• বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
  • " />

     

    এক পেসার, এক নীতি, একটি আক্ষেপ

    এক পেসার, এক নীতি, একটি আক্ষেপ    

    সিলেটে প্রথম দিন বোলিংয়ে কিছু একটা মিস করেছে বাংলাদেশ।

    সাকিব আল হাসান নেই, অভিষেক হলো আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর। সঙ্গে মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম। উইকেট শুকনো, ধীরগতির, বাউন্সও অসমান। স্পিনারদের জন্য প্রথম দিন থেকেই স্বর্গ হয়ে ওঠেনি সিলেটের উইকেট, তবে আভাস দিয়ে রেখেছে। তবুও, এমন উইকেটে আবু জায়েদ চৌধুরি রাহীর বোলিংয়ের পর একটা কিছু না থাকার খচখচানি ছিলই। এমন উইকেট- যেখানে বল হোল্ড করছে- আদর্শ হতে পারতো মোস্তাফিজুর রহমানের জন্য। টেস্টে ফেরার অপেক্ষাটা উলটো বাড়লো তার, তাকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম। 

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই অভিষিক্ত রাহীর হাতেই তাই পেস-ব্যাটন। খাতা-কলমে দলে আছেন আরেকজন পেসার, অভিষিক্ত আরিফুল হক। তবে ৪ ওভারের বেশি তাকে দিয়ে বোলিং করালেন না মাহমুদউল্লাহ। রাহীর মতো হুমকিও তৈরি করতে পারলেন না সে সময়ের মাঝে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে এলেন তাইজুল ইসলাম, দ্বিতীয় নতুন বলও তুলে দেওয়া হলো সবার আগে তার হাতেই। আরেকদিকে রাহী সিম মুভমেন্ট আদায় করে নিলেন দারুণভাবে, মাসাকাদজার পর পিটার মুরের উইকেটও পেয়ে গিয়েছিলেন প্রায়। তবে মুঠোবন্দি করেও জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরতে পারলেন না বাংলাদেশী স্পিনাররা, আবু জায়েদও হয়ে থাকলেন সাথী-হারা সারথির মতোই। 

    আবারও এক পেসারের সেই রক্ষণশীল নীতিতেই চলে গেল টিম ম্যানেজমেন্ট, জিম্বাবুয়ের মতো টেস্টে ধুঁকতে থাকা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও। অবশ্য এ উইকেটে তাদের সে নীতির প্রতি সমর্থনই দিচ্ছেন রাহি, “দুঃখজনক কিছু না। ম্যানেজমেন্ট ভাল বুঝতে পেরেছে উইকেটটাতে আসলে ভাল পেস বোলিং হবে না। বেশ কিছু দিন থেকে কিন্তু সিলেটের উইকেট নিয়ে আমাদের সংশয়, কী হবে না হবে। ২০১৩-১৪ তে সিলেটের উইকেট অনেক বাউন্সি ছিল। কিছু দিন ধরে,দুই বছর ধরে এমন হয়ে গেছে। এবার জাতীয় লিগেও আমরা তিন পেসার নিয়ে খেলেছি। দুই পেসার ৭, ৭- ১৪ ওভার বল করেছে। আমার মনে হয় টিম ম্যানেজমেন্ট যা ভাল মনে করেছে, সেটাই করছে।”

    সিলেটের উইকেট কেমন হবে, সেটা নিয়ে ‘রহস্য’ই ছিল দুই দলের মাঝে। সিলেটের উইকেট আগের মতো নেই, কথা উঠেছিল সেটা নিয়েও। তবে ‘ঘরের ছেলে’ রাহী উইকেট ঠিকই বুঝেছেন, বলও করেছেন সেভাবেই। স্টাম্প-উচ্চতায় করেছেন বল, সঙ্গে তার আদায় করে নেওয়া মুভমেন্টে অস্বস্তিতে পড়েছিলেন জিম্বাবুইয়ানরা, “আর উইকেট বেশ ফ্ল্যাট। এখানে পরিকল্পনার বাইরে বল করা যাবে না।” 

    এদিন রাহীদের সবচেয়ে ভাল খেলা জিম্বাবুয়ের শন উইলিয়ামস অবশ্য দারুণ প্রশংসা করছেন এ উইকেটের, “আমার মনে হয় টেস্ট ক্রিকেটের জন্য এটি চমৎকার একটি উইকেট। কিছু বল টার্ন করছে, বাউন্স হচ্ছে। কিছু আবার নীচু থেকে স্কিড করে চলে যাচ্ছে। তৃতীয় বা চতুর্থ দিনে আরও বেশি টার্ন পাওয়া যাবে, আরও অসমান বাউন্স আসবে।”

    টার্ন নিয়ে মাথাব্যথা নেই রাহির, পুরোনো বলে তার বোলিংয়ের অভ্যাস আছে বলে জানালেও মনে করিয়ে দিলেন সুইং বা মুভমেন্টের আশা ছাড়ছেন না, “যদি কাট করে তাহলে ভাল হয়। বল কিন্তু এখনো পুরনো হয়নি। জাস্ট ১০-১২টা বল হয়েছে। এখনো সুইং আসবে”। 

    সুইং হয়তো তিনি পাবেন। কাট করাতেও পারবেন। তবে কাটার যার বড় অস্ত্র- তেমন একজনকে কি মিস করছে না বাংলাদেশ? আরেকজন পেসারকে খেলানোর ‘ঝুঁকি’টা নেওয়ার জন্য কি খুবই অনপুযুক্ত ছিল এই টেস্ট?