• এশিয়া কাপ ২০১৮
  • " />

     

    শ্রীলঙ্কাকে বিদায় করে সুপার ফোরে আফগানিস্তান, সঙ্গে বাংলাদেশও

    শ্রীলঙ্কাকে বিদায় করে সুপার ফোরে আফগানিস্তান, সঙ্গে বাংলাদেশও    

    এশিয়া কাপ, গ্রুপ বি
    আবুধাবি
    আফগানিস্তান ২৪৯ অল-আউট, ৫০ ওভার (রহমত ৭২, হাসমতউল্লাহ ৩৭, থিসারা ৫/৫৫) 
    শ্রীলঙ্কা ১৫৮ অল-আউট, ৪১.২ ওভার (থারাঙ্গা ৩৬, নবী ২/৩০, রশীদ ২/২৬)
    আফগানিস্তান ৯১ রানে জয়ী 


    প্রথমদিন, বাংলাদেশের সম্মিলিত বোলিং আক্রমণ। এবার, আফগানিস্তানের সম্মিলিত বোলিং আক্রমণ। সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বিভৎস রানিং বিটুইন দ্য উইকেট। ফল- ২৫০ রানের লক্ষ্যে ১৫৮ রানেই অল-আউট। ফল- এশিয়া কাপ থেকে বিদায় ভারতের পর সবচেয়ে বেশিবার এ টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতা শ্রীলঙ্কার। এক ম্যাচ জিতেই তাই সুপার ফোর নিশ্চিত আফগানিস্তানের। শ্রীলঙ্কার বিদায়ে সুপার ফোর নিশ্চিত হলো বাংলাদেশেরও, ২০ তারিখে দুদলের ম্যাচটির ওপর তাই নির্ভর করছে শুধু গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স-আপের সমীকরণ। 

    নিশ্চিতভাবেই এদিন পরিষ্কার হলো শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের পার্থক্যটা। ক্রিকেট ইতিহাসে হয়তো শ্রীলঙ্কা যোজন যোজন এগিয়ে আফগানদের থেকে, তবে এশিয়া কাপের এই ম্যাচটা বুঝিয়ে দিল, নির্দিষ্ট দিনে ইতিহাস শুধু কাগজে-কলমেরই ব্যাপার, মাঠের খেলাটা ভিন্ন। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- তিন ডিপার্টমেন্টেই শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। 

    এটা সেই শ্রীলঙ্কা, যেখানে লাসিথ মালিঙ্গার মতো স্লিঙ্গিং অ্যাকশনের দুর্বোধ্য পেসার আছেন, আছেন আকিলা দনঞ্জয়ার মতো রহস্য স্পিনার। উপুল থারাঙ্গার মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান, থিসারা পেরেরার মতো বিস্ফোরক অলরাউন্ডার। অথবা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের মতো হাল ধরা ক্রিকেটার। তবে আবুধাবিতে তারা ম্লান হয়ে গেলেন, একে একে। রহমত শাহর ব্যাটিংয়ে, আফতাব আলম- গুলবাদিন নাঈমের পেসে, রশীদ খান-মুজিব-নবীর স্পিনে। রশীদের ফিল্ডিংয়ে। আসগর আফগানের দারুণ অধিনায়কত্বে। 

     

    আবুধাবিতে উড়েছে আফগানিস্তান/আইসিসি

     

    টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পর মোহাম্মদ শাহজা ও ইহসানউল্লাহর জুটি ভিতটা ভাল গড়েছিল আফগানিস্তানের। ব্যাটিংয়ের জন্য কিছুটা সহায়ক উইকেটে দুই ওপেনার রানও তুলেছেন ভাল গতিতে। এ ম্যাচ দিয়ে ফেরা শ্রীলঙ্কার “মূল” স্পিনার আকি দনঞ্জয়ার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন দুই ওপেনারই, তবে তার আগে প্রথম দুই উইকেটে এসেছে ৫৭ ও ৫০ রানের জুটি। মালিঙ্গা এদিন দিয়েছেন ৬৬ রান, বেশ কয়েকটি সুযোগ এসেছিল তার বলে, তবে সেগুলো হয়ে থেকেছে ‘হাফ-চান্স’ হয়েই। শ্রীলঙ্কা সুবিধা আদায় করতে পারেনি সেসব থেকে। 

    অধিনায়ক আসগর আফগানকে দ্রুত ফিরিয়েছিলেন শেহান জয়াসুরিয়ার, তবে চতুর্থ উইকেটে রহমত শাহ ও হাসমতুল্লাহ শাহিদির ৮০ রানের জুটিতে পথটা হারায়নি আফগানিস্তান। থিসারা পেরেরার বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে রহমত করেছেন ৯০ বলে ৭২ রান। শেষদিকে বেশ কয়েকটা আঘাত করেছেন পেরেরা, তার ৫৫ রানে ৫ উইকেটই আফগানিস্তানের সংগ্রহটা আরও বড় করতে দেয়নি। তবে ২৪৯ রানই যথেষ্টের চেয়েও বেশি প্রমাণ করেছেন আফগান বোলাররা। 

    পুরো ইনিংস জুড়েই একটু ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টা করেছেন যেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা, তবে পথটা খুঁজে পাননি। প্রথমে আফগান পেসে কাবু হয়েছেন তারা, শেশে আফগান স্পিনে খেয়েছেন হাবুডুবু। আর মাঝে রান-আউটে নিজেরাই এগিয়ে গেছেন অগ্নিকুন্ডের দিকে। 

    দ্বিতীয় উইকেটে উপুল থারাঙ্গা ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ৫৩ রানের জুটি শ্রীলঙ্কাকে একটু আশা জুগিয়েছিল, তবে দুজনের ভুল বুঝাবুঝিতে শেষ ডি সিলভার ইনিংস। দুজনই গিয়ে হাজির হয়েছিলেন স্ট্রাইকিং প্রান্তে। পরে রান-আউট হয়েছেন শেহান জয়াসুরিয়াও, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে। 

    এই রশিদকে পড়তে পারেননি শ্রীলঙ্কানরা, পড়তে পারেননি মুজিব উর রেহমানকেও। মোহাম্মদ নবীর অফস্পিনও ভুগিয়েছে তাদের। ১৪৩ থেকে ১৫৮- ১৫ রানের ব্যবধানেই শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে নিজেদের বিদায়টা দ্রুতই সেরে ফেলেছেন শ্রীলঙ্কানরা। এর আগেই রান-বলের ব্যবধান বেড়েছে, বাউন্ডারি দূরের কথা, স্ট্রাইক বদল করতেই হিমশিম খেয়েছেন তারা। 

    দিনশেষে তাই পার্থক্যটাই স্পষ্ট হয়ে ধরা দিল। যে পার্থক্য বলছে, শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তান!