বিশুদের বলে নিজেদের ঝালাই করে নিলেন সৌম্য-সাদমান
দ্বিতীয় দিন শেষে...
ওয়েস্ট ইন্ডিজ- ৩০৩/৬ (৮৬.৩) ( ব্র্যাথওয়েট ৬, পাওয়েল ৭২, হোপ ৮৮ অবসর, সুনিল ১৭, চেজ ৩৬, হেটমায়ার ২৪, ডওরিচ ২৪, রেইফার ব্যাটিং ১৪*, পল ব্যাটিং ১৮* ; শফিউল ১/২২, রুবেল ১/৪০, ইবাদত ০/৩৬, রবিউল ০/২১, নাঈম ২/১০৫, রিশাদ ০/৫৫, ফজলে মাহমুদ ১/১১, সৌম্য ১/১০)
বিসিবি একাদশ ৭৫ ওভারে ২৩৫/৫ (সাদমান ৭৩, সৌম্য ৭৮, শান্ত ২১, মিঠুন ২৭*, জাকির ১৮, লিটন ১, রাব্বি ২*; রোচ ১/১৮, গ্যাব্রিয়েল ২/৩৪, ওয়ারিকান ১/৫১)
ম্যাচঃ ড্র
দিনের খেলা শেষের তখনও বাকি আধ ঘণ্টা। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের পেছনের সূর্য পুরোপুরি হেলে পড়েনি তখনও। বিসিবি একাদশের ড্রেসিংরুমের পাশে গ্যালারিতে শ তিনেক দর্শকেরা অপেক্ষা করছেন তখনও। দুই দলের খেলোয়াড়েরা হাত মিলিয়ে ফেললেন মাঠে। দুই দিনের নিষ্প্রাণ ক্রিকেটও সময় শেষের আগে ফুরিয়ে এলো। দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ স্বস্তি পেতে পারে, যে দুজনকে বাজিয়ে দেখার দরকার ছিল তাদের ভালোই অভিজ্ঞতা হয়েছে। সৌম্য সরকার সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও পাননি, আর মিঠুন অপরাজিত হয়েই দিন শেষে মাঠ ছেড়েছেন।
সৌম্যর জন্যই এই ম্যাচটা ছিল নিজেকে একটু ঝালিয়ে নেওয়ার উপলক্ষ। লিটন দাসের ব্যর্থতায় হুট করেই ডাক পেয়েছেন টেস্ট দলে, তাঁর প্রথম একাদশে থাকাও মোটামুটি নিশ্চিত। সকালে সাদমান ইসলামের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতেই জানা দিচ্ছিলেন, আগের সেই আত্মবিশ্বাস একটু একটু করে ফিরে পাচ্ছেন। লাঞ্চ পর্যন্ত ৮৫ রান তুলে অপরাজিত ছিলেন দুজন, তাতে দুজনের প্রায় সমান অবদান। সাদমান-সৌম্য দুজনেই খারাপ বলের অপেক্ষায় ছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই পেসার কেমার রোচ আর শ্যানন গ্যাব্রিয়েলও বড় কিছু করতে পারেননি।
তবে লাঞ্চের পরেই সৌম্য হাত খুলে খেলতে শুরু করলেন। ফিফটি পেলেন ৭৭ বলে, পরের ২৮ রান করতে খেলতে হলো মাত্র ২৫ বল। এর মধ্যে দেবেন্দ্র বিশুর এক ওভারে পর পর দুই বলে কভার ও লং অনের ওপর দিয়ে মারলেন চার-ছয়। সেঞ্চুরিটা যখন পেয়ে যাবেন বলেই মনে হচ্ছিল, তখনই অঘটন। সিলি মিড অনে সুনীল আম্ব্রিসকে ক্যাচ দিয়ে ৭৮ রানে ফিরে যান সৌম্য।১২৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম ইনিংসটা টেনে নিয়ে যান। দুজন দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৪৭ রান। ২১ রান করে রোচের বলে বোল্ড হয়ে যান শান্ত। সাদমান ধীরে ধীরে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু ৭৩ রানে নিজের দোষেই আউট হলেন। একটা সিঙ্গেল নিতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন ক্রিজ ছেড়ে, কিন্তু রেইফারের সরাসরি থ্রো ক্রিজে ঢোকার আগেই ভেঙে দিল স্টাম্প।
তবে জাকির হাসান ও লিটন দাস এরপর যেভাবে আউট হয়েছেন, দুজনেই তা ভুলে যেতে চাইবেন। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের উইকেটে এমন কোনো টার্ন নেই, বাউন্স তো নেইই। মাঝে মধ্যে বল একটু নিচু হয়ে আসছিল, আর মন্থর উইকেটে শট খেলা তো কঠিন। অথচ দুজনেই শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বল ছেড়ে দিয়ে খেলতে গিয়ে ঠিক একইভাবে বোল্ড। জাকির অবশ্য ১৮ রান করে আউট হয়েছেন, লিটন আউট হয়ে গেছেন ১ রান করেই। টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পর ভালো একটা স্কোরে জবাব ব্যাট হাতেই দিতে পারতেন লিটন, কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না।এই বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লাকমলের বলে ওই আউটের কথাও মনে করিয়ে দিলেন। ২২২ রানে বাংলাদেশ যখন ৫ উইকেট হারিয়েছে, ম্যাচের তখন ৬৮.২ ওভার। এরপর আরও সাত ওভার খেলা হয়েছে, তবে মিঠুন আর ফজলে রাব্বি যোগ করেছেন মাত্র ১০ রান। ৭৫ ওভারে ২৩২ রানের পরেই তাই শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস।