• বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ২০১৫
  • " />

     

    বাংলাদেশের সামনে অচেনা অস্ট্রেলিয়া !

    বাংলাদেশের সামনে অচেনা অস্ট্রেলিয়া !    

    কে ভেবেছিলেন অ্যাশেজ শেষে এমন আমূল পরিবর্তন আসবে অজি দলে?

     

     

    এক বাঁ দুই জন অবসর নিলে হয়ত মানা যেত। কিন্তু, এক অ্যাশেজের আগে ও পরে অবসর নিলেন পাঁচ জন! সেই সাথে ইনজুরিতে রয়েছেন আরো ৩/৪ জন। আর তাই প্রথমবারের মত পূর্ণাঙ্গ অধিনায়কত্ব পাওয়া স্টিভ স্মিথকে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামতে হচ্ছে আনাড়ি দল নিয়েই। ক্লার্ক, হ্যারিস, রজার্স, হ্যাডিন ও ওয়াটসনরা অবসর নেয়ায় বর্তমান দলে অভিজ্ঞ বলতে রয়েছেন ৫৬ ম্যাচের সিডল, ৪৫ ম্যাচের লায়ন ও ৩৩ ম্যাচের স্মিথ। এই তিনজনকে বাদ দিলে বাকিদের মোট টেস্টের অভিজ্ঞতা কত জানেন ? মাত্র ৬৬!

     

     


     

    গত সিরিজে ওপেনিংয়ে নামা রজার্স ইতিমধ্যেই অবসর নিয়েছেন আর ওয়ার্নার রয়েছেন ইনজুরিতে। ফলে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের কাউকেই দলে পাচ্ছেন না অধিনায়ক স্মিথ। আর তাই ৩০ বছরে তৃতীয়বারের মত আগের সিরিজের কোন ওপেনার না নিয়েই খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ সফরে তাই অজিদের ব্যাটিং ওপেন করতে দেখা যেতে পারে শন মার্শ ও জো বার্নসকে। কিছুদিন আগেই ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়া জো বার্নস ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে চেন্নাইয়ে খেলেছিলেন ১৩১ বলে ১৫৪ রানের দারুন এক ইনিংস। ফলে উপমহাদেশের কন্ডিশনে মার্শের পার্টনার হিসেবে তাঁকে খেলানোর সম্ভাবনাই বেশি।

     

     

     

    এদিকে দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ তিন নম্বর থেকে সরে চারে ব্যাটিং করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। একারনে তিন নম্বরে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে উসমান খাজার। কুইন্সল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যান টেস্ট খেলতে নামবেন প্রায় দুই বছর পর। সম্প্রতি ভারতে ‘এ’ দলের হয়ে খেলে যাওয়া খাজাও রয়েছেন দারুণ ফর্মে। তবে আপাতত ব্যাটিং লাইনআপে অজিদের সবচেয়ে বড় ভরসা বলা চলে নাম্বার চারকেই। কারণ, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত ৭ টেস্টে অধিনায়ক স্মিথের রানের গড় ৭১.৯, সেঞ্চুরি করেছেন তিনটি, এর মধ্যে একটি আবার ডাবল সেঞ্চুরি!

     

     

     

    বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাগি গ্রিন পড়ার সুযোগ পেতে পারেন পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা ক্যামেরন ব্যানক্রফট। ভারতে ‘এ’ দলের বিপক্ষে ব্যানক্রফট ব্যাটিংয়ে দেখিয়েছেন অসাধারণ নৈপুণ্য যার মধ্যে ছিল একটি ১৫০ রানের ইনিংসও। তাছাড়া মাঝেমধ্যে উইকেটকিপিং করা ব্যানক্রফট গত শেফিল্ড শিল্ডে ৮৯৬ রান করে রান সংগ্রাহকদের মধ্যে হয়েছিলেন তৃতীয়। তবে দলে ভারসাম্য আনার জন্যই কি না, অ্যাশেজে ব্যর্থ অ্যাডাম ভোজেস দলে জায়গা পেয়েছেন।  ১৭০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এখন পর্যন্ত সাতটি টেস্ট খেলেছেন, যেখানে তার গড় ৪৬। লেহম্যানের মতে,”অভিজ্ঞতা অনেক কাজে আসে। তবে বর্তমানে আমাদের তেমনটা নেই। আমারা যাকেই বাছাই করি না কেন, দলে কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রাখতে চাইবই। আর আমার মনে হয় এটা ভোজেসের জন্য দারুণ সুযোগ!”

     

                                                           অ্যান্ডু  ফেকেতে
     

    অজি দলের ব্যাটিংয়ের মত বোলিং লাইনআপেও এসেছে কয়েকটি উল্লেখ্যযোগ্য পরিবর্তন। দেশের মাটিতে কিছুদিন পর ব্যস্ত সূচি থাকায় বাংলাদেশ সফর থেকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে পেসার জনসন ও হ্যাজেলউডকে।  সুযোগ পেয়েছেন প্যাট কামিন্স । বড় চমক হয়ে এসেছে অ্যান্ড্রু ফেকেতের নাম। শেফিল্ড শিল্ডে গত বছর সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছিলেন এই পেসার। ৩০ বছর বয়সে এখন ফেকেতে স্বপ্ন দেখছেন অভিষেকের। তবে মূলত অজি পেস অ্যাটাকের নেতৃত্ব দিবেন অ্যাশেজের ৫ম টেস্টে ফিরেই ৬ উইকেট নেয়া পিটার সিডল। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ানদের স্পিন অ্যাটাকের মূল কান্ডারি থাকবেন ন্যাথান লায়ন। কিন্তু, লায়নের সাথে ২য় স্পিনার হিসেবে অ্যাশটন অ্যাগারের নামটাই অনুমিত ছিল । তবে অ্যাগার নন, জায়গা পেয়েছেন মাত্র এক টেস্টের অভিজ্ঞ স্টিফেন ও’কিফে।

     

     

     

    কিছুদিন আগে শেষ হওয়া অ্যাশেজে কার্ডিফ টেস্টে যে একাদশ খেলেছিল, তাঁর মধ্য থেকে সম্ভবত চার জনকে বাংলাদেশ সফরে পাবেন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। দলে প্রতিভার কোন অভাব না থাকলেও অভাব রয়েছে অভিজ্ঞতার। এই আনকোরা দল নিয়েই হত শুরু হচ্ছে অজি দলের নতুন কোন টেস্ট যুগের!

     

     

     

    অস্ট্রেলিয়া দল: স্টিভেন স্মিথ (অধিনায়ক), অ্যাডাম ভোজেস (সহ-অধিনায়ক), ক্যামেরন ব্যানক্রফট, জো বার্নস, প্যাট কামিন্স, অ্যান্ড্রু ফেকেতে, উসমান খাজা, নাথান লায়ন, মিচেল মার্শ, শন মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, পিটার নেভিল, স্টিফেন ও’কিফে, পিটার সিডল, মিচেল স্টার্ক।