গ্যাবায় বৃষ্টির পর ভারতের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার স্বস্তির জয়
অস্ট্রেলিয়া ১৫৮/৪, ১৭ ওভার
ভারত ১৬৯/৭, ১৭ ওভার (লক্ষ্য ১৭৪ রান)
অস্ট্রেলিয়া ডিএল পদ্ধতিতে ৪ রানে জয়ী
গ্যাবায় নামলো বৃষ্টি। আর অস্ট্রেলিয়া পেলো স্বস্তির জয়। সফরের শুরুর ম্যাচটা বৃষ্টির কবলে পড়েছিল, ডি-এল পদ্ধতিতে ভারতের লক্ষ্যটা ছিল ১৭৪ রানের। শিখর ধাওয়ানের ৪২ বলে ৭৬ ও দীনেশ কার্তিকের ১৩ বলে ৩০ রানের ধুন্ধুমার ইনিংসও পার করাতে পারেনি ভারতকে। শেষ ওভারে ৫ উইকেট বাকি রেখে তাদের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান, সেটা নিতে দেননি মার্কাস স্টোইনিস।
এর আগে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়েও বড় অবদান ছিল স্টোইনিসের। ক্রিস লিন ও অ্যারন ফিঞ্চ ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন, ১০ ওভারে ৭৫ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। খলিল আহমেদের বলে শুরুতে ডারসি শর্ট ক্যাচ দিলেও তাই অস্ট্রেলিয়া ছিল ঠিক পথেই। ২৪ বলে ২৭ রান করে কুলদীপ যাদবকে জোরের ওপর মারতে গিয়ে প্রথমে ক্যাচ দিয়েছেন ফিঞ্চ, ২০ বলে ৩৭ রান করে যাদবকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন লিন। যাদব ছিলেন দারুণ, ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২৪ রান। তবে খরুচে ছিলেন তার আরেক স্পিন-সহকারী ক্রুনাল পান্ডিয়া, ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৫৫ রান। ৩ ওভারে ৪২ রান গুণেছেন খলিল।
খলিলের পেস সহকারিরা অবশ্য ছিলেন ছন্দে, ভুবনেশ্বর কুমার ৩ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৫ রান, জাসপ্রিত বুমরাহ দিয়েছেন ৩ ওভারে ২১ রান। ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ বানিয়ে স্টোইনিসের সঙ্গে তার ৭৮ রানের জুটিটা ভেঙেছেন বুমরাহই। ২৪ বলে ৪৬ রান করেছিলেন ম্যাক্সওয়েল, ভারত ফিরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিল। তবে ভুবনেশ্বর-বুমরাহ ওভার সম্পন্ন করতে পারলেন না, তার আগেই নামলো বৃষ্টি। এর আগে স্টোইনিস অপরাজিত ছিলেন ১৯ বলে ৩৩ রানে। ১৭ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলেছিল ১৫৮ রান।
হাল ছাড়েনি অস্ট্রেলিয়া/ক্রিকইনফো
বৃষ্টি থামার পর ভারতের লক্ষ্য বেড়ে দাঁড়ালো ১৭৪ রানে। রোহিত শর্মা পার্টি মিস করলেন, জ্যাসন বেহেনড্রফের বলে লিডিং-এজে মিড-অন থেকে পেছনে দৌড়ে যাওয়া ফিঞ্চের হাতে ধরা পড়ে। ফিল্ডিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ছিল দারুণ এদিন। শিখর ধাওয়ান অবশ্য ছিলেন অন্যরকম মুডে, সঙ্গে যোগ দিলেন লোকেশ রাহুল। এ জুটির ব্যাটিংয়ের সময় ভারতের জয়টা অনায়াস হবেই বলে মনে হচ্ছিল।
বাধা হয়ে দাঁড়ালেন অ্যাডাম জাম্পা। কুলদিপ যেদিন দারুণ বোলিং করলেন, রিস্টস্পিনার হয়ে জাম্পাই বা বসে থাকবেন কেন! দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে জাম্পা ছিলেন না, এবার আর তাকে বাইরে রাখেনি অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে রাহুল হলেন স্টাম্পড, পরের ওভারে জাম্পা পেলেন কোহলির ‘বিগ-উইকেট’। বেন স্ট্যানলেক এসে ধাওয়ানকেও ক্যাচ বানালেন, রান-তাড়ায় প্রথমবারের মতো চাপে পড়লো যেন ভারত।
তবে সেটা উড়িয়ে দিচ্ছিলেন কার্তিক, সঙ্গে ছিলেন ঋশাভ পান্ট। ৫১ রানের সে জুটি ভাঙলেন অ্যান্ড্রিউ টায়, দিনটা অবশ্য এ উইকেট ছাড়া মোটেই ভাল যায়নি এ পেসারের, ৩ ওভারে দিয়েছেন ৪৩ রান। সে ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারিতে কার্তিক শেষ ওভারের প্রয়োজনটা নামিয়ে এনেছিলেন ১৩ রানে।
তবে স্টোইনিসের স্লোয়ার জীবনটা কঠিন করে তুললো ক্রুনালের। বাউন্ডারিতে প্রায় ছয় হয়ে যাওয়া ক্যাচটা নিলেন ম্যাক্সওয়েল। ভারত হুট করেই নিজেদের ব্যাটসম্যান শুন্যতায় আবিষ্কার করলো। কার্তিক একা হাতে আর কিছু করতে পারলেন না, লং-অফে ক্যাচ দেওয়া ছাড়া।
ডাউন-আন্ডারের শুরুটাও তাই হার দিয়েই হলো ভারতের। আর কঠিন এক সিরিজের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া পেলো একরাশ স্বস্তির এক জয়। গ্যাবার বৃষ্টির সঙ্গে যেন নেমে এলো সেটা।