হংকংয়ের সাথে সেই হার ভুলছেন না মাশরাফি
দিন এখন বদলে গেছে অনেকটাই। এই জিম্বাবুয়ে আর নেই সেই জিম্বাবুয়ে। আজ থেকে ১৭ বছর আগে মাশরাফি বিন মুর্তজার অভিষেকের সময় সেই পরাক্রমশালী জিম্বাবুয়ে এখন বেঁচে আছে পুরনো স্মৃতির জাবর কেটে। মাশরাফি বিন মুর্তজাও জোর দিয়ে বললেন, পেশাদার হিসেবে পুরনো স্মৃতি হাতড়ে পড়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। বরং দেশের মাটিতেই হংকংয়ের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন।
২০০১ সালের নভেম্বরে কয়েক দিনের ব্যবধানেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল মাশরাফির। বৃষ্টির আনুকূল্যে টেস্টটা ড্র করেছিল বাংলাদেশ, তবে ওয়ানডেতে হেরেছিল। পাঁচ বছর পর কাকতালীয়ভাবে মাশরাফির টি-টোয়েন্টি অভিষেকও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তখন অবশ্য পাশার ছক বদলে যেতে শুরু করেছে, এখন যা বদলেই গেছে পুরোপুরি।
মাশরাফি অবশ্য বলছেন, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগই নেই, ‘দেখেন মুশফিক দেড়শ মেরে এসেছে শ্রীলঙ্কার সাথে, অলমোস্ট হানড্রেড করেছে পাকিস্তানের সাথে। জিম্বাবুয়ের সাথে তো দুইশ করার কথা। ক্রিকেট খেলা তো এভাবে হয় না। একটা একট্রা অরডিনারি বলে আপনি আউট হতে পারেন। আমার ভালো বোলার…মুস্তাফিজের তো পাঁচ-ছয়টা করে পাওয়ার কথা। পেয়েছে তো একটা। এভাবে তো ক্রিকেট খেলা হয়না। আপনি যদি ফর্মে থাকেন তাহলে মাঠে গিয়ে ওই পেশাদারিত্ব দেখিয়ে নিজের ফর্ম ধরে খেলে যাবেন। ’
সেই সময় আর এই সময়ের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে, সেটা অবশ্য মানেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘ওভারঅল আমার কাছে মনে ওই সময়ের জিম্বাবুয়ে দল এক রকম ছিল। বাংলাদেশে ক্রিকেটও প্রফেশনালিজমের স্টার্টিং সময়। অবশ্যই পার্থক্য ছিল। এখন হয়তো জিম্বাবুয়েকে আপনারা ওভাবে দেখছেন, চিন্তা করছেন। ’ তবে বাংলাদেশ দলে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই, সেটিও জানিয়ে রাখলেন, ‘তাদেরকে কোনো জায়গা থেকে ছোটো করার সুযোগ নেই। তারা সব সিনিয়র খেলোয়াড়রাই এসেছে। তারা তাদের সেরা খেলা খেললে আমাদের জন্য কঠিন হবে। সো আমরা সত্যিকার অর্থে আমরা এশিয়া কাপে যে মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। আমরা কোনো যেন ভুল না করি । এখানে আমরা হংকংয়ের সাথে হেরেছি। তাই আমরা কোনো সুযোগ দিতে চাই না।’
প্রথম ম্যাচে অবশ্য বাংলাদেশ সুযোগটা দিয়েছিল জিম্বাবুয়েকে। ১৩৯ রানে ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। সেখান থেকে ইমরুল কায়েস ও সাইফ উদ্দিনের রেকর্ডগড়া জুটিতে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। মাশরাফি অবশ্য সেটার একটা ভালো দিকও দেখছেন, ‘দেখেন দুদিকে চিন্তা করতে হবে। বরং আমি আমার দিক থেকে খুশি হয়েছি যে সাইফউদ্দিনের রান করাটা। এই পজিশন গুলো দেখা। আমি আগেও বলেছি হয়তো আইডল পরিস্থিতি না। কিন্তু এ সমস্ত সুযোগ গুলো যদি না আসতো তাহলে কিন্ত ওদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়ত না। অনেক সময় যেটা হয় অন্যান্য দলে, টপ অর্ডারে রান হলে মিডল অর্ডার ভেঙে পড়ে না। আমাদের ক্ষেত্রে লেট মিডল অর্ডারেও ধস নেমে যায়। সব সময় যদি আপনি মুশফিক-রিয়াদ পর্যন্ত গিয়ে খেলা শেষ করেন এবং বড় স্টেজে গিয়ে যখন এটা হবে না তখন কিন্তু টিম ডাউন হয়ে যায়। এটা একদিক থেকে ভালো।’
এশিয়া কাপের পর এবারও একজন ওপেনার সেঞ্চুরি পেলেন, মাশরাফির কাছে ব্যাপারটা ইতিবাচক। কিন্তু এরপরও রান তিনশ হয়নি, সেটা একটা দুশ্চিন্তার ব্যাপার বলেই মানছেন মাশরাফি, ‘এখন যেটা হচ্ছে, একজন একশ করার পরও রানটা তিনশ হচ্ছে না। টপ অর্ডারে একজন একশ করলে কিন্তু রান তিনশ হওয়া স্বাভাবিক। এই জায়গা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। যে একশ করছে তাকে যে অন্য কেউ হেল্প করছে না,,তার একশ এতো পরে গিয়ে হচ্ছে যে রানটা আর বড় হচ্ছে না। এই খাপ খাইয়ে নেওয়াটা এখন হচ্ছে না।’