• বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
  • " />

     

    মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পর জয় থেকে ৮ উইকেট দূরে বাংলাদেশ

    মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পর জয় থেকে ৮ উইকেট দূরে বাংলাদেশ    

    ঢাকা টেস্ট
    চতুর্থ দিন, স্টাম্পস
    বাংলাদেশ ৫২২/৭ ও ২২৪/৬ ডিক্লে. (মাহমুদউল্লাহ ১০১*, মিঠুন ৬৭, জার্ভিস ২/২৭, টিরিপানো ২/৩১)
    জিম্বাবুয়ে ৩০৪ ও ৭৬/২* (লক্ষ্য ৪৪৩) (চারি ৪৩, মাসাকাদজা ২৫, মিরাজ ১/১৬) 


    প্রথম দিন ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে  প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছিল টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত। এদিন ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হলো জিম্বাবুয়েকে ফলো-অন না করিয়ে ব্যাটিং করা। প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড ডাবল সেঞ্চুরি যা করেছিল, এদিন সেটা করলো মাহমুদউল্লাহর 'হঠাৎ' সেঞ্চুরি। ৪৪৩ রানের লক্ষ্যে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান চারির উইকেট হারিয়ে ফেলেছে জিম্বাবুয়ে, সিরিজে সমতা আনতে শেষদিন বাংলাদেশের প্রয়োজন ৮ উইকেট। 

    উইকেট বাংলাদেশ আরও পায়নি জিম্বাবুইয়ান দুই ওপেনারেরই ক্যাচ স্লিপে মেহেদি মিরাজ মিস করায়। শুন্য রানে ব্রায়ান চারিকে হাতছাড়া করেছেন মোস্তাফিজের বলে, আর মাসাকাদজাকে খালেদের বলে। এ নিয়ে খালেদের বলে তিনবার ক্যাচ পড়ায় টেস্টে প্রথম উইকেটের অপেক্ষা ফুরোলই না তার! সেই মিরাজেই ব্রেকথ্রু পেয়েছে বাংলাদেশ, ফ্লিক করতে যাওয়া মাসাকাদজা ব্যাট-প্যাডে মুমিনুলের হাতে ধরা পড়েছেন ২৫ রানে, ৬৮ রানের ওপেনিং জুটি ভেঙেছে তাতেই। চারি তাইজুলের বলে বেশ আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ, অনেক্ষণ সময় নিয়ে আউট দিয়েছেন কুমার ধর্মসেনা, রিভিউয়েও কাজ হয়নি।  

     

    মাহমুদউল্লাহ-মিঠুন সামাল দিয়েছেন টপ অর্ডারের ধস/বিসিবি

     

    এর আগে শুরুর চাপ কাটিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে আধিপত্য ফিরে পেয়েছিল মাহমুদউল্লাহ ও মিঠুনের পঞ্চম উইকেটে ১১৮ রানের জুটিতে। প্রথম ফিফটি পেয়েছেন মিঠুন। রাজাকে স্লগ করে ছয় মারার পর একই শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৮৭ বলে করেছেন ৫৮। তার আগেই লিড পেরিয়েছে ৩০০, মাহমুদউল্লাহরও হয়েছে ফিফটি। আরিফুল হক শীঘ্রই শন উইলিয়ামসকে সুইপ করতে গিয়ে পায়ের পেছন দিয়ে হয়েছেন বোল্ড। এসেছেন মিরাজ, প্রথম ইনিংসে যিনি সঙ্গ দিয়েছিলেন মুশফিককে। রাজাকে এক ওভারে দুজন দুই চার মেরে মাহমুদউল্লাহ-মিরাজ শুরু করলেন গিয়ার বদলানো। তার আগে মিরাজকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা, সেটার হাত থেকে তিনি বেঁচেছেন রিভিউ নিয়ে। শেষ ৯ ওভারে ৬৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। 

    ইনিংস ঘোষণার আগে সেঞ্চুরিটা মাহমুদউল্লাহ পেয়েছেন নাটকীয়ভাবে। চা-বিরতির আগে সেটাই ছিল শেষ ওভার। মাহমুদউল্লাহ ৯৮ থেকে ৯৯-তে গেলেন সিঙ্গেল নিয়ে, ওভারের বাকি ছিল ২ বল। মিরাজ প্রান্ত বদলালেন, শেষ বলে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির জন্য দরকার ১ রান। সেটা না হলে সেঞ্চুরি হবে না, চা-বিরতির ২০ মিনিট পর শুধু ১ রানের জন্য তার নামার সম্ভাবনাও নেই প্রায়! কাভারে গ্যাপটা বের করলেন, মাতলেন উল্লাসে। হ্যামিল্টনে ২০১০ সালে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন, মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করলেন ৮ বছরেরও বেশি সময়। ১২২ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন তিনি, ৪ চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছয়। ৩৪ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ, স্ট্রাইক বদলানোতেও ছিলেন বেশ কার্যকরী। 

     

    মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি উদযাপনের সঙ্গী মিরাজও/বিসিবি

     

    তাতে মিলিয়ে গেছে সকালের ব্যাটিং ধসের স্মৃতি। ইমরুল কায়েস অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছেন ডিপ পয়েন্টে। লিটন দাস জার্ভিসের দুর্দান্ত বোলিংয়ের শিকার, একটু সুইং করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় লিটনের ডিফেন্স ভেদ করে অফ স্টাম্পের বেল ভেঙে দিয়েছে যেটা। 

    মুমিনুল অফ স্টাম্পের বাইরে টিরিপানোর বাড়তি বাউন্স করা বলে কিপারকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে এলেন। মুশফিকুর রহিম একই বোলারের শর্ট বলটা চাইলে যে কোনো জায়গাতেই পাঠাতে পারতেন, কিন্তু মিসটাইম করে ৭ রান করেই ক্যাচ তুলে দিয়ে এলেন ডিপ স্কয়ার লেগে। হয়তো আগের ইনিংসের ব্যাটিংয়ের ক্লান্তিই যায়নি তার। 

    অবশ্য এখন জিম্বাবুয়েকে করতে হবে ক্লান্তি ও রেকর্ডের সঙ্গে লড়াই। এর আগে চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ের রান-তাড়ার রেকর্ড ১৬২ রানে, সেটিও ১৯৯৮ সালে, পেশোয়ারে পাকিস্তানের বিপক্ষে। আর ড্র ম্যাচে তাদের সবচেয়ে বড় সফলতা- ১৯৯৬ সালে অকল্যান্ডে ১০০ ওভার ব্যাটিং করে ৪ উইকেটে ২৬৪ রান।