জাতীয় দলের জন্য সবসময়ই প্রস্তুত থাকেন ইমরুল
ইমরুল কায়েস খেলছিলেন খুলনায়, বিসিবির হাই-পারফরম্যান্স স্কোয়াডের লাল-সবুজ দলের চারদিনের ম্যাচে। খুলনা থেকে ঢাকা, সেখান থেকে আবুধাবি। আগেরদিন সন্ধ্যায় পৌঁছে পরদিন দুপুরে নেমে গেলেন এশিয়া কাপে। ওপেনিংয়ে ‘সমস্যা’র কারণে ডেকে পাঠানো হয়েছিল তাকে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইমরুল খেললেন ছয়ে। ক্যারিয়ারে এতো নিচে এর আগে খেলেননি ইমরুল। ব্যাটিংয়ে নেমে দলকে পেলেন ৮১ রানে ৪ উইকেট অবস্থায়। খানিক পরই সেটা হয়ে গেল ৮৭ রানে ৫ উইকেট। ইমরুল বুঝলেন, এবার একটু ধাতস্থ হওয়ার সময় তার। শুরুটা ধীরে করলেও ইনিংস বড় করতে হবে।
ইমরুল প্রথম ৫৩ বলে করলেন ২৮ রান। মাহমুদউল্লাহ তখন ৪০ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত। চাপটা সামাল দেওয়া গেছে, তবে কাজ বাকি ছিল তখনও অনেক। ইমরুল ফিফটি করলেন ৭৭ বলে, বাংলাদেশের ধস ঠেকাতে দাঁড়িয়ে গেলেন দেয়াল হয়ে, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে।
“পরিস্থিতিটা বুঝেছিলাম। এখানে একটু ধীরে খেলে বড় কিছু করতে হবে”, ম্যাচশেষে বলেছেন ইমরুল। ইনিংস বড় করার পথে এগিয়ে গেলেন ইমরুল, রশীদ খানকে রিভার্স সুইপেও মারলেন চার। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৮৯ বলে ৭২ রানে। যে ইমরুলের এশিয়া কাপে খেলারই কথা ছিল না, সেই ইমরুল খেললেন অনেক প্রয়োজনীয় এক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস।
ইমরুল বলছেন, নিজেকে সবসময় জাতীয় দলের জন্যই প্রস্তুত করে রাখেন তিনি, “সবসময়ই ভাবি, যতদিন খেলার পরিকল্পনা আছে, জাতীয় দলে খেলার ইচ্ছা আছে, ততোদিন ধরে আমি নিজেকে এভাবেই প্রস্তুত করে যাব। আমি সবসময়ই জাতীয় দলের খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখি।”
দলের প্রয়োজনে যে কোনও পজিশনেও খেলতে চান তিনি, “আমার কোনও সমস্যা নেই। দল যেখানে চাইবে, সেখানেই খেলব।”
২০০৮ সালে অভিষেকের পর থেকে ইমরুল খেলেছেন ৩৪টি টেস্ট, ৭১টি ওয়ানডে। দলে থাকেন যাওয়া-আসার মধ্যেই। তবে এমন ইনিংসে আলাদা করে কাউকে কিছু দেখানোর নেই, জোর দিয়েই বললেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, “আমার প্রমাণের কিছু নেই। আমি প্রায় ৯ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি। কারও কারও হয়তো কপাল এমন থাকে, টিম কম্বিনেশন বা যে কারণেই হোক- দলে সুযোগ পায় না। আমি হয়তো সেরকম। তবে আমি এসব নিয়ে এতো ভাবি না। যখনোই সুযোগ পাই, আমি দলের জন্য খেলব, ভাল খেলার চেষ্টা করব।”
ভাল খেলার জন্য ইমরুলের কাজে লেগেছে মাশরাফির একটা টোটকাও, “মাশরাফি ভাই বলেছিলেন, ‘যদি খেলার জন্য খেলিস, তাহলে উন্নতি হবে না। যদি আরও ভাল কিছু করতে চাস, নিজের জন্য, দলের জন্য, তাহলেই ভাল কিছু হবে’। আমি ভেবেছিলাম দলের জন্য খেলব।”
ইমরুল খুলনা থেকে হুট করে গিয়ে দলের জন্যই খেললেন।