ইমরুলের প্রেরণা মুশফিক আর এশিয়া কাপের সেই ইনিংস
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরি আগেও পেয়েছেন দুইবার। তারপরও ইমরুল কায়েসের জন্য জিম্বাবুয়ের সেঞ্চুরির মাহাত্ম্য অন্যরকমই হওয়ার কথা। ১৪৪ রানের ইনিংস তাঁর ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ তো বটেই, মিরপুরেই কোনো বাংলাদেশীর রেকর্ড। সবচেয়ে বড় কথা, আগের দুইবার সেঞ্চুরির পরও হেরেছিল দল। এবার আর তা হয়নি। কিন্তু তারপরও এই সেঞ্চুরিকে ইমরুল তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা বললেন না। বরং আফগানিস্তানের সঙ্গে এশিয়া কাপের ৭২ রানের কথা বললেন আলাদা করে। জাতীয় দলে অভিষেকের দশ বছর হয়ে গেছে। এর মধ্যে দল থেকে অন্তত আটবার বাদ পড়েছেন, আবার ফিরেও এসেছেন। তবে এশিয়া কাপের ওই ইনিংস দিয়ে ফেরাটা ছিল অন্যরকমই। হুট করে খুলনা থেকে ঢাকা হয়ে যেতে হয়েছে দুবাইয়ে, প্রচণ্ড গরমে নিজের অচেনা পজিশনে নামতে হয়েছে একরকম মানসিক প্রস্তুতি ছাড়াই। ৭২ রানের ওই ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। ইমরুল তাই আজকের ১৪৪ রানের পরেও সেই ইনিংসের কথা বললেন আলাদা করে, ‘ তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইনিংস অনেক দরকার ছিল। আটলিমেটলি নিজে ভালো খেললে দলের কাজ হয়ে যায়। আজকের ইনিংসটির জন্য বাংলাদেশ দল সেভ হয়ে গেছে। এটার জন্য আলহামদুলিল্লাহ।’
বিশেষ করে আজ যেভাবে ইনিংস লম্বা করেছেন, তাতে আফগানিস্তানের সঙ্গে ওই ইনিংসটা তাঁকে প্রেরণা দিয়েছিল বলেই মনে করেন ইমরুল, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি কি করতে পারি, কি পারি না, অনেক কিছু জেনেছি ওই ইনিংস থেকে। আজকে ব্যাটিংয়ের সময় ওই ইনিংসটার কথা বারবার মনে করছিলাম। ওরকম একটা কঠিন পরিস্থিতিতে, চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে যদি ভালো কিছু করতে পারি, তাহলে নিজেদের কন্ডিশনে আরও ভালো কিছু করতে পারব।’
কিন্তু এক দশকের ক্যারিয়ারে ভালো শুরু পেয়েছেন অনেকবার, ফিফটিও পেয়েছেন। কিন্তু সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পেরেছেন এ নিয়ে তিন বার। ইমরুল বললেন, চাপ নেননি বলেই আজ ইনিংসটা লম্বা করতে পেরেছেন, ‘আসলে আজকের ইনিংসটিতে শুরুতে একটু নার্ভাস লাগছিল। একটু চাপ নিলে ঘাম হয় প্রচুর। ঘামলে ক্র্যাম্প হওয়ার শঙ্কা থাকে। একটা সময় যখন ভালো বোধ করতে শুরু করলাম, তার পর আর ঘাম হয়নি বেশি। একটি গ্লাভস পরেই ইনিংস শেষ করেছি, বদলাতে হয়নি। চাপটা পরে আর অনুভব করিনি।’
চাপের ব্যাপারে অবধারিতভাবে চলে আসে, পুরো ক্যারিয়ারটা বলে গেলে এই চাপের মধ্যেই কাটাতে হয়েছে। এত বছর দলে থাকার পরেও তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে আতশ কাচের নিচে ব্যবচ্ছেদ হয়েছে বেশি। এই চাপ সামলাতে ইমরুল সামলে টানলেন মুশফিকের উদাহরণ, ‘আমি একটি ব্যাপার বিশ্বাস করি, কেউ যদি কঠোর পরিশ্রম করে, সে তার ফল পাবেই। আমি মুশফিককে দেখে অনেক কিছু শিখি। মুশফিক যেভাবে কষ্ট করে, ও কিন্তু কষ্ট করেই আজকের মুশফিকুর রহিম হয়েছে। আমি সবসময় এটা অনুসরণ করার চেষ্টটা করি। বিশ্বাস করি যে কষ্ট করলে তার ফল পাওয়া যায়।’
ইমরুলের সেই বিশ্বাসটা ঠিক থাকলে এমন অনেক ইনিংস আসতেই পারে!