• বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
  • " />

     

    'ডাবল সেঞ্চুরি হলে তো খিদেটা মিটেই গেল!'

    'ডাবল সেঞ্চুরি হলে তো খিদেটা মিটেই গেল!'    

    মুমিনুল হকের জন্য মিরপুরে আজকের ১৬১ রানের ইনিংসটা অনেক দিক দিয়েই অন্যরকম। গত আট ইনিংসে রান নেই বটে, তবে এই বছরেই আছে জোড়া সেঞ্চুরি। আজ মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরির আগে এই বছর টেস্টে বাংলাদেশের সেঞ্চুরি এই তিনটিই। সংবাদ সম্মেলনে ঢোকার আগে মজা করে বলছিলেন, এমন নয় তো সেঞ্চুরি আগে করিনি। তারপরও তিনি নিজেও জানেন, এই সেঞ্চুরিটা তাঁর কাছে অন্যরকম।

    পরিসংখ্যান সেই গল্পটা বলবে আংশিক। মিরপুরে সেই ২০১৩ সালে নিউজিলান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ছিল, এরপর আর পাওয়া হয়নি। তবে বাকি গল্পটা বলবে উইকেট। সেই মিরপুর আর এই মিরপুরের মধ্যে দুস্তর ব্যবধান এখন। এই মিরপুরেই সর্বশেষ তিন টেস্টে একদিনও খেলা চার দিনেরও শেষ পর্যন্ত যায়নি। মুমিনুল নিজেই যেমন বলেছেন, এই উইকেটে রান করাটা ছিল বেশ কঠিন। কন্ডিশন ছিল চ্যালেঞ্জিং, শুরুতে মানিয়ে নেওয়া সহজ ছিল না। তারপর ২৬ রানেই টপ অর্ডারের তিন জন, এই পরিস্থিতি থেকেই গত আট ইনিংসে মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলাদেশ। জার্ভিস-চাতারারাও শুরুতে প্রতিটা বল পরীক্ষার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে মুমিনুলের। অবশ্য টেস্টে দুই দল এক ইনিংস ব্যাট করার আগে উইকেট নিয়ে কোনো রায় দিয়ে ফেলাটা অনুচিত। তারপরও মুমিনুলের এই সেঞ্চুরি তাঁর জন্য বড় একটা স্বস্তির উপলক্ষও বটে।

    টেস্ট ক্রিকেটে গত কিছু দিনে তাঁর রান দেখলেই সেটা বোঝা যাবে। গত আট ইনিংসে তিনটি শুন্য, দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন তিন বার, নেই কোনো ফিফটি। সিলেট টেস্টেও যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতে তাঁর আত্মবিশ্বাস খানিকটা কমে গেছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠে গিয়েছিল। এই ইনিংস তো মুমিনুলের জন্য অনেক কিছু জবাব দেওয়ারও ছিল। নিজেও তাই এই ইনিংসকে মনে করছেন ‘স্পেশাল’, ‘আমি এই সেঞ্চুরিতে অনেক শিখতে পেরেছি। আমার যতগুলো সেঞ্চুরি আছে এরমধ্যে এটা বেশ ইন্টারেসটিং।  কারণ অনেক কষ্ট করে ব্যাট করেছি। আমি যতক্ষণ ব্যাট করেছি কষ্ট করে ব্যাট করেছি। অনান্যগুলার চেয়ে এটা অনেক টাফ ছিল।’

    কিন্তু তারপরও কি একটু আক্ষেপ থাকে না, আরও একবার ১৫০ পেরিয়েও ছুঁতে পারেননি ২০০। ক্যারিয়ারে ড্যাডি হান্ড্রেড আছে তিনটি, কিন্তু ডাবল সেঞ্চুরি নেই একটিও। শেষ বিকেলে আউট হওয়া নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আক্ষেপ আছে মুমিনুলের, ‘একটু আফসোস আছে। আমার জন্য একটা উইকেট বেশি পড়ে গিয়েছে। আমি তো আউট হয়েছি, সাথে আরেকটি উইকেট পড়েছে। দলের জন্য শেষের দিকে আরেকটু খেলতে পারলে ভাল হত।’

    তবে ডাবল সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় কি একটু আক্ষেপ নেই? মুমিনুল আগে দলের চাওয়াটাই বড় করে দেখছেন, ‘আমার দল বাংলাদেশ কোনদিন যদি সাড়ে তিনশো, চারশ তাড়া করার জন্য যখন খেলবে, তখন হয়ত দুশো হতে পারে। কারণ খেলাটা আমার দুশো, দেড়শো না। এটা হলো দলের খেলা। দলের যখন দরকার তখন আসবে।’

    তারপরও কি একটু আফসোস কাজ করে না? এবার মুমিনুলের উত্তরটা একটু অবাক করার মতোই, ‘এটা (ডাবল সেঞ্চুরি) যত পরে হবে আমার ক্ষিদেটা তত বাড়বে। হয়ে গেলে তখন ক্ষিদেটা তো মিটে গেল।’

    আপাতত সেই খিদে আরও অনেক দিন জিইয়ে রাখতে চাইবেন মুমিনুল। সাদা পোশাকে বাংলাদেশকে যে আরও অনেক কিছুই দেওয়ার আছে তাঁর!