দলে নিজের দাম বাড়াতেই বল টেম্পারিং করেছিলাম: ব্যানক্রফট
ওই বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারি নিয়ে গত নয় মাসে কম আলোচনা সমালোচনা হয়নি। কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ স্বীকার করায় এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ, নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তাঁর সহকারি ডেভিড ওয়ার্নার ও ওপেনার ক্যামেরন ব্যানক্রফটও। ঘটনার এতদিন পর ব্যানক্রফট জানালেন, ওয়ার্নারের জোরাজুরিতেই বল টেম্পারিং করেছিলেন তিনি। একই সাথে তাঁর কথা শুনে দলে নিজের ‘দাম বাড়ানোর’ জন্যও এটা করেছিলেন।
বল টেম্পারিংয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় হাত ছিল ওয়ার্নারের, এটা জানা গিয়েছিল ঘটনার বেশ কিছুদিন পড়েই। পরবর্তীতে অবশ্য এটা নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন স্মিথ। সেই ম্যাচে ব্যানক্রফট-ওয়ার্নারের মাঝে আসলে কী কথা হয়েছিল, এই ব্যাপারে যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, স্মিথ সাফ জানিয়ে দেন, ওই ব্যাপারে কথা বলার কোনো ইচ্ছাই তাঁর নেই।
স্মিথ মুখ না খুললেও ফক্স স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যানক্রফট জানিয়েছেন, দলে নিজের দাম বাড়াতেই ওয়ার্নারের কথায় বল টেম্পারিং করেছিলেন, ‘ওয়ার্নার আমাকে বারবার বলছিল ওটা করার জন্য। ম্যাচের তখন যে পরিস্থিতি ছিল, বল টেম্পারিং না করে কোনো উপায় ছিল না। কিন্তু আমি বল টেম্পারিং নিয়ে বেশিকিছু জানতাম না। শুধু এটাই মাথায় ঘুরছিল, আমি দলে টিকে থাকতে চাই, নিজের দামও বাড়াতে চাই অধিনায়ক ও দলের কাছে।’
‘ক্রিকেটীয় মূল্যবোধের’ চেয়ে তখন দলে টিকে থাকাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল ব্যানক্রফটের কাছে, ‘ওই সময় আমার মাথায় ছিল শুধুই দলে টিকে থাকা। আমি ভাবছিলাম, দলে টিকে থাকলে আমার সম্মানও বাড়বে। কিন্তু সেটা হয়নি, ওই ঘটনার জন্য আমাকে অনেক বড় মূল্য দিতে হয়েছে। সবাইকে আমি ছোট করেছি, দলকেও। ক্রিকেট আমার জন্য হেরে গেছে। নিজের দোষের দায়ভার আমি নিজেই নিতে চাই। আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ ছিল, আমি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
স্মিথ-ওয়ার্নারের আগেই এই ডিসেম্বরে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরছেন ব্যানক্রফট। এই কয়েক মাসে নিজের ভুলটা খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পেরেছেন তিনি। তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ারও ওপরও খুশি নন ব্যানক্রফট, ‘কিছু সত্যি মেনে নেওয়া খুব কঠিন। তবে ওই ব্যাপারটা অনেক কিছু শিখিয়েছে আমাকে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ারও উচিত আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখা। তাঁরা কি ঠিক পথে এগুচ্ছে?’
একটা সময় হয়ত স্মিথ, ওয়ার্নার, ব্যানক্রফট তিনজনই অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরবেন। ওই ঘটনার রেশ কি আদৌ কাটবে কোনদিন?