অনুবাদকের সাহায্যটাই বেশি লাগছে ম্যাকেঞ্জির!
ভাদ্রের কাঠফাটা রোদ্দুরে ম্যাচ খেলছেন মাশরাফিরা। এর মধ্যে একজন ড্রেসিংরুমের সামনে বসে নির্নিমেষ তাকিয়ে রইলেন ম্যাচের দিকে। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান নিল ম্যাকেঞ্জি কালই বাংলাদেশে এসেছেন, আজ প্রথম যোগ দিয়েছেন দলের সঙ্গে। রসিকতা করে বললেন, বাংলাদেশে সবকিছুতেই অনুবাদকের সাহায্য নিতে হচ্ছে, কখনো কখনো একই কথা বার বার বলতে হচ্ছে। আপাতত মুরগিটাই বেশি খাচ্ছেন, হাসতে হাসতে বলে গেলেন সেটিও।
ম্যাকেঞ্জির জন্য বাংলাদেশ নতুন একটা অভিজ্ঞতা। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বেশ কবারই এসেছিলেন এখানে, চট্টগ্রামে একটা ডাবল সেঞ্চুরিও আছে তাঁর। ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে নতুন ভূমিকায় এবারই প্রথম আসা। দুই দেশের ক্রিকেটীয় আবহের পার্থক্য নিয়েও কথা হলো আজ মিরপুরে। ম্যাকেঞ্জি রসিকতা করেই বললেন, ‘অনুবাদকের সাহায্য একটু বেশি লাগছে। একই কথা বার বারও বলতে হচ্ছে।’ তবে পরে সিরিয়াস হয়ে বললেন, ‘সব দেশেই ভালো খারাপ আছে। আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়েছি, আমি সেখানকার এখন অনেক কিছু এই দলে নিয়ে আসার চেষ্টা করব। আমি চেষ্টা করব বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলো আরও বেশি করে কাজে লাগানোর, তাদেরকে আরও ভালো দল হিসেবে তৈরি করার। ব্যাটিং হিসেবে উপমহাদেশে আমরা অনেক বেশি লেগ সাইডেড খেলা খেলি। তবে খেলোয়াড়দের আমার ওপর আস্থা রাখাটা বড় ব্যাপার। যদি আমি নাও থাকি, তারা আমাকে ফোন করতে পারবে, ফুটেজ নিয়ে আলাপ করতে হবে। এখানে আমি নই, খেলোয়াড়দের ভূমিকাই মুখ্য।’
এখনো সেভাবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে দেখতে পারেননি। ম্যাকেঞ্জি বললেন, সেরকম কিছু বলার জন্য সাত-আট মাস সময় দরকার তাঁর। তবে একটা কথা পরিষ্কার করে বললেন, দলের সবার সঙ্গে শজ একটা সম্পর্ক করার জন্যও তাঁর সময় দরকার, ‘দেখুন, আমি আগে পরিস্থিতিটা বোঝার চেষ্টা করছি। আমি কে কেমন মানুষ, সেটা জানার চেষ্টা করছি। যারা বহির্মুখী, তারা নিজ থেকে এসেই সমস্যাটা আপনাকে বলবে। আপনি বুঝতে পারবেন তারা কী চায়। কেউ আউট হওয়ার পর পরেই আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইবে, কেউ আপনার তখন একা থাকতে চাইবে। আমাকে আগে ওই আস্থাটা অর্জন করতে হবে। সবাইকে জানতে হবে। আপনি যখন হেড পজিশন, হাত আর কাঁধ নিয়ে কথা বলবেন, তখন ওদের ভাষাও আপনাকে বুঝতে হবে। সম্পর্কটাও সেই পর্যায়ে যেতে হবে।’
সবকিছু মিলে বাংলাদেশ দল যতটুকু দেখছেন, ইতিবাচক একটা ধারণা হয়েছে ম্যাকেঞ্জির, ‘যে কোনো আন্তর্জাতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ভালো একটা ব্যাপার। আমি দক্ষিণ আফ্রিকায় সময়টা উপভোগ করেছি। আমি বাংলাদেশের অনেকের বিপক্ষেও খেলেছি। আমার মনে হয় এখানে আমি অবদান রাখতে পারব। বাংলাদেশে অনেক প্রতিভা আছে। আমি ওদের পরিশ্রম, ব্যাট স্পিড ও জানার পরিধি দেখে মুগ্ধ হয়েছি। পরের বছরের বিশ্বকাপ আমাদের লক্ষ্য।’