• বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ
  • " />

     

    সুযোগ নষ্টের মাশুল দিয়ে ফাইনালে যাওয়া হল না বাংলাদেশের

    সুযোগ নষ্টের মাশুল দিয়ে ফাইনালে যাওয়া হল না বাংলাদেশের    

    ৯৪ মিনিটে সামিহর নেওয়া শট ঢুকে গেল বাংলাদেশের জালে, গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম এর আগে দুইবার বাঁচিয়েছেন, এবার অসহায় তাকিয়ে থাকলেন। ওই গোলেই নিশ্চিত হয়ে গেল ম্যাচের ফল, ফিলিস্তিন শেষ পর্যন্ত জিতল ২-০ গোলে। আর কক্সবাজারের বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল বাংলাদেশের ফাইনাল স্বপ্ন। অথচ এই কাদা মাঠেই ৯০ মিনিট অসম্ভব কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ।

    বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ফিফা র‍্যাংকিংয়ে ৯৩ ধাপ এগিয়ে। ফিলিস্তিনের সঙ্গে মাঠের খেলায় অবশ্য দুই দলের পার্থক্য বোঝা গেল না তেমন। ফিলিস্তিনের সঙ্গে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমানে লড়েছে জেমি ডের দল। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যর্থতার পর বাংলাদেশের এমন খেলাকে তো ইতিবাচকই বলা যায়।

    ম্যাচে বলার মতো ভুল বাংলাদেশ করেছে একবারই। তাতেই কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের। ৮ মিনিটে রাইট উইং দিয়ে ওঠা আক্রমণ থেকে ক্রস, সেখান থেকে বালাহর হেডে করা গোলে পিছিয়ে পড়ে ঘরের দল। দুই দলের খেলোয়াড়দের উচ্চতার পার্থক্য তো ছিলই, কিন্তু সেটা দেখিয়ে বাজে ডিফেন্ডিংয়ের দায় এড়াতে পারবে না বাংলাদেশ। হেড করার সময় বালাহকে বাধা দিতে পারেননি কেউই। অবশ্যই এরপরই শুরু হয় বাংলাদেশের ফিরে আসার লড়াই। তবে বাংলাদেশকে একটি ভুলের শাস্তি পেতে হলেও, ফিলিস্তিন পার পেয়ে গেছে অনেকগুলো ভুল করেও।  প্রথমার্ধেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে ৩-১ গোলেও এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। স্ট্রাইকাররা গোলখরা ভুগছিলেন। পুরো ৯০ মিনিট ধরে কক্সবাজারের মাঠে বৃষ্টি হলেও, স্বস্তির বৃষ্টি হয়ে আর গোলের দেখা পাওয়া হয়নি জেমি ডের দলের।  

    নাবিব নেওয়াজ জীবন ফাঁকা বারপোস্টেও বল মেরেছিলেন বাইরে দিয়ে। ফিলিস্তিন গোলরক্ষক বলটা ধরতে পারেননি, পরে নাবিব পেয়ে যান বল। ফাঁকা বারে কোণাকুণি শটটা তিনি মেরেছেন অনেক বাইরে দিয়ে। এর কিছুক্ষণ আগে বিপলু আহমেদও ফিলিস্তিনের রক্ষণের ভুল কাজে লাগিয়ে শট করতে পারেননি ভালো জায়গা থেকে। দ্বিতীয়ার্ধেও বাংলাদেশের কাছে ভালোভাবেই ছিল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু সবকিছু ঠিক করেও অ্যাটাকিং থার্ডে খেলোয়াড়দের নির্বুদ্ধিতা আর সিদ্ধান্তহীনতায় ম্যাচে ফেরা হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয়ার্ধের সেরা সুযোগও এসেছিলেন নাবিবের কাছে। গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে সেবারও লক্ষ্যে মারতে পারেননি বাংলাদেশের স্ট্রাইকার। ম্যাচেও তাই জীবন ফিরে পায়নি বাংলাদেশ।

     

    শেষদিকে অবশ্য ফিলিস্তিন কাউন্টার অ্যাটাকে বেশকয়েকবার বাংলাদেশের রক্ষণকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। দুইবার আশরাফুল ইসলাম ভালো সেভ করে দলকে টিকিয়ে রেখেছিলেন ম্যাচে। তপু বর্মণও রক্ষণে দিয়েছেন নিজের সেরাটা। লং বলে খেলার টোটকাটাও আজ আরেকটু সফলতার মুখ দেখেছ, কিন্তু গোল না পাওয়ার হতাশা সবকিছুকেইই তুচ্ছ করে দিচ্ছে। শেষ ম্যাচে ফিলিপাইনের বিপক্ষে ভালো খেলেও গোল না করে হেরেছিল বাংলাদেশ, এবার ফিলিস্তিনের সঙ্গেও ম্যাচের গল্পটা প্রায় একইরকম। ইনজুরি টাইমের প্রথম কয়েক মিনিটও ফিলিস্তিনকে চেপে রেখেছিল বাংলাদেশ, পুরোপুরি আক্রমণাত্মক খেলতে যেয়ে আরেকটি গোলই খেয়ে বসে তারা। হারের আফসোসটা তাতে আরও বাড়ারই কথা, সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে তো ম্যাচের গল্পটাই বদলে দিতে পারত বাংলাদেশ। 

    ফাইনালে ফিলিস্তিন মুখোমুখি হবে তাজিকিস্তানের।