আফগানিস্তান ম্যাচের আগে পাঁচ প্রশ্ন
শুরুতে ছিল চোটের সমস্যা। তামিমকে হারানোর পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ঘিরে উঠছে আরও প্রশ্ন। আফগানিস্তানের সঙ্গে সুপার ফোরের ম্যাচে এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজে পেতে হবে বাংলাদেশকে...
১. হাল ধরবেন কে?
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ২ রানেই গিয়েছিল ২ উইকেট, তামিমও হাতে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে। এরপর মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুনের জুটিতে এসেছিল ১০১ রান। মিঠুন ফিরলেও ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ছিলেন মুশফিক, খেলেছিলেন ক্যারিয়ারসেরা ১৪৪ রানের ইনিংস। অসাধারণ এক পারফরম্যান্স। আফগানিস্তানের সঙ্গে পরের ম্যাচে ৩৯ রানে ৩ উইকেট পড়েছিল বাংলাদেশের, তবে সেখান থেকে তারা অল-আউট হয়ে গিয়েছিলেন ১১৯ রানেই। ভারতের সঙ্গে ম্যাচে ১৬ রানে দুই ওপেনার ফেরার পর ৪২ রানে পড়েছিল ৩ উইকেট। শেষদিকে মেহেদি হাসান ও মাশরাফি বিন মুর্তজার ৮ম উইকেট জুটিতে ৬৬ রানের জুটিতে ১৭৩ পর্যন্ত যেতে পারলেও শেষরক্ষা হয়নি। এটা পরিষ্কার, টপ অর্ডার বা মিডল অর্ডারে ধসের পর হাল ধরতে হবে কাউকে। ভারতের সঙ্গে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন সাকিব-মুশফিক, দুর্ভাগ্যের শিকার মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করলেও পরের দুই ম্যাচে ম্লান ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। নিশ্চিতভাবেই, দায়িত্ব নিতে হবে কাউকে। প্রশ্ন হলো, সেটা করবেন কে?
২. কাটবে রশিদ-জুজু?
ওয়ানডেতে রশিদ খানের ইকোনমি রেটটা দারুণ, ৩.৮৮। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেটা আরও অসাধারণ, ৩.১৭। ক্যারিয়ারে রশিদ যেসব দেশের বিপক্ষে খেলেছেন, বাংলাদেশ ছাড়া তার ভাল ইকোনমি শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, ৩.১০। ৪ ম্যাচে রশিদ বাংলাদেশের বিপক্ষে নিয়েছেন ৯ উইকেট, আগের ম্যাচে করেছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভাল ইকোনমি রেটের বোলিং। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর মাশরাফি বলেছেন, পরের ম্যাচটা কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে, যাদের খুব ভাল একটা বোলিং আক্রমণ আছে। সেই ভাল বোলিংয়ে নিশ্চিতভাবেই সবার আগে আসবে রশিদ খানের নাম। এশিয়া কাপে টিকে থাকতে হলে তাই রশিদের বিপক্ষে কার্যকরী পরিকল্পনা নিয়ে নামতে হবে বাংলাদেশকে।
অতি-আক্রমণই কাল হয়েছিল সাকিবের, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে/ক্রিকইনফো
৩. ইমরুল-সৌম্যর দলে অন্তর্ভুক্তি কোন বার্তা দেবে?
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ হয়নি তখনও, তার আগেই খবর, দেশ থেকে উড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে। তিন ম্যাচে লিটন দাস করেছেন ১৩ রান, দুই ম্যাচ মিলিয়ে শান্ত করেছেন ১৪। নিশ্চিতভাবেই তাদের অবস্থা সুবিধার নয়, তবে হুট করে দুই ওপেনারকে উড়িয়ে নেওয়াটা ঠিক কেমন বার্তা দেবে বাংলাদেশের খেলায়? অধিনায়ক মাশরাফি আবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর বলেছেন, ইমরুল-সৌম্যর দলে অন্তর্ভুক্তির খবর তিনি জানেন না। ইমরুল ও সৌম্য শেষ ওয়ানডে খেলেছেন প্রায় এক বছর আগে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ফর্ম দিয়ে সুবিধা করতে পারেননি বলেই বাদ পড়েছিলেন। হুট করে তাদেরকে ডেকে নেওয়াটা বুমেরাং হয়ে যাবে না তো বাংলাদেশের?
৪. শুরুতেই ব্যাকফুটে
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১০ ওভারে ২৪/২, আফগানিস্তানের সঙ্গে ৩১/২, ভারতের বিপক্ষে ৪৪/৩- প্রথম পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ ধুঁকেছে প্রতি ম্যাচেই। দারুণ শুরু দূরের কথা, বাংলাদেশ উলটো ডট বলের চাপে পড়েছে প্রতিবারই। ২০১৭ সালের শুরুর পর থেকে প্রথম দশ ওভারে বাংলাদেশের চেয়ে ধীরগতির ব্যাটিং করেছে শুধু দুইটি দল- আফগানিস্তান ও পাপুয়া নিউগিনি। এশিয়া কাপের উইকেট এখন পর্যন্ত ব্যাটিংয়ের জন্য আহামরি কঠিন নয়, বল ব্যাটে একটু ধীরে আসলেও উইকেটে থিতু হওয়ার পর তা সহজই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তান যেমন সুপার ফোরের ম্যাচে শুরুতেই উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পেয়েছে রান-তাড়ায় দারুণ ভিত।
৫. ...এবং ডেথ ওভারের বোলিং
তিন ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করেছে দুইবার, প্রথমে ফিল্ডিং করেছে শুধু আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ডেথ ওভারের বোলিং সে ম্যাচেই দারুণ ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। রশিদ-নাইবের ৮ম উইকেটের জুটিসহ শেষ দশ ওভারে আফগানিস্তান তুলেছিল ৯৭ রান। ৪১তম ওভারের মাঝেই ৭ উইকেট তুলে নিলেও সে চাপটা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ।