেট-সমর্থককে “হুমকি” দেওয়ার সূত্র ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ছয় মাস নিষিদ্ধ হচ্ছেন সাব্বির রহমান। আজ শনিবার বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি সুপারিশ করেছে এমন। আজই এ সুপারিশ অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বিসিবি প্রেসিডেন্টের কাছে। তিনি অনুমোদন করলে শাস্তি শুরু হবে রবিবার থেকেই।
এর আগে জাতীয় লিগে দর্শক পিটিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা ও বিশ লাখ টাকা জরিমানা গুণেছেন সাব্বির। পরে বাদ পড়েছিলেন বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও। সে শাস্তি শেষ না হতেই আরও বড় শাস্তির মুখোমুখি হলেন তিনি। বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ইসমাইল হায়দার বলেছেন, ফেসবুকের এই ব্যাপারে এই শাস্তিকেই যথেষ্ট মনে করছেন তারা। তবে এতেও সাব্বির “নিজেকে শোধরাতে না পারলে আরও বড় শাস্তির মুখোমুখি হবেন তিনি”।
এশিয়া কাপের স্কোয়াড থেকে এর আগেই বাদ পড়েছেন সাব্বির। অভিষেকের পর এই প্রথমবার দল থেকে বাদ পড়লেন তিনি। বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান জানিয়েছিলেন, সাব্বিরের বাদ পড়ার পেছনে প্রভাব আছে তার শৃঙ্খলাজনিত ব্যাপারের।
ফেসবুকের সেই ঘটনার ব্যাপারে সাব্বির ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে বলেছেন, তার অ্যাকাউন্ড হ্যাক করা হয়েছিল। তবে “বাকি ঘটনার ব্যাপারে তিনি অনুতপ্ত।”
হায়দার বলেছেন, “ছয় মাসই অনেক শাস্তি এক্ষেত্রে, ফেসবুকের ওই ঘটনার ব্যাপারে। মূলত ওই ঘটনার কারণেই আজ তাকে ডাকা হয়েছিল। এরই মাঝে সে শাস্তির মাঝে আছে, ঘরোয়া ক্রিকেটে। বাকি (ঘটনার) শাস্তি আগেই দেওয়া হয়েছে। এটা নতুন ঘটনার জন্য।”
এর আগে বেশ মোটা অঙ্কের জরিমানা সহ নিষেধাজ্ঞা, বিসিবির মতে- সব মিলিয়ে যে শাস্তির “আর্থিক পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকার মতো”- পরও সাব্বিরের এমন কান্ডের পেছনে দিক-নির্দেশনার অভাব দেখছেন হায়দার, “আমি বলবো দিক-নির্দেশনার অভাব। পরিবারের কাছ থেকে, যেসব বন্ধু-বান্ধব আছে তাদের কাছ থেকে। (শাস্তির পর) কেউ নিজেকে শুধরে নেয়, কেউ নেয় না। তবে ডিসিপ্লিনের ক্ষেত্রে আমরা ছাড় দেব না।”
সাব্বিরের এমন শাস্তি কোড অব কন্ডাক্ট ভঙ্গের দায়ে হলেও সার্ভিস রুলস অ্যাক্টের অধীনে বলে জানিয়েছেন হায়দার, “এসব সার্ভিস রুলস অ্যাক্টের জন্য। বিসিবির অধীনে যারা খেলেন বা খেলেন না, সেসব বিবেচনায় এনেই শাস্তি দেওয়া হয়।”
সাব্বির ছাড়াও আজ শুনানিতে ডাকা হয়েছিল আরেক ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেনকে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে যৌতুকের অভিযোগে মামলা করেছেন তার স্ত্রী। ব্যাপারটা পারিবারিক এবং আদালতে নিষ্পত্তিযোগ্য বলে তাকে শুধু সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছে ডিসিপ্লিনারি কমিটি। ভবিষ্যতে এসব ঝামেলায় না জড়াতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাকে।
এ শুনানিতে আরেক ক্রিকেটার নাসির হোসেনের আসার কথা বিসিবি প্রেসিডেন্ট এর আগে উল্লেখ করলেও এ কমিটি ডাকেনি তাকে। চোটের কারণে ক্রিকেটের বাইরে আছেন বলে আপাতত তার শাস্তির ব্যাপারে ভাবছে না বিসিবি।
বিসিবির এই ডিসিপ্লিনারি কমিটির প্রধান ছিলেন পরিচালক শেখ সোহেল। হায়দার ছাড়াও এ কমিটিতে ছিলেন প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি।