• এশিয়া কাপ ২০১৮
  • " />

     

    শেষ ওভারেই আফগান-জুজু কাটালেন মালিক

    শেষ ওভারেই আফগান-জুজু কাটালেন মালিক    

    স্কোরকার্ড

    আফগানিস্তান ৫০ ওভারে ২৫৭/৬ (শহিদি ৯৭*, আসগর ৬৭; নওয়াজ ৫৭/৩, আফ্রিদি  ৩৮/২)

    পাকিস্তান ৪৯.৩ ওভারে ২৫৮/৭ ( ইমাম ৮০, বাবর ৬৬, মালিক ৫১; রশীদ ৩/৪৬, মুজিব ২/৩৩)

    ফল: পাকিস্তান ৩ উইকেটে জয়ী


    ম্যাচ শেষ হতেই দুই হাতে মুখ ঢাকলেন আফতাব আলম। যার ব্যাটে মাত্রই জয় পেয়েছে পাকিস্তান, সেই শোয়েব মালিক তাঁকে হাত ঢেকে সান্ত্বনা দিলেন। কিন্তু আফগানিস্তানের ‘এত কাছে, তবু এত দূরের কষ্ট’ কি তাতে ঘুঁচে যায়? পাকিস্তানের কাছে শেষ ওভারে গিয়ে ৩ উইকেটে হারার আক্ষেপ যে সহজে যাওয়ার নয়। এশিয়া কাপের প্রথম জমজমাট এক ম্যাচে পাকিস্তান আসলে জিতল এক শোয়েব মালিকের ঠাণ্ডা মাথার জন্যই। ২০১৪ সালের পর এই প্রথম শেষ ওভারে গিয়ে কোনো ম্যাচ জিতল পাকিস্তান।

    শেষ ওভারেও পাকিস্তানের জয়ের জন্য দরকার ১০ রান। আগের ওভারে হাসান আলী রশিদ খানকে ছয় মেরেছেন একটা, তার আগে ছয় এসেছে টানা দুই ওভারে। কিন্তু আফগানিস্তানের বোলাররা তাতে হাল ছেড়ে দেননি, মালিকদের রান করতে কষ্টই করতে হচ্ছিল। একটা সময় ওভারপ্রতি সাত থেকে শেষ তিন ওভারে তা গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় দশের কাছাকাছি। আফতাবের শেষ ওভারের প্রথম বলে রান পেলেন না মালিক, ডাগআউটে সরফরাজের মুখ তখন কালো মেঘে ঢাকা। পরের বলটাই হাফ ট্র্যাকার পেলেন মালিক, ছয়। পরের বলটা লেগ স্টাম্পের ওপর ইয়র্কার, এবার চার। ৪৩ বলে ফিফটি পেলেন মালিক, হাসান আলীকে নিয়ে মাঠ ছাড়লেন জয় নিয়ে।

    অথচ শেষদিকে রশীদ খান নিয়মিত আঘাত হেনে কাজটা কঠিন করে তুলেছিলেন। মোহাম্মদ নোয়াজ তাঁকে ছয় মেরেছেন, খানিক পরেই বোল্ড। আসিফ আলী ছয় মেরেছেন, সেই আসিফ আলীও মারতে গিয়ে আউট। তবে রশীদ সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছিলেন সেট ব্যাটসম্যান বাবর আজমকে আউট করে।

    একটা সময় মনে হচ্ছিল বাবর ও ইমাম উল হক মিলেই পাকিস্তানের ম্যাচটা বের করে নেবে, ম্যাচের শুরুতেই যখন টানা দ্বিতীয়বারের মতো শুন্য রানে ফেরত গেলেন ফাখার জামান, আরেকটি আফগান বধ কাব্য দেখতে পাচ্ছিলেন অনেকে। কিন্তু ইমাম ও বাবরের ১৫৪ রানের জুটি এরপর পাকিস্তানকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। দুজন শুরুতে স্লথ হলেও পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সচল করেছেন রানের চাকা। জুটিটা ভেঙেছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সিঙ্গেল নিয়ে রান আউট হয়ে গেছেন ইমাম (১০৪ বলে ৮০ রান করে)। এরপর রশীদ বল হাতে নিয়েই ফিরিয়ে দিয়েছেন বাবরকে, স্টাম্পড হয়ে গেছেন বাবর ৬৬ রানে। এরপর হারিস সোহেল ও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদও টেকেননি বেশিক্ষণ। তবে মালিক ছিলেন শেষ পর্যন্ত, একের পর এক উইকেট পড়তে দেখেও বিচলিত হননি।

    তার আগে আফগানিস্তানের ইনিংস এগিয়েছে আগের দুই বারের চিত্রনাট্য মেনে। শুরুতে বেশ স্লথ, ওপেনিং জুটিতে আরও একবার বেশি রান ওঠেনি। ২৫ ওভার পর্যন্ত রান রেট চার থাকার পর সেটা বাড়াতে শুরু হাশমতউল্লাহ শহিদি ও আসগর আফগান। তার আগেই অবশ্য বিপজ্জনক মোহাম্মদ শাহজাদ ও রহমত শাহ ফিরে গেছেন। তবে শহিদি ও আসগরের ৯৪ রানের জুটি পথ দেখিয়েছেন আফগানদের। পাকিস্তানের বোলাররাও দুই হাত ভরে সহায়তা করেছেন সহজ সব ক্যাচ ফেলে। শহিদি সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১১৮ বলে ৯৭ রান করে। অন্যদিকে আসগর তার আগে ৫৬ বলে করেছেন ৬৭ রান। মোহাম্মদ নওয়াজ ৫৭ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট, অভিষিক্ত শাহীন শাহ আফ্রিদি ৩৮ রানে নিয়েছেন দুইটি।