৪০তম ওভারের পর থেকেই হেরে গেছি : মাশরাফি
সাকিব আল হাসানের বলে প্লাম্ব হলেন মোহাম্মদ নবি। শেষ ১০ ওভারের খেলা শুরু হয়ে গেছে, আফগানিস্তান বনে গেল ১৬০ রানে ৭ উইকেট। গুলবাদিন নাইব ১৪ বলে অপরাজিত ৭ রানে, তার সঙ্গে যোগ দিলেন ‘বার্থডে বয়’ রশিদ খান। আর তারপর, সবকিছুই আফগানিস্তানের। উইকেট গেল না আর, রশিদ-নাইব মিলে যোগ করলেন ৯৭ রান। বাংলাদেশের বোলাররা যেন দিশেহারা হয়ে পড়লেন, এলোমেলো হয়ে গেল লাইন-লেংথ, ডেথ ওভারের চাহিদা মেটাতে পারলেন না কেউই।
সেই শুরু। বাংলাদেশ এরপর পড়লো আফগান বোলিংয়ের ঘূর্ণিপাকে। ফ্লাডলাইটের নিচে শুরুতে সুইং আদায় করলেন আফতাব আলম, সঙ্গে মুজিব উর রেহমানের রহস্য স্পিন। মোহাম্মদ নবি একপ্রান্ত থেকে রান চেক দিয়ে গেলেন, আর রশিদ এসে ছুঁড়লেন মারণাস্ত্র। বাংলাদেশ কুপোকাত তাতেই। সুপার ফোরের লাইন-আপ আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে, এ ম্যাচের সেরকম তাৎপর্য নেই। তবে বাংলাদেশ এ ম্যাচে হারালোই শুধু, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে যা দারুণ আঘাত। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও মনে করছেন, পরের ম্যাচে তরতাজা হয়ে নামাটা একটু কষ্টসাধ্যই হবে।
“আফগানিস্তান (প্রথম ইনিংসের) ৪০তম ওভারের পর থেকেই আমাদের পরাস্ত করা শুরু করেছে। শেষ ১০ ওভারে তারা দারুণ খেলেছে, আমরা ভাল বোলিং করিনি। ব্যাটিং-ও ‘আপ টু দ্য মার্ক’ ছিল না”, ম্যাচশেষে বলেছেন মাশরাফি।
“কাল (২১ সেপ্টেম্বর) আমাদের বড় একটা ম্যাচ। ছেলেদের তরতাজা থাকতে হবে। এই গরমে টানা দুই ম্যাচ খেলা একটু কষ্টকর।”
পরের ম্যাচের কথা ভেবেই বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল মুশফিকুর রহিম ও মুস্তাফিজুর রহমানকে। তবে ওপেনিংয়ে তামিমের শূন্যস্থানটা পূরণ করাটাও দারুণ চ্যালেঞ্জ হবে এখন নাজমুল হোসেন শান্তর জন্য, অভিষেকে করতে পারেননি মনে রাখার মতো কিছু। লিটনও মেলে ধরতে পারেননি নিজেকে, ওয়ানডে ফরম্যাটে যেন ধাতস্থই হতে পারছেন না তিনি।
পুরো উলটো চিত্র আফগানিস্তান দলে। রশিদ খানের বার্থডে-স্পেশালের দিনে সব বোলারই ছিলেন উজ্জ্বল। শুরুতে পেস-স্পিনের মিশেল, মোহাম্মদ নবির আঁটসাঁট বোলিংয়ের সঙ্গে রশিদ- আফগানরা টুর্নামেন্টেই দারুণ এক প্যাকেজ হয়ে উঠেছে যেন।
রশিদ এদিন বোলিংয়ে এসেছেন ৬ষ্ঠ বোলার হিসেবে। ম্যাচসেরা রশিদ জানিয়েছেন, তাদের পরিকল্পনায় ছিল এমন।
“আমি দেরিতে বোলিংয়ে এসেছি, কারণ ডট বল করে চাপ বাড়াতে চেয়েছিলাম। ব্যাটসম্যানরা উইকেট দিয়েছে আমাকে। এমন পিচে দুই-এক ধরনের বোলারের ওপর নির্ভর করলে চলে না।”
শুধু বোলিং নয়, ফিল্ডিংয়েও দারুণ ছিলেন আফগানরা। দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন, সরাসরি থ্রো-তে রান-আউট করেছেন। এমন কঠিন কন্ডিশনে ফিল্ডিংয়ের দিকে বাড়তি নজর দিয়েছেন তারা, “আমরা ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করেছি, এদিকে বেশ নজর রেখেছি। কন্ডিশন কঠিন ছিল, তবে আমাদের ফিল্ডিং ছিল অসাধারণ।”
ম্যাচসেরার পুরষ্কারটা সদ্য সাবেক হওয়া আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান আতিফ মাশালকে উৎসর্গ করেছেন রশিদ।